জেনে নিন কোন রোগে কিভাবে খাবেন রসুন

আখতারুন নাহার আলো
প্রকাশ: ০১ নভেম্বর ২০২৩, ১০:২১ এএম

ফাইল ছবি
প্রায় পাঁচ হাজার বছর আগে থেকেই রসুনের গুণাগুণ সম্পর্কে জানা যায়। এর বোটানিক্যাল নাম হলো Allium Salivan linn। রসুন যেমন উষ্ণ, তেমনি স্নিগ্ধ। এটি শরীরকে গরম রাখে। রসুন এন্টিবায়োটিক, সর্দি কাশি সারায়। একজিমা দূর করে। ঘাম হতে সাহায্য করে। কোলেস্টেরল ও রক্ত শর্করা কমায়। দুধে রসুনের রস পড়লে ছানা হয় না।
তবে এর গন্ধ পারদের মতো সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। বিভিন্ন শারীরিক সমস্যায় রসুন বেশ কার্যকর। যেমন-হাড়ের রোগ, কৃমি, চর্মরোগ, উচ্চরক্তচাপ, স্মৃতিশক্তি হ্রাস, প্রস্রাবে সংক্রমণ ইত্যাদি। এক বা দুই কোয়া রসুন গরম দুধের সঙ্গে খেলে শরীরের জড়তা দূর হয় এবং এতে সামান্য জ্বরেও উপকার পাওয়া যায়। পেটে গ্যাস হলেও রসুনের রস উপকারী। রসুনের রসের শ্বাস নিলে মাথাব্যথা উপশম হয়। এ ছাড়া রসুন দিয়ে সরিষার তেল গরম করে মালিশ করলে বাতের ব্যথা দূর হয়।
আরও পড়ুন: ভালো ঘুমের জন্য যা দরকার
রসুনের মধ্যে সালফাইড থাকার কারণে এটি জীবাণুনাশক হিসাবে কাজ করে। এর ই-কোলাই ও টাইফয়েডের জীবাণু ধ্বংস করার ক্ষমতা আছে। এর রাসায়নিক উপাদানগুলো হলো-Organic sulphide, sulphar bearing amino acid, Essential oil. রসুন পরজীবী ধ্বংস করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, মানসিক চাপ কমায়, শ্বাসকষ্ট সারায়, স্নায়ুবিক সমস্যা রোধ করে এবং যকৃতের কর্মক্ষমতা বাড়ায়। রসুনে থাকা ডাই-অ্যালাইন সালফাইড ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্য করে।
রসুন নিয়ে এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, এর এলিসিন নামক পদার্থটি দেহের ওজন বাড়া প্রতিহত করে। এছাড়া নিউইয়র্ক স্টেট ইউনির্ভাসিটির অধ্যাপক ডক্টর এরিক ব্লক রসুনের মধ্যে কিছু দ্রব্যের সন্ধান পেয়েছেন যা রক্ত জমাট বাঁধা দূর করে।
সবচেয়ে সক্রিয় এজেন্টটির নাম এজোনাইন। এটি অনুচক্রিকার পিঠের কোষকে এমনভাবে পরিবর্তন করে যে, এগুলো আর আঠালো থাকে না। তাই জমাট বেঁধে পিণ্ডও তৈরি হয় না। এ প্রসঙ্গে ডা. ব্লক বলেন, ‘রসুনের গোটা কোয়া খাওয়াই উত্তম।’ ওষুধের জনক হিপোক্রেটস বলেছেন, বনৌষধির মধ্যে রসুনের স্থানই প্রথম। এটি শরীর ও মনের সার্বিক উন্নতি ঘটায়।
লেখক : চিফ নিউট্রিশন অফিসার ও বিভাগীয় প্রধান (অব.), বারডেম। সভাপতি, ডায়াবেটিস নিউট্রিশনিস্ট সোসাইটি অব বাংলাদেশ, পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার, শ্যামলী ও অ্যাডভান্স হাসপাতাল, ঢাকা