শিশুর পাইলস রোগ ও চিকিৎসা
অধ্যাপক ডা. একেএম ফজলুল হক
প্রকাশ: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৬:০০ এএম
ছবি সংগৃহীত
শিশুদেরও পাইলস হতে পারে। পাইলস বলতে বোঝায় মলদ্বারে ফুলে ওঠা মাংসপিণ্ড বা গেজ। অসংখ্য শি মিউকাস ঝিল্লির তলায় ফুলে ওঠার কারণে মাংসপিণ্ড ফুলে ওঠে এবং কখনও কখনও রক্ত যায়। হেমোরয়েড অর্থ হলো টয়লেটে রক্ত যাওয়া।
অভ্যন্তরীণ পাইলসে মাংসপিণ্ড না থাকলেও প্রচুর রক্ত যেতে পারে। অনেক বড় গেজ আছে কিন্তু রক্ত নাও যেতে পারে। এ রক্ত যাওয়ার আবার তারতম্য আছে।
তবে সাধারণত কয়েক দিন থেকে কয়েক মাস পর পর রক্ত যায়। শিশুদের পাইলস হলে বড়দের চেয়ে বেশি রক্ত যায়। অভিভাবকরা শিশুদের যে পাইলসের সমস্যা অর্থাৎ টয়লেটে রক্ত গেলে চিকিৎসকের কাছে আসেন তাদের বেশিরভাগই পাইলস নয়।
শিশুদের টয়লেটে রক্ত যাওয়ার প্রধান কারণ রেকটাল পলিপ। এটি এক ধরনের আঙুর ফলের মতো টিউমার, যা ক্যান্সার নয়। এগুলো এক বা একাধিক হতে পারে এবং এরূপ শত শত পলিপ থাকতে পারে, যা থেকে সাধারণত রক্ত ও মিউকাস বা আম যায়।
রোগীর অভিভাবকরা মনে করেন যে, এটি রক্ত আমাশয় এবং ওষুধ দিয়ে ভালো করা যাবে। রেকটাল পলিপ রোগের চিকিৎসা হচ্ছে এটিকে কেটে ফেলে দেয়া। রোগীকে ইনজেকশন দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে এটি করতে হয়।
চিকিৎসা
রেকটাল পলিপ অপারেশনের জন্য শিশুকে কয়েক ঘণ্টা হাসপাতালে রাখলেই চলে। রোগীর পেট খালি করার জন্য আগের দিন কিছু ওষুধ দেয়া হয়, যাতে পায়খানা ক্লিয়ার হয়। খুব সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর খালি পেটে অপারেশন করাই ভালো।
এ জন্য রোগীকে ঘুম পাড়ার ইনজেকশন দিতে হয়। একটি বিশেষ ধরনের যন্ত্রের সাহায্যে টিউমারটি (পলিপ) কেটে আনা হয়।
এ অপারেশনে মলদ্বারে কোনো কাটাছেঁড়া করা হয় না, তাই অপারেশনের পর ব্যথা হয় না। অপারেশনের দুই-তিন ঘণ্টা পর রোগী স্বাভাবিক খাবার খেতে পারবে ও বাসায় চলে যেতে পারে।
শিশুদের মলদ্বারে অন্য একটি সমস্যা হয়। এতে পায়খানা শক্ত হলে মলদ্বার ফেটে যায় এবং ব্যথা হয়। কিছুটা রক্তও যেতে পারে। কিছু দিন পর মলদ্বারে একটি গেজ দেখা যায়। শিশু ব্যথার কারণে টয়লেটে যেতে ভয় পায়। এ রোগটির নাম এনালফিশার।
এ ক্ষেত্রে চিকিৎসক মল নরম করার জন্য ওষুধ দেন, পানি, সবজি, সালাদ খেলে উপকার পাওয়া যায়, পায়ুপথে মলম লাগানো যেতে পারে।
চুলকানি হলে কৃমির ওষুধও দিতে হবে। জন্মের পর পরই যে কোনো সময় এ রোগ হতে পারে।
লেখক:
বৃহদান্ত্র ও পায়ুপথ সার্জারি বিশেষজ্ঞৱ
ইন্টারন্যাশনাল স্কলার
ইডেন মাল্টিকেয়ার হাসপাতাল, ঢাকা।