আমাদের দেশে কাঁচা সবজি খাওয়ার অভ্যাস নেই বলে ভিটামিন সি-এর অভাব হতে দেখা যায়। এই ভিটামিন পানি ও তাপে নষ্ট হয়। সে জন্য সতর্কতার সঙ্গে এ ভিটামিন গ্রহণ করা উচিত। এর অভাবে স্কার্ভি নামক রোগ হয়। যাতে ত্বক ফেটে যায় এবং দাঁতের মাড়ি থেকে রক্ত পড়তে থাকে। ভিটামিন সি খাবারের লৌহ শোষণে সাহায্য করে রক্তস্বল্পতা দূর করে। বিভিন্নভাবে ভিটামিন সি নষ্ট হয়। যেমন-
▶ সবজি পানিতে বেশিক্ষণ ভিজিয়ে রাখলে অথবা সিদ্ধ করে পানি ফেলে দিলে।
▶ সবজি বেশি কুচি করে কাটলে বাতাসের সংস্পর্শে ভিটামিন সি নষ্ট হয়।
▶ তাপে নষ্ট হয় বলে খোলা কড়াইতে অনেকক্ষণ ধরে রান্না করলে এই ভিটামিন ক্ষয় হয় পঞ্চাশ ভাগ।
▶ তামার পাত্রে ভিটামিন সি যুক্ত খাবার রান্না করলে এর ভিটামিন সি প্রায় কিছুই থাকে না।
▶ সবজির রং ও অম্লতা রক্ষার জন্য সোডিয়াম-বাই-কার্বনেট ব্যবহার করলে সি ভিটামিন নষ্ট হয়।
* ভিটামিন সি রক্ষা করার উপায়
▶ সবজি বড় টুকরা করে ঢাকা দেওয়া পাত্রে রান্না করতে হবে।
▶ সবজি বা ফলে চিনি মেশালে ভিটামিন সি রক্ষা করা যায়। সালাদের সঙ্গে চিনি মেশালে খেতে যেমন সুস্বাদু হয়। তেমনি ভিটামিনও রক্ষা হয়।
▶ ফ্রিজে রাখা সবজি ও ফলের ভিটামিন সি কম নষ্ট হয়।
* উৎস
আমলকী, পেয়ারা, কমলা লেবু, বিভিন্ন ধরনের শাক, কাঁচামরিচ, আলু, লেবু, বাতাবি লেবু, বাঁধা কপি ইত্যাদি। ১০০ গ্রাম আমলকীতে ১ ডজন কমলালেবুর সমপরিমাণ ভিটামিন সি আছে। ডালে ভিটামিন সি না থাকলে ডাল অঙ্কুরিত হওয়ার পর সি ভিটামিনে সমৃদ্ধ হয়।
* কাজ
এটি ত্বকের মসৃণতা, উজ্জ্বলতা বজায় রাখে। যদি শরীরে ভিটামিন এ-এর অভাব হয়, তাহলে সি ভিটামিন ক্ষয় হয়। এটা দেহের ক্ষত সারাতে সাহায্য করে। অত্যধিক ভিটামিন সি খেলে প্রস্রাবে অক্সালেট বেড়ে গিয়ে কিডনিতে পাথর সৃষ্টি হয়। কঠোর ব্যায়ামের পর ভিটামিন সি যুক্ত পানীয় ঠান্ডা লাগা থেকে বাঁচায়। যে গাছে সূর্যের আলো পড়ে, সে গাছের ফলে ভিটামিন সি বেশি থাকে।
* মিথ
কারও কারও ধারণা কোনো স্থান কেটে গেলে বা অপারেশনের পরে টকযুক্ত ফল খেতে হয় না। এতে নাকি ঘা সহজে শুকায় না। এটা একেবারে ভ্রান্ত ধারণা।
লেখক : চিফ নিউট্রিশন অফিসার ও বিভাগীয় প্রধান (অব.), বারডেম। সভাপতি, ডায়াবেটিস নিউট্রিশনিস্ট সোসাইটি অব বাংলাদেশ, পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার, শ্যামলী ও অ্যাডভান্স হাসপাতাল, ঢাকা।