রোজা রাখলে ‘ইনসুলিন রেসিস্টেন্স’ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব?

যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৭ মার্চ ২০২৫, ০৯:১২ পিএম

যখন শরীরের বিভিন্ন কোষ ইনসুলিনকে ব্যবহার করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে বা ইনসুলিনের বিরুদ্ধে শরীরের অঙ্গগুলো প্রতিরোধ গড়ে তোলে, তাকেই ইনসুলিন রেসিস্টেন্স বলা হয়। এতে শরীরে গ্লুকোজ বা ব্লাড সুগার বেড়ে যায়। টাইপ টু ডায়াবেটিস, স্থূলতা, উচ্চ রক্তচাপের মতো জটিলতা দেখা দিতে পারে।
‘ইনসুলিন রেসিস্টেন্স’ একটি জটিল প্রক্রিয়া, যা তখন ঘটে যখন আমাদের লিভার এবং পেশিগুলো ইনসুলিন ব্যবহার করার পরিবর্তে এটি প্রতিরোধ করতে শুরু করে।
এ পরিস্থিতির কারণে অগ্নাশয় বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে এবং আমাদের রক্তে থাকা গ্লুকোজের অতিরিক্ত পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য অতিরিক্ত ইনসুলিন তৈরি এবং নিঃসরণ করতে থাকে। শরীরের এ অবস্থাকে ‘হাইপার ইনসুলিনিমিয়া’ বলা হয়।
যুক্তরাজ্যের জাতীযয় স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের একজন কনসালটেন্ট ফিজিশিয়ান ফ্র্যাঙ্কলিন জোসেফ বলেন, ইনসুলিন রেসিস্টেন্স একটি জটিল পরিস্থিতি যার সঙ্গে আমাদের জীবনযাপন, পরিবেশগত কারণ এবং জেনেটিক্স সম্পর্কিত।
রমজান মাসে মুসলমান সম্প্রদায়ের অনেকে নিয়মিত রোজা রাখেন। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ হল, যারা কোনো অসুস্থতা বা রোগে ভুগছেন, তাদের রোজা রাখার আগে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত।
ইউনিভার্সিটি হাসপাতাল বার্মিংহামের সঙ্গে যুক্ত ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ওয়াসিম হানিফ বলেন, বিশেষ করে যারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত, তাদের রোজা রাখার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত।
তার মতে, কিছু চিকিৎসা গবেষণায় দেখা গেছে যে রোজা রাখা ইনসুলিন সংবেদনশীলতা (ইনসুলিনের প্রতি শরীরের প্রতিক্রিয়া) বাড়িয়ে দিতে পারে, বিশেষ করে যারা টাইপ টু ডায়াবেটিস বা ইনসুলিন রেসিস্টেন্সে আক্রান্ত।
এছাড়া রমজান মাসে অনেকের ওজন কমতে পারে বা শরীরের অতিরিক্ত চর্বি কমে যেতে পারে।
এই পরিবর্তন ইনসুলিনের প্রতি আমাদের শরীরের সংবেদনশীলতা এবং মেটাবলিজম অর্থাৎ হজমশক্তিতে প্রভাব ফেলতে পারে, বিশেষত যারা স্থূলকায় (মোটা) তাদের ক্ষেত্রে।
রমজানে রোজা রাখার ক্ষেত্রে, বিশেষ করে ডায়াবেটিস রোগীদের রোজা রাখার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যের ওপর নজর রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য তাদের উচিত হবে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা, যাতে তারা সুস্থতার সঙ্গে এবং নিরাপদে রোজা রাখতে পারেন।
ওমানে অবস্থানরত পুষ্টিবিদ রিম আল-আবদুল্লাহ বলেন, আপনি যদি রমজান মাসে মাঝে মাঝে রোজা রাখেন অথবা নিয়মিত রোজা রাখেন, তাহলে স্বাস্থ্য ভালো রাখতে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস অনুসরণ করতে হবে।