
প্রিন্ট: ০১ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:৪০ এএম
জাকাতের জন্য আলাদা করা টাকা প্রয়োজনে খরচ করা যাবে?

ইসলাম ও জীবন ডেস্ক
প্রকাশ: ২৫ মার্চ ২০২৫, ০৩:৩৫ পিএম

আরও পড়ুন
ধনী লোকদের ধনসম্পদের ৪০ ভাগের এক অংশ অসহায় দরিদ্রদের মধ্যে জাকাত হিসাবে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে ইসলামে। জাকাত দেওয়ার জন্য নির্দিষ্ট কোনো সময়ের বাধ্যবাধকতা না-থাকলেও রমজান মাসই জাকাত আদায়ের সর্বোত্তম সময়। রমজান মাসে যেকোনো ধরনের দান-সাদকা করলে অন্য সময়ের চেয়ে ৭০ গুণ বেশি নেকি হাসিল হয়।
ইসলামে সমাজের দরিদ্র জনসাধারণের আর্থিক প্রয়োজনের ব্যাপকতার প্রতি লক্ষ রেখে তৃতীয় হিজরিতে ধনীদের ওপর জাকাত ফরজ করা হয়েছে। সমাজে ধনসম্পদের আবর্তন ও বিস্তার সাধন এবং দারিদ্র্য দূরীকরণের মহান উদ্দেশ্যেই জাকাতব্যবস্থার প্রবর্তন করা হয়। দারিদ্র্য বিমোচন ও বেকার সমস্যা সমাধানই জাকাতভিত্তিক অর্থব্যবস্থার প্রধান বৈশিষ্ট্য।
পবিত্র কুরআনে বর্ণিত জাকাত বণ্টনের খাতগুলোর প্রতি লক্ষ করলে এ কথা সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে। আল্লাহ বলেন, ‘সাদকা বা জাকাত তো কেবল নিঃস্ব, অভাবগ্রস্ত, জাকাত আদায়কারী কর্মচারীদের জন্য, যাদের চিত্তাকর্ষণ করা হয় তাদের জন্য, দাসমুক্তির জন্য, ঋণ ভারাক্রান্ত ব্যক্তিদের, আল্লাহর পথে সংগ্রামকারী ও মুসাফিরদের জন্য; এটা আল্লাহর বিধান।’ (সুরা আত-তাওবা, আয়াত ৬০)।
জাকাতযোগ্য সম্পদের চল্লিশ ভাগের এক ভাগ কেউ যদি জাকাতের জন্য আলাদা করে রেখে দেয় কিন্তু পরবর্তীতে খরচ করার প্রয়োজন দেখা দেয় তাহলে তার করণীয় কী?
এ বিষয়ে ইসলামী আইনশাস্ত্রবিদেরা বলেন—শুধুমাত্র জাকাতের নিয়তে টাকা আলাদা করার দ্বারাই জাকাত আদায় হয়ে যায় না। সেই টাকা নিজের মালিকানা থেকে বেরিয়েও যায় না। সেই টাকার মালিকানা ব্যক্তিরই থাকে। সুতরাং তা প্রয়োজনে নিজের কাজে ব্যবহার করতে পারবে এবং পরে অন্য টাকা দিয়ে জাকাত আদায় করার সুযোগ রয়েছে। (রদ্দুল মুহতার, ৩/ ১৮৯)
অবশ্য কেউ যদি জাকাতের টাকা অন্যান্য টাকা থেকে আলাদা করার সময় জাকাতের নিয়ত করে নেয়। এরপর সেই টাকা থেকে গরীবদের দিতে থাকে তবে ওই নিয়তও যথেষ্ট হবে এবং জাকাত আদায় হয়ে যাবে।
ইসলামি শরিয়ত মতে কার কার ওপর জাকাত ফরজ?
জাকাতের নেসাব হলো, সাড়ে সাত ভরি স্বর্ণ বা সাড়ে বায়ান্ন ভরি রুপা বা সমমূল্যের নগদ অর্থ, বন্ড, সঞ্চয়পত্র, শেয়ার, ব্যাংকে জমাকৃত যে কোনো ধরনের টাকা, ফিক্সড ডিপোজিট হলে মূল জমা টাকা অথবা সমমূল্যের ব্যবসার পণ্য থাকলে জাকাত আদায় করতে হবে।
স্বাধীন, প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থ ও বুদ্ধিসম্পন্ন মুসলিম নর-নারী যার কাছে ঋণ, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ও প্রয়োজনীয় খাদ্য-বস্ত্রের অতিরিক্ত সোনা, রুপা, নগদ টাকা, প্রাইজবন্ড, সঞ্চয়পত্র, ডিপিএস, শেয়ার ও ব্যবসায়িক সম্পত্তির কোনো একটি বা সবকটি রয়েছে, যার সমষ্টির মূল্য উল্লিখিত নেসাব পরিমাণ হয়, তিনিই সম্পদশালী। এ পরিমাণ সম্পদ এক বছর স্থায়ী হলে বা বছরের শুরু ও শেষে থাকলে বছর শেষে জাকাত দিতে হবে।