আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় জুলাই বিপ্লবের পূর্বাপর
মোহাম্মদ হাসান শরীফ
প্রকাশ: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০২:০৭ এএম
জুলাই বিপ্লব কিংবা শ্রাবণ বিপ্লব-যে নামেই ডাকা হোক না কেন, হাসিনাকে অপসারণ ছিল বিশ্ব ইতিহাসের একটি অনন্য ঘটনা। স্বৈরাচার যতই শক্তিশালী হোক না কেন, বর্তমান প্রজন্ম তাকে মেনে নিতে প্রস্তুত নয়। তাকে সরে যেতেই হবে।
বাংলাদেশের এ বিপ্লব নিয়ে আন্তর্জাতিক মিডিয়ার প্রতিবেদনগুলো নিয়ে লেখাটি তৈরি করা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি মিডিয়ার বিপ্লব নিয়ে ভাষ্যের কিছু অংশ এখানে তুলে ধরা হলো।
বাংলাদেশের বিপ্লব : বিশ্বের বিস্ময়
আল জাজিরা
আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে, ছাত্ররা মাত্র ৫ সপ্তাহের আন্দোলনে শেখ হাসিনাকে অপসারণ করেছে। তবে কার্যত এ বিপ্লব সৃষ্টিতে লেগেছে দীর্ঘ ১৫টি বছর।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এ বিপ্লবের নেতৃত্বে ছিল। ২৫ বছর বয়সি আবু সাঈদের কথা বলা যায়। এ মেধাবী ছাত্র ছিলেন আন্দোলনটির অন্যতম নেতা। বিক্ষোভের সময় তিনি পুলিশের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়েছিলেন। পুলিশ তাকে খুব কাছ থেকে গুলি করে হত্যা করে। এ বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড দাবানলের সৃষ্টি করে, লাখ লাখ তরুণকে রাজপথে আরও সংঘবদ্ধ করে। শুধু ছাত্ররা নয়, শিক্ষক, আইনজীবী, অভিভাবক, রিকশাওয়ালা, হকাররা পর্যন্ত রাজপথে নেমে আসে। দুই শতাধিক লোকের প্রাণের বিনিময়ে হয় বিপ্লব।
এ আন্দোলনের সফলতার মধ্য দিয়ে প্রমাণ হয়েছে বাংলাদেশের জনগণ মানবাধিকার, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রকে কত মূল্য দেয়। অর্থনৈতিক উন্নয়নের কথা বলে হাসিনা যেভাবে মানবাধিকারকে দলন করেছিলেন, নির্যাতন চালিয়েছিলেন, দুর্নীতি ও বৈষম্য বাড়িয়ে তুলেছিলেন, সেটা গ্রহণযোগ্য ছিল না।
এ বিপ্লব কেবল বাংলাদেশ নয়, পুরো দুনিয়াকে একটি সুস্পষ্ট বার্তা দিয়েছে। তা হলো ক্ষমতার অপব্যবহার যারাই করবে, তাদের রক্ষা নেই। স্বৈরাচারের সময় শেষ। নতুন প্রজন্ম তাদের অধিকার হারাতে রাজি নয়, তারা অনেক দামে হলেও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার জন্য লড়াই করতে প্রস্তুত।
নতুন পথে বাংলাদেশ
রয়টার্স
গত জুনে মাত্র কয়েকজন ছাত্রনেতা সরকারি চাকরিতে কোটার বিরুদ্ধে আন্দোলন করছিল। কিন্তু দুই মাসের মধ্যেই তাদের আন্দোলন এতই জনপ্রিয় হয়ে পড়ে যে, নৃশংসভাবে দমন অভিযান চালিয়েও রক্ষা পায়নি হাসিনা সরকার। হাসিনার হাতে তিন শতাধিক বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছে। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতার পর এটাই ছিল সবচেয়ে বড় একক সহিংসতা।
জেন জি বিপ্লব নামে অভিহিত এ আন্দোলন ছিল চাকরিহীন প্রবৃদ্ধি, স্বজনপ্রীতি এবং নাগরিক অধিকার দমনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। হাসিনার পতনের পর নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
আন্দোলনকারীরা কী চায়। তাদের ভাষায়, ‘আন্দোলনের চেতনা হলো একটি নতুন বাংলাদেশ সৃষ্টি করা। নতুন দেশে কোনো ফ্যাসিস্ট বা কোনো স্বৈরাচারের প্রত্যাবর্তন চলবে না।’ আর তা নিশ্চিত করার জন্য ‘প্রয়োজন কাঠামোগত সংস্কার।’
গণবিক্ষোভ যেভাবে বদলে দিল বাংলাদেশকে
টাইম
সরকারি চাকরিতে কোটা নিয়ে শুরু হওয়া শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ বাংলাদেশে সর্বাত্মক বিদ্রোহে রূপান্তরিত হয়েছে বাংলাদেশে। বদলে গেছে বাংলাদেশ। স্থানীয় মিডিয়ার খবরে যদিও নিহতের সংখ্যা বলেছে দুই শতাধিক। বাস্তবে মারা গেছে আরও অনেক বেশি। নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা কেবল অস্ত্র বা সাঁজোয়া যান থেকেই গুলি করেনি, হেলিকপ্টার থেকে পর্যন্ত গোলাবর্ষণ করেছে। ফলে আহতও হয়েছে বিপুলসংখ্যক লোক। এ ছাড়া হাজার হাজার লোককে গ্রেফতার করা হয়েছে। ছাত্রসহ অসংখ্য লোককে হেফাজতে নিয়ে নৃশংসভাবে নির্যাতন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, টাইম ম্যাগাজিন বিশ্বের প্রভাবশালী সেরা ১০০ জনের তালিকায় নাহিদ ইসলামকে স্থান দিয়েছে। আন্দোলনের সময় তাকে অপহরণ করা, তার ওপর পরিচালিত নির্যাতনের বিবরণ তুলে ধরা হয়। হাসিনার পতনে তার ভূমিকা নিপুণভাবে প্রকাশ করা হয়।
বাংলাদেশের বিক্ষোভ
আউটলুক ইন্ডিয়া
বাংলাদেশে তিন সপ্তাহের গণবিক্ষোভ ২০০৮ সাল থেকে ক্ষমতায় থাকা শেখ হাসিনা সরকারকে অপসারণ করেছে। গণবিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করে হাসিনা সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে করে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন। তিন সপ্তাহের বিক্ষোভে ৪০০ থেকে ৬০০ লোক নিহত হয়েছে বলে বিভিন্ন হিসাবে বলা হয়েছে। এ নাটকীয় পরিবর্তনের বিষয়টি প্রকাশ্যে জানান সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। জনগণ স্বৈরাচারের পতন ঘটিয়ে প্রাথমিক বিজয় অর্জন করেছে। তবে এখন এ অর্জনকে টিকিয়ে রাখতে হবে।
হাসিনার পতন শুরু হয় ১৪ জুলাই চাকরি নিয়ে তার একটি মন্তব্যকে কেন্দ্র করে। ১৪ জুলাই যে আন্দোলন শুরু হয়েছিল, তার সমাপ্তি ঘটে ৫ আগস্ট। মাত্র ২২ দিনের আন্দোলনে পতন ঘটে সন্ত্রাসের মাধ্যমে শাসনকারী সরকারের। কী কঠোর শাসনই না ছিল। বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর মতো বিরোধী দলগুলোকে প্রায় নেতৃত্বশূন্য করে ফেলা হয়েছিল। বিরোধী দলগুলোর শীর্ষ নেতারা হয় কারাগারে ছিলেন, নয়তো নির্বাসিত ছিলেন। নানা ধরনের অভিযোগ এনে তাদের দমন করা হচ্ছিল। গত কয়েক বছর ধরেই হাসিনার শাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জমা হচ্ছিল।
শ্রাবণ বিপ্লবের ভূরাজনীতি
ডায়ামি
গত ৫ আগস্ট হওয়া বাংলাদেশের রাজনৈতিক বিপ্লবটি বিশ্ব রাজনীতির জন্য একটি টার্নিং পয়েন্ট। বিশ্বের অষ্টম জনবহুল দেশের এ বিপ্লবটি ছিল স্বৈরতান্ত্রিক রাজনীতিকে সরিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম। জুলাই-আগস্ট বাংলাদেশের শ্রাবণ মাস। এ কারণে একে ‘শ্রাবণ বিপ্লব’ হিসাবেও আখ্যায়িত করা হচ্ছে।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে পরিবর্তনটির দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনীতিতেও প্রভাব রয়েছে। ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের সীমান্ত রয়েছে। ভারত ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যকার মধ্যপথে অবস্থিত হওয়ায় এ দুটি অঞ্চলের মধ্যে যে কোনো সংযোগ অবশ্যই বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে যেতে হবে। বঙ্গোপসাগরের ১২টি বন্দরের তিনটিই বাংলাদেশের উপকূলে অবস্থিত। ফলে দেশটি একটি কৌশলগত কেন্দ্র হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেছে।
তা ছাড়া চীন ও ভারতের মধ্যকার আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার বলয়েও রয়েছে বাংলাদেশ। ভারত মহাসাগরে প্রভাব বিস্তার নিয়ে ভারত ও চীন মুখোমুখি অবস্থান করছে। আবার যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের মাখামাখিও ভালো চোখে দেখছে না চীন। এ প্রেক্ষাপটেই শ্রাবণ বিপ্লব দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে।
ভারত মনে করছে, হাসিনার পতনে ভারতের নিরাপত্তার জন্য একটি বড় ধরনের বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়েছে। হাসিনা তার ক্ষমতায় থাকার পুরো সময়টি ভারতের কাছ থেকে পূর্ণ সমর্থন পেয়েছেন। এর বিনিময়ও তিনি দিয়েছেন। তার অবর্তমানে পরিস্থিতি ভিন্ন হয়ে গেছে।
বিশেষ করে এখন চীন কৌশলগতভাবে লাভবান হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। হাসিনার পদত্যাগের পর চীনের জাতীয়তাবাদী পত্রিকা গ্লোবাল টাইমস জানায়, চীন আশা করে যে, সামাজিক স্থিতিশীলতা শিগ্গির পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে।
বাংলাদেশের বিপ্লব এবং স্বৈরাচার অপসারণের মডেল
পিজম
স্বৈরাচার হাসিনার পদত্যাগের পর গঠিত ইউনূস সরকারের সামনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য হলো নির্বাচন কমিশন, বিচার বিভাগ, পুলিশসহ গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কার। তবে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য সংবিধানেরও সংস্কার প্রয়োজন।
স্বল্পমেয়াদে বাংলাদেশের ঘটনাপ্রবাহ ভারতের জন্য সবচেয়ে ক্ষতিকর বিবেচিত হয়েছে। হাসিনার বিদায়ের মাধ্যমে ভারত তার সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্রকে হারিয়েছে। হাসিনার প্রতি দীর্ঘদিন ধরে ভারতের সমর্থন এবং প্রশ্রয় প্রদানের ফলে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কে টানাপোড়েনের সৃষ্টি হয়েছে। চীনও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশের বৃহৎ বাণিজ্যিক অংশীদারে পরিণত হয়েছিল। চীনও হাসিনার বিদায়ে উপকৃত হতে পারে। নতুন প্রেক্ষাপটে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশ নিরাপত্তা সহযোগিতা সম্প্রসারণ করতে পারে। তবে চীনের সঙ্গে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করা হলে পাশ্চাত্যের দেশগুলো বিরূপ হতে পারে। হাসিনার পতনকে স্বাগত জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপিয়ান দেশগুলো। বাংলাদেশের মোট রপ্তানির প্রায় অর্ধেক যায় ইইউভুক্ত দেশগুলোতে। ফলে এসব দেশের সঙ্গে সম্পর্ক মজবুত রাখা বাংলাদেশের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ।
তবে বাংলাদেশ এখন স্বৈরাচার অপসারণের মডেল হিসাবে গণ্য হতে পারে। তবে এ মডেলটি ছড়িয়ে পড়ার জন্য ইউনূস সরকারকে অনেক কিছু করতে হবে। অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি ঘটাতে হবে, শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করতে হবে, সত্যিকারের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করতে হবে।
বাংলাদেশের বিপ্লব এখনো অসমাপ্ত
ইউনাইটেড স্টেটস ইনস্টিটিউট অব পিস ম্যাগাজিন
ছাত্রদের প্রতিবাদের মধ্য দিয়ে যে বিপ্লবের সূচনা হয়েছিল বাংলাদেশে সেটা এখনো অসমাপ্ত রয়ে গেছে। অন্তর্বর্তী সরকারকে এ বিপ্লব সমাপ্ত করতে হবে। ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকার পর ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতন ছিল আকস্মিক এবং অভাবনীয়। তবে এটি বাংলাদেশের জন্য নতুন যুগের সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিয়েছে।
বাংলাদেশ এখন বিপ্লবী সময় অতিক্রম করছে, বিপ্লব বাস্তবায়িত হয়নি। ছাত্ররা যেসব লক্ষ্য নিয়ে কাজ শুরু করেছিল, সেগুলো বাস্তবায়নের মধ্যেই রয়েছে বিপ্লব টিকে থাকার মন্ত্র।
গত ১৫ বছরের নির্যাতন, নৃশংসতা ও দুর্নীতির বিচার হতে হবে। প্রধান প্রধান রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে নতুন করে গড়ে তুলতে হবে। রাজনৈতিক সংস্কৃতিকে অবশ্যই সমঝোতা ও সমন্বয়ের দিকে পরিচালিত করতে হবে। রাজনৈতিক জটিলতা ছাড়াও অর্থনৈতিক সমস্যাগুলোর সমাধানও দরকার।
পথটা মসৃণ নয়। অন্তর্বর্তী সরকারকে নানা ধরনের বাধার মুখে পড়তে হবে। ছাত্রদের কাছ থেকে চাপ, রাজনৈতিক দলগুলোর বিরোধিতা, আমলাতান্ত্রিক লালফিতাসহ নানা সমস্যা আসবে।
সরকার বৈধতার জন্য অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অবশ্যই দরকার। তবে তা যদি নির্দিষ্ট সময়ের আগে হয়, তবে প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক এলিটরা সুষ্ঠু পরিবর্তনের ব্যাপারে কম আগ্রহী থাকে। অচলাবস্থা এবং কায়েমি স্বার্থ যদি সংস্কারের পথকে রুখে দেয়, তবে বাংলাদেশ ভবিষ্যতে অস্থিতিশীল ভবিষ্যতের দিকে নেমে যেতে পারে।
অন্যান্য দেশের ভূমিকাও আমলে নিতে হবে। ভারত, চীন, যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশ নানাভাবেই বাংলাদেশে প্রভাব বিস্তার করেছিল এবং ভবিষ্যতেও করবে। ভূরাজনীতি এবং আরও অনেক ইস্যুতে তাদের বক্তব্য থাকে। তবে চূড়ান্ত বিচারে বাংলাদেশিরাই তাদের নিজস্ব রাজনৈতিক ভবিষ্যতের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে। অন্যরা সহায়তা করতে পারে।
জেন জির বিপ্লব
সিএনএন
বাংলাদেশে যে পরিবর্তন হয়েছে, সেটাকে জেন জি বিপ্লব হিসাবে অভিহিত করা হচ্ছে। স্বৈরতন্ত্রের অবসান ঘটিয়ে এ বিপ্লব নতুন যুগের সূচনা ঘটিয়েছে।
হাসিনার পতনে বাংলাদেশে উল্লাসের সৃষ্টি হয়েছে। সমালোচক ও অধিকার গ্রুপগুলো বলছে, হাসিনার ১৫ বছরের দুঃশাসন বিদায় নেওয়ার ফলে বিরোধী মত দমনে কঠোরতা এবং নাগরিক স্বাধীনতা হরণ অবসান ঘটেছে।
মানবাধিকার সংস্থাগুলো হাসিনাকে একদলীয় শাসনব্যবস্থার দিকে না যাওয়ার ব্যাপারে অনেক আগে থেকেই সতর্ক করে দিচ্ছিল। রাজনৈতিক সহিংসতা, ভোটারদের ভীতি প্রদর্শন, মিডিয়াকে হয়রানি করা, বিরোধী নেতাদের নির্যাতনের বিষয়গুলো সামনে এনেছিল।
অধিকার গ্রুপগুলো বলছিল, অনলাইনে মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে খর্ব করতে, সাংবাদিকদের গ্রেফতার করতে, নির্যাতন চালাতে সরকার সাইবার সিকিউরিটি আইন ব্যবহার করছিল।
হাসিনা ইতঃপূর্বে অনেক বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণ করতে পারলেও এবারে তার পতন ছিল আকস্মিক ও অপ্রত্যাশিত। আর এ পতনে নেতৃত্ব দিয়েছে তরুণরা। কাজেই ‘এটাকে জেন জির নেতৃত্বে হওয়া প্রথম সফল বিপ্লব হিসাবে’ অভিহিত করা যায়। আর ‘জেন জি সবকিছুকেই সম্ভব করেছে। তারাই বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ, তারাই আরও সুন্দর ভবিষ্যৎ সৃষ্টি করতে পারে।’
লেখক : সাংবাদিক