একই পথে আর যেন কেউ পা না বাড়ায়: জামায়াত আমির
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ৩১ জানুয়ারি ২০২৫, ০৬:১৮ পিএম
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘হঠকারিতা, ফ্যাসিজম দুনিয়া ও আখিরাতে কারো জন্য কল্যাণকর নয়।
তিনি বলেন, ‘একটি সময় আপনজনকে বিদায় দিতে পারব না, বিদায় নিতে পারব না, সবার সঙ্গে দোয়াও করতে পারব না- এমন ভয়াবহ পরিস্থিতি করা হয়েছিল। এমন পরিবেশ যেন আর ফিরে না আসে।’
জামায়াত আমির বলেন, ‘আমি দোয়া করি, সেই দুঃস্বপ্নের সময়গুলো থেকে গোটা জাতি যেন শিক্ষা নিতে পারি। একই পথে আর যেন কেউ পা না বাড়ায়।’
শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) সকালে রাজধানীর মগবাজারের আল ফালাহ মিলনায়তনে সাবেক এমপি ও জামায়াতের কেন্দ্রীয় মহিলা বিভাগের সাবেক সেক্রেটারি হাফেজা আসমা খাতুনের স্মরণসভা এবং দোয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জামায়াত আমির বলেন, ‘আল্লাহ উত্তরাধিকার সূত্রে ও বৈবাহিক সূত্রে দুটি ধারা সৃষ্টি করেছেন। এর বাইরে রুহানিয়াতের আরেকটি ধারা পয়দা করেছেন। তবে রক্তের ঊর্ধ্বে ইমানের সম্পর্ক।’
তিনি বলেন, ‘যারা আল্লাহ তায়ালার ইচ্ছাকে সম্মান করবে না তাগুত ও নফসের তাড়নায় চলবে, তাদের জেনে রাখা উচিত আল্লাহ তায়ালা অত্যন্ত কঠিন।’
হাফেজা আসমা খাতুনের স্মৃতিচারণ করে জামায়াত আমির বলেন, হাফেজা আসমা খাতুন আন্তরিক ও নিষ্ঠাবান ছিলেন। তিনি যা বিশ্বাস করেছেন তাই বলেছেন ও করেছেন। তিনি যে যুগে সংগঠনের হাল ধরেছিলেন সে যুগে তিনিই হাল ধরার মতো ছিলেন। মাত্র দশজনকে নিয়ে কেন্দ্রীয় সংগঠনের কাজ শুরু করেছিলেন তিনি। এখন এই সংখ্যা ৪৩ হাজার। আমার বিশ্বাস এমন কেউ নেই তাকে শ্রদ্ধা করেন না।’
তিনি বলেন, ‘উত্তম কর্ম মানুষকে স্মরণীয় করে রাখে। আমলদার মানুষ যখন কারো জন্য দোয়া করে, অল্পকথা বললেও সেটা হৃদয়ের ভেতরে পৌঁছে দেন আল্লাহ। আবার চতুর মানুষ যখন অনেক পেঁচিয়ে-গুছিয়ে কথা বলে, তখন তা আসর ফেলে না। তাদের আমলের আসর এমন, যা প্রতিফলিত হতো এবং মানুষ উপকৃত (বেনিফিটেড) হতো।’
শফিকুর রহমান বলেন, ‘তিনি (হাফেজা আসমা খাতুন) একজন আদর্শ মা ছিলেন। একজন ভাগ্যবতী স্ত্রী ছিলেন। তিনি আদর্শ বোন ছিলেন এবং লাখ লাখ মানুষের আদর্শ ছিলেন। তার পরিবারের যে যেখানে আছেন, সবাই দা’ঈ ইলাল্লাহ হিসেবে আছেন- এটা বিরল।’
তিনি বলেন, ‘আজকের কথাগুলো শুধু সংগঠনের জন্য নয়। এ কথাগুলো উপস্থিত সাংবাদিকসহ গোটা জাতির জন্য, মানব জাতির জন্য। এরকম মানুষদের পরিবারগুলোর একেকটি জান্নাতের টুকরা।’
পরিবারটি মজলুম ছিলেন উল্লেখ করে জামায়াত আমির বলেন, ‘মারা যাওয়ার সময় তার সন্তানদের দেশে আশার সুযোগ ও পরিস্থিতি ছিল না। তারা বাবা ও মাকে দেখার সুযোগ পাননি।’ যিনি তাকে দ্বীন শিখিয়েছেন, মেন্টর ছিলেন- এই শহরে থেকেও পরিস্থিতির কারণে তার জানাজায় শরিক হতে পারেননি বলেও ভারাক্রান্ত হয়ে আফসোস করেন জামায়াত আমির।
প্রয়াত হাফেজা আসমা খাতুনকে কুরআনের দা’ঈ হিসেবে কবুল করে তার মাগফিরাতের জন্য দোয়া কামনা করেন শফিকুর রহমান।
হাফেজা আসমা খাতুনের বড় ছেলে নিয়াজ মাখদুমের সভাপতিত্বে এবং ছোট ছেলে সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সাইফুল্লাহ মানছুরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য সাইফুল আলম খান মিলন, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন সরকার, ড. মামুন আল আযমী, হেমায়েত হোসেন, ব্যারিস্টার নাজিব মোমেন প্রমুখ।