এনএসআইয়ের সাবেক ডিজি ওয়াহিদুল হকের জামিন
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ২৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:১১ পিএম
একাত্তরের যুদ্ধাপরাধ মামলায় জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক (ডিজি) মুহাম্মদ ওয়াহিদুল হককে জামিন দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন বিচারপতির বেঞ্চ মঙ্গলবার এ আদেশ দেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবী আব্দুস সাত্তার পালোয়ান বলেন, ‘জামিনে কয়েকটি শর্ত দিয়েছেন আদালত। এগুলোর মধ্যে রয়েছে- সাক্ষীদের সঙ্গে দেখা করা এবং হুমকি দিতে পারবেন না, মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলতে পারবেন না, যেখানে থাকবেন সেখান থেকে বের হওয়া যাবে না, বিদেশে যেতে পারবেন না, জামিনে পাসপোর্ট জমা থাকবে।’
এ ছাড়া মামলার তারিখগুলোতে হাজিরা দেওয়ার শর্ত দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগে বলা হয়, ১৯৭১ সলের ২৮ মার্চ আনুমানিক বিকাল ৪টার দিকে বিভিন্ন এলাকা থেকে মুক্তিকামী হাজার হাজার বেসামরিক জনগণ রংপুর সেনানিবাসের দক্ষিণে কোতোয়ালি থানা এলাকায় অবস্থান নেয়। সেখানে তারা ২৫ মার্চ পাকিস্তানি সেনা বাহিনীর বর্বর হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদ ও স্বাধীনতার পক্ষে নিজেদের অবস্থানের জানান দিচ্ছিলেন।
অভিযুক্ত আসামি মেজর (অবসরপ্র্রাপ্ত) মুহাম্মদ ওয়াহিদুল হকের (একাত্তরে তিনি রংপুর ক্যান্টনমেন্টের ২৯ ক্যাভালরি (অশ্বারোহী) রেজিমেন্টের ক্যাপ্টেন ছিলেন) নেতৃত্বে সশস্ত্র সেনাবাহিনী সেদিন মেশিনগান দিয়ে মুক্তিকামী মানুষের ওপর নির্বিচারে গুলি চালিয়ে ৫০০ থেকে ৬০০ বেসামরিক লোককে হত্যা করে।
কেবল তাই নয়, সেদিন যারা আহত হয়েছিলেন, তাদের কয়েকজনকে পরে ফাঁসি দিয়েছিলেন পাকিস্তানি বাহিনীর লেফটেন্যান্ট কর্নেল শাগের। নিহতদের মধ্যে অন্তত ১৫ জনের নাম-পরিচয় আনুষ্ঠানিক অভিযোগে তুলে ধরেছে প্রসিকিউশন।
অভিযুক্ত মুহাম্মদ ওয়াহিদুল হক সেদিন সক্রিয়ভাবে ‘গণহত্যায়’ অংশ নিয়েছিলেন। এছাড়া ‘অন্যান্য অমানবিক আচরণ’, ‘নির্যাতন’, ‘হত্যা’র মাধ্যমে ১৯৪৩ সালের জেনেভা কনভেনশনের ৩(২) (কে) (ই) (জি) (জ) ধারা লঙ্ঘন করে তিনি অন্তর্জাতিক অপরাধ আইন, ১৯৭৩ ২০(২) ধারা অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
২০১৬ সালের ৫ ডিসেম্বর ওয়াহিদুল হকের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ তালিকাভুক্ত করা হয়। সে অভিযোগের ওপর ভিত্তি করে তদন্ত শুরু হয়।
তদন্ত কাজকে বিভিন্নভাবে প্রভাবিত করার চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন এমন অভিযোগ উঠলে ট্রাইব্যুনাল তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। পরে গত বছরের ২৪ এপ্রিল দুপুরে গুলশানের বারিধারার বাসা থেকে ওয়াহিদুল হককে গ্রেফতার করা হয়। ট্রাইব্যুনাল তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।