৩০ পার হলে কোন কোন অভ্যাস বদলাবেন পুরুষরা
লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশ: ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:৪৮ পিএম
নির্দিষ্ট একটা বয়সের পর নিয়মিত শরীরের যত্ন নেওয়া ও নির্দিষ্ট কিছু স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়ে রাখা একান্তই জরুরি। কারণ ৩০ পার হলেই আপনার শরীর আপনার নিয়ন্ত্রণ থেকে দূরে সরতে থাকে। অফিসের তাড়াহুড়া, সংসারের দায়িত্ব সামলে শরীরের যত্ন আর সেভাবে নেওয়া হয় না। বেশিরভাগ পুরুষই বলবে যে, পরিবারের সবার স্বাস্থ্য চিন্তিত হলেও, নিজেদের স্বাস্থ্যের ব্যাপারে তারা সচেতন নন। যাকে বলে উদাসীন বাউল।
কিন্তু একটা নির্দিষ্ট বয়সের পর শরীরের যত্ন নেওয়া উচিত। নির্দিষ্ট কিছু স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়ে নিজেকে ফিট রাখা জরুরি।
হার্টের রোগ বাসা বেঁধেছে কিনা, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আছে কিনা, ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল, ইউরিক অ্যাসিডের বাড়বাড়ন্ত হলো কিনা, তা জানতে স্বাস্থ্যপরীক্ষা করাতেই হবে।
মেডিসিনের চিকিৎসক ও সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ অনির্বাণ দলুইয়ের মতে, বয়স ৩০ পার হলেই পুরুষের শরীরের দিকে বাড়তি নজর দিতে হবে। যে কোনো বয়সে একাধিক কারণে স্বাস্থ্যপরীক্ষার প্রয়োজন হতে পারে। কোনো অসুখের আশঙ্কা যদি থাকে তা জানতেই স্বাস্থ্য পরীক্ষা।
এ ছাড়া সুষম খাবার খাওয়া, নেশার মাত্রা কমানো এবং নিয়মিত শরীর চর্চাও জরুরি। বয়স বাড়লে মূত্রথলির নানা রোগ দেখা দেয় অনেকেরই। সেই বিষয়েও সচেতন হওয়া জরুরি।
উপসর্গ চিনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন—
দিনের পর দিন পেটের ওপরের দিকে হালকা ব্যথা অনুভব করছেন? বুকে চিনচিনে ব্যথা, রাতে শুলে দরদর করে ঘাম হয়, বাতানুকূল ঘরে থাকলেও ঘেমে যান— এমন সব উপসর্গ দেখা দিলে তা গ্যাস-অম্বলের জন্য হচ্ছে ভেবে অ্যান্টাসিড না খেয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। এসব লক্ষণ কিন্তু হৃদ্রোগেরও ইঙ্গিত হতে পারে।
কর্মক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা, সংসারের দায়িত্ব সামলাতে সামলাতে মনের ওপর চাপ অনেকখানিই বেড়ে যায়। দুশ্চিন্তা, উদ্বেগে ভোগেন অনেক পুরুষই, কিন্তু মুখে প্রকাশ করেন না। দীর্ঘ সময় ধরে বাড়তে থাকা মানসিক চাপ একসময়ে গিয়ে অবসাদ বা যে কোনো জটিল মানসিক রোগের কারণ হয়ে উঠতে পারে। তাই কাজের মাঝে বিরতি নেওয়া ভীষণ জরুরি। পরিবারের সঙ্গে ছুটি কাটাতে যান, বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে সময় কাটান। আর নিয়ম করে প্রতি দিন অন্তত ১৫ মিনিটের জন্য হলেও ধ্যান ও যোগাসন অভ্যাস করার চেষ্টা করুন।
ধূমপানের নেশা ছাড়ুন ধূমপানের অভ্যাস আছে? তা হলে এখনই বদল আনুন সেই অভ্যাসে। এতে কেবল ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে না, শরীরে একাধিক রোগের বাসা বাঁধে এই অভ্যাসের কারণে।
শরীরচর্চার অভ্যাস—
অভিজ্ঞ প্রশিক্ষকের থেকে জেনে নিয়ে নিয়ম করে শরীরচর্চা করতে হবে। যদি জিমে গিয়ে ঘাম ঝরানোর সময় না পান, তা হলে রোজ সকালে হাঁটুন। তাতেও কাজ হবে। দিনে আধ ঘণ্টা সময় শরীরচর্চার জন্য দিতেই হবে। হাঁটাহাঁটি, দৌড়নো, সাঁতার, জগিং, সাইকেল চালানো খুবই ভালো ব্যায়াম।
স্বাস্থ্যপরীক্ষা—
আপনার শরীরে যদি কোনো রোগ না-ও থাকে, তা হলেও বছরে একবার অন্তত স্বাস্থ্যপরীক্ষা করাতেই হবে। চিকিৎসক জানাচ্ছেন, ৪০ পার করলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়। তাই বছরে একবার হলেও ক্রিয়েটিনিন পরীক্ষাটাও করিয়ে নেওয়া জরুরি। পুরুষের মধ্যে যে ক্যানসারগুলো সবচেয়ে বেশি দেখা যায়, তার মধ্যে প্রস্টেট গ্রন্থির ক্যানসার অন্যতম। তাই সে পরীক্ষাও করিয়ে রাখতে হবে। তাই নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর ক্যানসার স্ক্রিনিং টেস্ট করানো জরুরি। চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে হার্টের পরীক্ষা, লিপিড প্রোফাইল, ইউরিক অ্যাসিড, থাইরয়েড টেস্ট ও নির্দিষ্ট কিছু হরমোনের পরীক্ষাও করিয়ে রাখতে হবে।