বিদেশে পালিয়ে যাওয়া এজেন্সি মালিক মাওলানা ফয়জুর বিমানবন্দরে গ্রেফতার
কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২২ মার্চ ২০২৪, ১০:৩১ পিএম
কেরানীগঞ্জে ১৩৭ হজযাত্রীর প্রায় ছয় কোটি টাকা আত্মসাৎ করে বিদেশে পালিয়ে যাওয়া এজেন্সি মালিক মাওলানা ফয়জুর রহমানকে (৪৫) হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাত ১টার দিকে দুবাই থেকে দেশে ফেরার পর বিমানবন্দর পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। খবর পেয়ে রাত আড়াইটার দিকে কেরানীগঞ্জ মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা খালেদুর রহমানের নেতৃত্বে একদল পুলিশ গিয়ে তাকে থানায় নিয়ে আসে। শুক্রবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
জানা যায়, কেরানীগঞ্জে ১৩৭ জন হজযাত্রীর টাকা নিয়ে আত্মগোপন করেন এজেন্সি মালিক ফয়জুর রহমান। এ ঘটনায় হজযাত্রী জাকির হোসেন ২৫ ফেব্রুয়ারি কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় মামলা করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা খালেদুর রহমান বলেন, মামলার পর আদালতের নির্দেশে ফয়জুরের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়, যদিও সেখানে মাত্র ৭৩ লাখ টাকা সর্বশেষ জমা আছে। বিমানবন্দরে তার পাসপোর্ট তল্লাশি করে জানা যায়, ওইদিনই (২৫ ফেব্রুয়ারি) তিনি বাহরাইন চলে যান। তার পাসপোর্ট আমরা অবজেকশন দিয়ে রেখেছিলাম। বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে তিনি দুবাই থেকে এমিরেটস এয়ারের একটি বিমানে ঢাকায় পৌঁছানোর পর বিমানবন্দর পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে আমাদের খবর দেয়।
তিনি আরও বলেন, প্রথমে ফয়জুর বাহরাইন যান। সেখান থেকে সৌদি আরব হয়ে দুবাই যান। দুবাই থেকে বাংলাদেশে আসেন।
পালানোর পর দেশে ফিরে আসার বিষয়ে ফয়জুর পুলিশকে বলেছেন, হজযাত্রীর টাকা আত্মসাৎ করাটা তাকে মানসিক পীড়া দিচ্ছিল। তিনি একা ঘুমাতে পারতেন না। এছাড়াও তিনি ভেবেছিলেন, এতদিনে হয়তো পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে গেছে। দেশে আসার পর কোথাও আত্মগোপনে যাওয়ার ইচ্ছা ছিল। তিনি প্রায় ছয় কোটি টাকা আত্মসাতের কথা স্বীকার করেছেন। পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে রিমান্ড আবেদন জানাবে।
জানা গেছে, ফয়জুর রহমানের গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার পাটুলী এলাকায়। বাবার নাম আব্দুল কুদ্দুস। ফয়জুর রহমান জিনজিরা গোলজারবাগ মসজিদ মার্কেটের তৃতীয়তলায় নজরুল এয়ার ইন্টারন্যাশনাল ট্রাভেলার্স নামে হজ এজেন্সি খুলে ১০ বছর ধরে লোকজনকে হজে পাঠাতেন। পাশাপাশি স্থানীয় রহমতপুর হাফেজিয়া মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করতেন। একসময় ওই মাদ্রাসার ছাত্র ছিলেন তিনি।
জাকির হোসেন, ওয়াহিদ, ফারুকসহ একাধিক ভুক্তভোগী হজযাত্রী বলেন- তারা যে দুর্ভোগে পড়েছেন সেটা যেন কোনো হজযাত্রীর সঙ্গে না হয়।