ছবি সংগৃহীত
মাড়ি থেকে রক্তপাত হওয়া খুবই স্বাভাবিক একটি রোগ। একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, বাংলাদেশের ৮০ শতাংশ মানুষ কোনো না কোনোভাবে এ রোগে ভোগেন।
মাড়ি থেকে রক্ত পড়লে বুঝতে হবে মাড়িতে জিনজিভাইটিস বা মাড়ির প্রদাহ হয়েছে। যদি আপনার মাড়ি থেকে সহজেই রক্ত পড়ে কিংবা দাঁত ব্রাশের সময় রক্ত পড়ে, তা হলে শুরুতেই ডেন্টিস্টের কাছে যান। জিনজিভাইটিস নিরাময়যোগ্য ও সহজে প্রতিকার করা যায়।
রক্ত পড়ার কারণ
১. মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়ার প্রধান ও অন্যতম কারণই হচ্ছে নিয়মিত দাঁত ব্রাশ না করা। দাঁতের ওপর লেগে থাকা খাদ্যকণাগুলোর সাদা প্রলেপ পড়ে, যাকে আমরা ডেন্টাল প্লাগ বলি। ২৪ ঘণ্টা পর এ ডেন্টাল প্লাগ শক্ত হয়ে ক্যালকুলাস হয়। এ ক্যালকুলাসই মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়ার অন্যতম কারণ।
২. ক্যালকুলাস দাঁত ও মাড়ির মাঝখানে অবস্থান করে এবং প্রতিনিয়ত নরম মাড়ির সঙ্গে ক্যালকুলাসের ঘর্ষণের কারণে খুব সহজেই মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়ে। মাড়ির ফোলা এবং প্রদাহের কারণও এ ক্যালকুলাস। এটিকে বলা হয় জিনজিভাইটিস।
৩. ক্রমশই জিনজিভাইটিস বেড়ে গিয়ে যখন প্রকট আকার ধারণ করে, তখন একে বলা হয় পেরিওডন্টাইটিস। এ অবস্থায় দাঁতটা ধীরে ধীরে মাড়ি থেকে সরে যায় এবং নড়তে থাকে।
আরও কিছু কারণ রক্ত পড়ার জন্য দায়ী হতে পারে। যেমন–
জোরে জোরে দাঁত ব্রাশ করা, ঠিকমতো কৃত্রিম দাঁত না বসা, ঠিকমতো ফ্লসিং না করা, লিউকোমিয়া (এক ধরনের রক্তের ক্যান্সার), রক্ত পাতলাকারী ওষুধ, গর্ভাবস্থায় হরমোনের প্রভাব, স্কার্ভি, ভিটামিন সি-এর ঘাটতি, ভিটামিন কে-এর ঘাটতি
কি করবেন
এ সমস্যা প্রাথমিক যত্নের মাধ্যমে সারিয়ে তোলা সম্ভব। তবে অনেক সময় যদি ভালো না হয় তা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
প্রতিদিন সঠিক নিয়মে সকালে ঘুম থেকে জেগে ও রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে দুবার দাঁত ব্রাশ করতে হবে।
ভালো মানের পেস্ট ও ব্রাশ ব্যবহার করতে হবে। দীর্ঘদিন এক টুথপেস্ট ব্যবহার করবেন না।
ডেন্টাল ফ্লস ব্যবহারের মাধ্যমে দুই দাঁতের মাঝখানে লেগে থাকা খাদ্যকণা দূর করতে হবে। নিয়মিত ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। যেমন- আমলকী, কমলালেবু, বাতাবিলেবু, আমড়া ইত্যাদি।
এ ছাড়া কুসুম গরমপানিতে লবণ দিয়ে কুলকুচি করতে হবে।
ছয় মাস পর পর ডেন্টিস্টের পরামর্শ নিন।
ওরাল অ্যান্ড ডেন্টাল সার্জন, ফরাজী ডেন্টাল হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার