টিপু-প্রীতি হত্যা: পলাতক ৮ আসামির নামে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৭ আগস্ট ২০২৩, ০৫:০৬ পিএম
রাজধানীর শাহজাহানপুরে আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু ও কলেজছাত্রী সামিয়া আফরান প্রীতি হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত পলাতক ৮ আসামিকে হাজির হতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিম রাজেশ চৌধুরী এ আদেশ দেন। আগামী ৮ অক্টোবর এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনে দাখিলের জন্য দিন ধার্য করেছেন আদালত।
পলাতক আসামিরা হলেন- আন্ডারওয়ার্ল্ডের শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান ওরফে জিসান আহাম্মেদ ওরফে মন্টু ওরফে এমদাদুল হক ও জাফর আহমেদ মানিক ওরফে ফ্রিডম মানিক, গোলাম আশরাফ তালুকদার, রিফতি হোসেন, সোহেল ওরফে রানা মোল্লা, আমিনুল ইসলাম, সামসুল হায়দার ও কামরুজ্জামান।
পলাতক এই আসামিদের মধ্যে জিসান ও মানিক পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী। তারা বিদেশে পালিয়ে থেকে এই হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনায় যুক্ত ছিলেন বলে মামলার চার্জশিটে (অভিযোগপত্র) উল্লেখ করেছে পুলিশ।
এদিকে মামলার অপর আসামি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা মারুফ আহমেদ মনসুর বুধবার আত্মসমর্পণ করলে তাকে কারাগারে পাঠান আদালত।
এর আগে গত ৫ জুন শাহজানপুর থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আশরাফ তালুকদারসহ ৩৩ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ইয়াসিন শিকদার। ২০ জুন মামলার চার্জশিট আমলে নিয়ে পলাতক ৯ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।
মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলেন- ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা মারুফ আহমেদ মনসুর, বিদেশে পলাতক আন্ডারওয়ার্ল্ডের দুই সন্ত্রাসী জিসান ও ফ্রিডম মানিক, মতিঝিল থানা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক খায়রুল ইসলাম, মতিঝিল থানা জাতীয় পার্টির নেতা জুবের আলম খান রবিন, হাবীবুল্লাহ বাহার কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক সোহেল শাহরিয়ার, ১০ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি মারুফ রেজা সাগর, ১১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সভাপতি কামরুজ্জামান বাবুল, ১০ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাবেক সদস্য কাইল্যা পলাশ, একই ওয়ার্ড যুবলীগের সাবেক নেতা আমিনুল, ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক ‘ঘাতক’ সোহেল, সুমন শিকদার মুসা, মুসার ভাগনে সৈকত, মুসার ভাতিজা শিকদার আকাশ, ইমরান হোসেন জিতু, মোল্লা শামীম, রাকিব, বিডি বাবু, ওমর ফারুক, ‘কিলার’ নাসির, রিফাত, ইশতিয়াক হোসেন জিতু, মাহবুবুর রহমান টিটু, হাফিজ, মাসুম ও রানা মোল্লা। এদের মধ্যে ২৪ জনই গ্রেফতার হয়েছে।
এ হত্যা মামলায় মুসা, শুটার আকাশ ও নাসির উদ্দিন মানিক স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: দেশ-বিদেশের শীর্ষ সন্ত্রাসী ও নেতাদের কিলিং মিশন
২০২২ সালের ২৪ মার্চ রাত সোয়া ১০টার দিকে শাহজাহানপুরে ইসলামী ব্যাংকের পাশে বাটার শোরুমের সামনে আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপুকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ সময় গাড়ির পাশে রিকশায় থাকা কলেজছাত্রী সামিয়া আফরান প্রীতি (১৯) নিহত হন। এ ছাড়া টিপুর গাড়িচালক মুন্না গুলিবিদ্ধ হন।
চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের পর ওই দিন রাতেই শাহজাহানপুর থানায় নিহত টিপুর স্ত্রী ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) সংরক্ষিত কাউন্সিলর ফারহানা ইসলাম ডলি বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেন। এতে অজ্ঞাতদের আসামি করা হয়।
মামলার এজাহারে টিপুর স্ত্রী অভিযোগ করেন, ২০২২ সালের ২৪ মার্চ রাত সোয়া ১০টার দিকে শাহজাহানপুর থানার ২০২ উত্তর শাহজাহানপুর মানামা ভবনের বাটার দোকানের সামনে পৌঁছামাত্রই অজ্ঞাতপরিচয়ের দুর্বৃত্তরা হামলা করে। তারা জাহিদুল ইসলাম টিপুকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে এলোপাতাড়ি গুলি করে।