যেসব লক্ষণে বুঝবেন নাকে পলিপ, কী করবেন
ডা. মো. আবদুল হাফিজ শাফী
প্রকাশ: ০৩ জানুয়ারি ২০২১, ০৮:৪০ এএম
ছবি সংগৃহীত
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
শীতের সময়ে প্রকৃতিতে ধুলোবালি বেশি থাকে। এই সময়ে বৃষ্টি না হওয়ার কারণে বাইরে বের হলেই ধুলোবালি উড়ে এসে গায়ে মাখামাখি করে। ফলে এলার্জি থেকে নাকের পলিপের সমস্যা দেখা দেয়।
হাঁচি, সর্দি, নাক থেকে পানি পড়ার ফলে নাক বন্ধের সমস্যা হয়। ফলে নাক দিয়ে শ্বাস নিতে অসুবিধা হবে। সংক্রমণ বা ইনফেকশন হয়ে নাক থেকে সর্দি পড়ে।
অনেক সময় সর্দি পেকে নাক থেকে পুঁজের মতো তৈরি হওয়া শুরু হয়। এসব দীর্ঘদিন চলতে থাকলে স্থায়ীভাবে নাক বন্ধ হয়ে যায়। এই লক্ষণগুলো নাকের পলিপ আক্রান্ত সব রোগীর ক্ষেত্রে বেশি দেখা দেয়।
নাকের পলিপ কী?
নাকের ভেতরে যে মাংসপেশি এবং মিউকাসের আবরণ আছে, সেগুলো অনেক সময় ইনফেকশন বা এলার্জির কারণে সংবেদনশীল হয়ে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। অনেক দিন চিকিৎসা না করালে এগুলোতে পানির মতো করে ফুলে শেষ পর্যন্ত পলিপের মতো তৈরি হয়।
নাকের পলিপ কেন হয়?
নাকের পলিপের অন্যতম কারণ হচ্ছে এলার্জি। এ এলার্জি নাকের ভেতরে ধুলোবালি বা ধোঁয়ার এলার্জি থেকে হতে পারে। নাকের ভেতরে ফাঙ্গাল ইনফেকশনের এলার্জি থেকে কিছু কিছু রোগীর উভয় নাকে এবং অনেক সাইনাসজুড়ে পলিপ তৈরি হয়।
যাদের নাকের এলার্জি আছে, তাদের ১৭ থেকে ১৯ শতাংশ রোগীর ক্ষেত্রে হাঁপানিও আছে। যাদের হাঁপানি আছে, তাদের ৫৫-৭০ শতাংশ রোগীর ক্ষেত্রে নাকের এলার্জিও থাকে।
নাকের এলার্জি ও ফুসফুসের এলার্জির (হাঁপানি) একটির প্রভাব আরেকটির ওপর পড়ে। নাকের এলার্জি ঠিকমতো কন্ট্রোল না করলে অনেক সময় হাঁপানি বেড়ে যেতে পারে বা হাঁপানির চিকিৎসা করা দুরূহ হতে পারে। সে রকম ফুসফুসের এলার্জি বা হাঁপানি ঠিকমতো চিকিৎসা করা না হলে এর বিরূপ প্রতিক্রিয়া নাকের ওপর পড়ে।
পলিপ কীভাবে বুঝবেন
নাকের মধ্যে মাংসপিণ্ডের মতো কিছু একটা দেখে সেটিকে পলিপ ভেবে অনেকে ভুল করেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এগুলো পলিপ নয়। এগুলোকে টারবিনেট বলে। ইনফিরিয়র টার্বিনেট দুই পাশে বড়। এই ইনফিরিয়র টার্বিনেটকে পলিপ বলে বিভিন্ন অপচিকিৎসা করা হয়।
পলিপটা হবে সাদা, আঙুর ফলের মতো। এটি যদি আমরা কিছু দিয়ে স্পর্শ করি, এর কোনো সেন্স থাকবে না। টার্মিনেট হবে একটু লালচে। আর পলিপের চারপাশে দেখা যায় ঝুলন্ত থোকার মতো।
চিকিৎসা
নাকে পলিপের উপসর্গ দেখা দিলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
প্রাথমিক চিকিৎসা হলো ধুলোবালি, ধোঁয়া ও ঠাণ্ডা এড়িয়ে চলতে হবে। প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ ধরা পড়লে নাকে স্টেরয়েড জাতীয় স্প্রে ব্যবহার করলে এটি চলে যেতে পারে।
পলিপ যদি নাককে সম্পূর্ণ অথবা আংশিকরূপে বন্ধ করে দেয়, তা হলে সাধারণত ওষুধে কাজ হতে চায় না। এ রকম ক্ষেত্রে অপারেশনের মাধ্যমে পলিপ ফেলে দেয়া ছাড়া বিকল্প কোনো পথ নেই।
লেখক: এমবিবিএস, বিসিএস (স্বাস্থ্য)
নাক-কান-গলা বিভাগ
বিএসএমএমইউ (প্রেষণে), ঢাকা।
