জামিন পেয়ে আদালত চত্বরে যা বললেন ড. ইউনূস
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০২ মে ২০২৪, ০৫:৪৫ পিএম
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘অর্থ আত্মসাৎ, অর্থপাচারের অভিযোগগুলো সত্য কিনা, নাকি সুদখোরের মতো কথাবার্তা- সেটা আপনাদের ওপর ছেড়ে দিলাম। আমি আদালত থেকে আদালতে যাচ্ছি। আমার কাছে তো কোনো উত্তর নেই।’
‘কোনো সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষ এমন অভিযোগ আনতে পারে না’ বলেও মন্তব্য করেন ড. ইউনূস।
মানি লন্ডারিং মামলায় জামিন পেয়ে বৃহস্পতিবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর চত্বরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। এই মামলায় অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য আগামী ২ জুন দিন নির্ধারণ করেছেন আদালত।
তবে বিচারাধীন বিষয়ে ড. ইউনূস এমন মন্তব্য করতে পারেন না বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মোশাররফ হোসেন কাজল।
ড. ইউনূস সাংবাদিকদের বলেন, ‘দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয়ে বলছি, আমার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয়েছে। জালিয়াতির অভিযোগ আনা হয়েছে। আমার বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। আনা হয়েছে অর্থপাচারের অভিযোগ। আপনারা আমাকে বহুদিন থেকে চিনছেন। এই অপরাধগুলো আমার গায়ে লাগানোর মতো অপরাধ কিনা- সেটা আপনারা বিবেচনা করবেন। আগে যে রকম বিবেচনা করেছেন।’
ইউনূসের দাবি, তিনি গ্রামীণ ব্যাংকের মালিক নন। সুদ যদি কেউ নিয়ে থাকেন, গ্রামীণ ব্যাংকের মালিকেরা নিয়েছেন।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাকে বলা হয়েছে, আমি সুদখোর। বহুবার এ কথা বলা হয়েছে, আপনারা সেটি গ্রহণ করেননি। আমাকে যখন গ্রামীণ ব্যাংক থেকে বের করে দেওয়া হলো, তখন গ্রামীণ ব্যাংকের ৯৭ শতাংশ সদস্য ছিলেন এর মালিক। সুদ যদি গ্রহণ করে থাকেন, সেটি তারা করেছেন। আমি কর্মচারী মাত্র। আমি গ্রামীণ ব্যাংকের মালিক ছিলাম না। কাজেই আপনারা সেটি গ্রহণ করেননি।’
সাংবাদিকদের ইউনূস আরও বলেন, ‘আমাকে বলা হয়েছে গরিবের রক্তচোষা। আমি এক কোটি গরিব মানুষকে ব্যাংকের মালিক বানিয়েছি। তাদের মালিকানা দিয়েছি। এটা তো সত্য। বলা হয়েছে, পদ্মা সেতু বানচাল করেছি। ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের টাকা বন্ধ করেছি। আপনারা সেটি গ্রহণ করেননি। আজ যে অভিযোগ, সেই একই ধরনের অভিযোগ। আপনাদের বিবেচনার ওপর ছেড়ে দিলাম।’
গ্রামীণ টেলিকমের কর্মীদের লভ্যাংশের ২৫ কোটি ২২ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে করা মামলায় গত ১ ফেব্রুয়ারি ড. ইউনূসসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করে দুদক।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২৫ কোটি ২২ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন আসামিরা। অবৈধভাবে অর্থ স্থানান্তর করা হয়েছে, যা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে অপরাধ।
গত বছরের ৩০ মে দুদকের উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান বাদী হয়ে মামলাটি করেন।