সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে করা মামলার রায় আজ। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এর বিচারক মঞ্জুরুল ইমাম এ মামলার রায় ঘোষণা করবেন। রায়ে তিন বছরের বেশি সাজা হলে তিনি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। এদিকে রাজধানীর শাহজাহানপুরে নাশকতা ও বিস্ফোরক আইনের মামলায় মির্জা আব্বাসের জামিন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। ২২ নভেম্বর রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য ৩০ নভেম্বর দিন ধার্য করেন আদালত।
২০০৭ সালের ১৬ আগস্ট মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন ৭ কোটি ৫৪ লাখ ৩২ হাজার ২৯০ টাকার সম্পদ অর্জন ও ৫৭ লাখ ২৬ হাজার ৫৭১ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে রাজধানীর রমনা থানায় দুদকের উপপরিচালক মো. শফিউল আলম মামলা করেন। তদন্ত শেষে ২০০৮ সালের ২৪ মে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক মো. খায়রুল হুদা আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
চার্জশিটে তার বিরুদ্ধে ৪ কোটি ২৩ লাখ টাকার সম্পদ অর্জন ও ২২ লাখ টাকার সম্পত্তির তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয়। ২০০৮ সালের ১৬ জুন আদালত এ মামলার অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন।
বিচার চলাকালীন আদালত ২৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন। এ মামলায় মির্জা আব্বাসসহ পাঁচজন সাফাই সাক্ষী দেন। অন্য চারজন হলেন-অ্যাডভোকেট একেএম শাহজাহান ও এনআরবি ব্যাংকের চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট নুরুল হোসেন খান, শাহজাহান মিয়া ও কাজী শিফাউর রহমান হিমেল।
দুদকের আইনজীবী মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর যুগান্তরকে বলেন, এ মামলায় মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। দুদক আইনের ২৬(২) ধারায় তিন বছর ও ২৭(১) ধারায় ১০ বছরের কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে। রায়ে তার সর্বোচ্চ শাস্তি হবে বলে প্রত্যাশা করছি। এছাড়া অবৈধভাবে অর্জিত তার সব সম্পদ বাজেয়াপ্তের প্রত্যাশা করছি।
মির্জা আব্বাসের আইনজীবী মহিউদ্দিন চৌধুরী যুগান্তরকে বলেন, তার বিরুদ্ধে দুদকের আনা অভিযোগ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। সাক্ষ্যপ্রমাণেও তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ প্রমাণিত করতে পারেনি দুদক। রায়ে আব্বাস খালাস পাবেন এই প্রত্যাশা করছি।
দুদকের আইনজীবী মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর যুগান্তরকে আরও বলেন, তার বিরুদ্ধে আমরা দুটি অভিযোগই প্রমাণ করতে পেরেছি। ৩ বছরের বেশি সাজা হলেই তিনি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।
মির্জা আব্বাসের আইনজীবী মহিউদ্দিন চৌধুরী যুগান্তরকে বলেন, মূলত নির্বাচন থেকে দূরে রাখতেই বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে মামলাগুলো দ্রুত শেষ করা হচ্ছে।
এদিকে বুধবার ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ বিলকিস আক্তারের আদালত মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে দায়ের করা নাশকতা ও বিস্ফোরক আইনের মামলার শুনানি শেষে জামিন নামঞ্জুরের আদেশ দেন। এর আগে তাকে ১ নভেম্বর আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক মো. নুরুল ইসলাম। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
২৯ অক্টোবর রাজধানীর শাহজাহানপুর থানায় উপপরিদর্শক মোস্তাফিজুর রহমান বাদী হয়ে মির্জা আব্বাসকে প্রধান আসামি করে নাশকতার মামলা করেন।