অন্তর্বর্তী সরকারকে জামায়াত সেক্রেটারি
দ্রুত সংস্কার শেষ করে নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৭:১০ পিএম
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, ২৪-এর গণঅভ্যুত্থান কোনো সংবিধান মেনে হয়নি। উপদেষ্টা পরিষদও সংবিধান মেনে হয়নি। সুতরাং সংবিধানের অজুহাত দিয়ে কোনো সংস্কার কাজ যেন আটকে না থাকে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ঐকমত্যের ভিত্তিকে সংস্কার কাজ সম্পন্ন করতে হবে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, অবিলম্বে বিদ্যমান সংকট নিরসন করতে হবে। দ্রুত সংস্কার কাজ শেষ করে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।
শুক্রবার সকালে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের বিশেষ সাধারণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ফেডারেশনের সহসভাপতি অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খানের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আতিকুর রহমানের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন- জামায়াতের সিনিয়র নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, নির্বাহী পরিষদ সদস্য আব্দুর রব, সহসভাপতি গোলাম রব্বানী, লস্কর মো. তসলিম, মাস্টার শফিকুল আলম, কবির আহমদ, মজিবুর রহমান ভূঁইয়া, মনসুর রহমান।
গোলাম পাওয়ার বলেন, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন দেশের প্রচলিত শ্রমিক সংগঠন থেকে ব্যতিক্রম সংগঠন। দেশে বহু শ্রমিক সংগঠন আছে। যারা এদেশে মানবরচিত মতবাদ, সমাজতন্ত্র, পুঁজিবাদ, ধর্মরিপেক্ষতা ও পশ্চিমা সভ্যতা-বিধিবিধানের ভিত্তিতে রাজনীতি করত। তারাই এদেশে প্রথম ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলন গড়ে তুলে। তারা পরিকল্পিতভাবে বিভিন্ন জুটমিল, কলকারখানায় বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজের শিক্ষার্থীদের পাঠিয়ে ট্রেড ইউনিয়ন গড়ে তুলে। যাদের টার্গেট ছিল এদেশ থেকে ইসলামকে উৎখাত করে নাস্তিক্যবাদ প্রতিষ্ঠা করা। স্বল্প শিক্ষিত মানুষদের ভুল বুঝিয়ে সমাজতন্ত্রের আদলে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করার জন্য তারা উদগ্রীব ছিল।
অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, ৫ আগস্ট এদেশে গণঅভ্যুত্থান হয়েছে। গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র, শিক্ষক, শ্রমিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষরা অংশ নিয়েছে। শত শত ছাত্র শ্রমিক জনতা জীবন দিয়েছে। তাদের রক্তের গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরাচার সরকার পালিয়ে গেছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ ধর্মনিরপেক্ষ, সমাজতন্ত্র, জাতীয়বাদের সরকার দেখেছে। কিন্তু এসব সরকার মানুষকে সুখ-শান্তি দিতে পারেনি। মানুষ স্বাধীনতা অর্জন করে সুফল পাওয়ার আশায়। আমরা বিগত যে স্বাধীনতা অর্জন করেছি তা সত্যিকার অর্থে মানুষকে সুখ-শান্তি দিতে পারেনি। মানুষ মুক্ত আকাশ ও স্বাধীনভাবে চলাফেরার অধিকার পেয়েছে। আগে যেসব অধিকার থেকে বঞ্চিত ছিল সে অধিকার ফিরে পেয়েছে। কিন্তু এখনো অন্যায় প্রতিরোধ করে ন্যায় প্রতিষ্ঠা সম্ভব হয়নি। জালেম পালিয়েছে কিন্তু জুলুম পালায়নি। জুলুমের অত্যাচারে মানুষ বিভিন্ন জায়গায় এখনো কষ্ট পাচ্ছে। আজকে দেশ একটি সংকটের মধ্যে চলছে। এখানে রাষ্ট্রপতি কে হবেন এটা বড় প্রশ্ন নয়। আজকে সংকট দূর করার জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। ১৮ কোটি মানুষের অর্জিত স্বাধীনতা কেউ যাতে আবার কেড়ে নিতে না পারে সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। শ্রমিক কল্যাণের নেতাকর্মীদের টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া পর্যন্ত প্রতিটি জেলা-উপজেলায় পাহারা দিতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খান বলেন, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন এদেশে একদল আদর্শ মানুষ তৈরি করতে চায়। যারা অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করবে। কিন্তু সত্যের পক্ষে থাকবে আপসহীন। আমরা আর কোনো চোরদের জন্য এই দেশের ভূমি ছেড়ে দেব না। আর কোনো চোরদের হাতে এদেশ ছেড়ে দেওয়া হবে না।