Logo
Logo
×

রাজনীতি

‘সাঈদী হত্যাকাণ্ডে’ আ. লীগ হাসিনা ও ভারত সমানভাবে দায়ী: মাসুদ সাঈদী

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৭ জানুয়ারি ২০২৫, ০৪:৪৩ পিএম

‘সাঈদী হত্যাকাণ্ডে’ আ. লীগ হাসিনা ও ভারত সমানভাবে দায়ী: মাসুদ সাঈদী

ছবি: সংগৃহীত।

জামায়াতের প্রয়াত নায়েবে আমির আল্লামা দেলাওয়ার হোসেন সাঈদীর ছেলে মাসুদ বিন সাঈদী বলেছেন, আল্লামা সাঈদীসহ জামায়াতে নিরীহ নেতারা- যাদেরকে হাসিনা পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছেন। এই হত্যাকাণ্ডে অবশ্যই আওয়ামী লীগ, শেখ হাসিনা এবং ভারত সমানভাবে দায়ী। ভারতের প্রত্যক্ষ মদদে এই বিচার প্রক্রিয়া চলেছে।

সম্প্রতি দৈনিক যুগান্তরকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ফ্যাসিস্ট হাসিনার শাসনামলে হওয়া নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে এসব কথা বলেন মাসুদ সাঈদী।

ওই সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, আমাদের সম্মানিত পিতাকে পরিকল্পিতভাবে দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছিল। শুধু আটকে রেখেই ক্ষান্ত হয়নি হাসিনা। পরিকল্পিতভাবে হত্যাও করেছে আমাদের চোখে সামনে। আমার ভাইকেও হত্যা করা হয়েছে বলে আমি মনে করি। 

বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের সমালোচনা করে মাসুদ সাঈদী বলেছেন, খুনি হাসিনার শাসনামলে আমাদের গোটা পরিবারটাই বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল। ২০০৯ সাল থেকে শুরু করে আমাদের ব্যবসায়িক, সামাজিক, পারিবারিকসহ গোটা জীবনটাই হাসিনা দুর্বিষহ করে তুলে ছিল।

তিনি বলেন, হাসিনার শাসনামলে আমরা ছোটখাটো ব্যবসা-বাণিজ্য যা করতাম সেগুলোকেও কেড়ে নেওয়া হয়েছে। আমি এবং আমার বড় ভাই শামীম সাঈদীসহ আমরা প্রত্যেকেই মামলার আসামি। আমাদের বিরুদ্ধে ৬০টিরও বেশি মামলা করা হয়েছে। বিস্ফোরণ, গাড়ি ভাঙচুর, সরকারি কাজে বাঁধা দেওয়াসহ নানা ইস্যুকে সামনে এনে মামলা দেওয়া হয়েছে। শুধু মামলা দিয়ে ক্ষান্ত হননি তারা, আমাদের প্রায় প্রত্যেককে জেল খাটতে হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ২০২৩ সালের ১৪ আগস্ট, আমার বাবার শাহাদাতের পর পুলিশ পৃথিবীর ইতিহাসে একটি ন্যাক্কারজন ঘটনা ঘটিয়ে ছিল ঢাকার পিজি হাসপাতালে। তারা হাসপাতাল প্রাঙ্গণে গুলি, টিয়ারসেল, সাউন্ড গ্রেনেড, লাঠিচার্জসহ এমন কোনো ঘৃণ্য কাজ নাই যা তারা করে নাই সেদিন। কিন্তু রাত শেষে একটি মামলা করল তারা। সবচেয়ে বড় কষ্টের ব্যাপার হল- সেই মামলায় প্রধান আসামি করা হলো আমাকে।

মাসুদ সাঈদী বলেন, পিতা মারা গেল আমার, সারারাত কষ্ট করলাম আমি; জনগণকে শান্ত রাখার জন্য। একটা পর্যায় আমি অজ্ঞান হয়ে গেলাম।আর সেই আমাকেই প্রধান আসামি করে মামলা করা হলো। শেখ হাসিনা যে একজন মানসিক বিকারগ্রস্ত একজন নারী, সেটা এই ঘটনার দ্বারা প্রমাণিত হলো।  

আপনার বাবাসহ জামায়াতে ইসলামীর বাকি নেতারা, যাদেরকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে- তারা কি কোনো একটা দেশের ইঙ্গিতে ব্যক্তি শেখ হাসিনার আক্রোশের শিকার হয়েছিল বলে মনে করেন? এমন প্রশ্নের জবাবে মাসুদ সাঈদী বলেন, আল্লামা সাঈদীসহ জামায়াতে নিরীহ নেতারা- যাদেরকে হাসিনা পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছেন। এই হত্যাকাণ্ডে অবশ্যই আওয়ামী লীগ, শেখ হাসিনা এবং ভারত সমানভাবে দায়ী। ভারতের প্রত্যক্ষ মদদে এই বিচার প্রক্রিয়া চলেছে।

তিনি জানান, আল্লামা সাঈদীকে হত্যা করার মাত্র কয়েকদিন পূর্বে ২০২৩ সালের ৫ আগষ্ট, আওয়ামী লীগের ৫ সদস্যের একটি টিম ভারতে গিয়েছিল। সেই টিমের নেতৃত্ব দিয়েছিল তৎকালীন মন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক। এই টিমের বাকি সদস্যরা হল- ১. হাছান মাহমুদ ২. আরমা দত্ত (সাবেক সংসদ সদস্য) ৩. মেরিনা জামান (আওয়ামী লীগের নির্বাহী কমিটির সদস্য) এবং আরও একজন।

মাসুদ সাঈদী বলেন, আওয়ামী লীগের সেই টিমটি ভারত থেকে দেশে ফিরে এসেছিল ৯ আগষ্ট। দেশে ফেরার পর ১০ কিংবা ১১ আগষ্ট, একটি সংবাদ সম্মেলন করেছিলেন আবদুর রাজ্জাক ও হাছান মাহমুদ। সেদিন আবদুর রাজ্জাক অপ্রাসঙ্গিকভাবে বলেছিলেন, ভারত জামায়েতের ব্যাপারে আমাদের কিছু বলেনি। অথবা জামায়াতকে শায়েস্তা করার ব্যাপারেও তারা আমাদের কিছু বলেনি। আর এই সংবাদ সম্মেলনের পর ১৪ আগষ্ট আল্লামা সাঈদীকে হত্যা করা হয়েছিল। এসব ঘটনা থেকে স্পষ্টভাবে বুঝা যায় আল্লামা সাঈদীকে কাদের নির্দেশে হত্যা করা হয়েছে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম