Logo
Logo
×

প্রথম পাতা

মাগফিরাতের দশ দিন

পাঁচ পুরস্কার রমজানের

Icon

মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী

প্রকাশ: ১৫ মার্চ ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

পাঁচ পুরস্কার রমজানের

ছবি: যুগান্তর

আল্লাহতায়ালার দরবারে অগণিত শুকরিয়া আদায় করছি যিনি আমাদের পবিত্র রমজানের ১৪তম দিনে উপনীত করেছেন। সিয়াম, কিয়াম, সালাত, জাকাত তথা ইবাদতের তাওফিকদাতা একমাত্র সর্বশক্তিমান আল্লাহ। তিনি যাকে তাওফিক দান করেন শুধু সে ব্যক্তিই তার বন্দেগির সুযোগ পায়। পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, আর স্মরণ করুন, যখন তোমাদের রব ঘোষণা করেন, তোমরা কৃতজ্ঞ হলে অবশ্যই আমি তোমাদেরকে আরও বেশি দেব আর অকৃতজ্ঞ হলে নিশ্চয় আমার শাস্তি তো কঠোর। (সূরা ইবরাহিম-৭)। এজন্য প্রত্যেক রোজাদারের উচিত, আল্লাহর শাহি দরবারে বিনয়াবনত হয়ে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করা। তাহলে তিনি আমাদের ইবাদতের সুযোগ বৃদ্ধি করে দেবেন। তার অফুরান নিয়ামত দিয়ে ধন্য করবেন। রমজানের রহমত, মাগফিরাত আর নাজাতের পুরস্কারপ্রাপ্তদের তালিকায় আমাদেরও আন্তর্ভুক্ত করে নেবেন। রমজান আল্লাহতায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনের মাস। রোজা রাখতে হবে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য। কখনো কখনো রোজাদার বান্দা ক্ষুৎপিপাসায় কাতর হয়ে পড়ে। সব রকম খাদ্য ও পানীয় গ্রহণের সুযোগ ও সাধ্য থাকা সত্ত্বেও শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য এ কষ্টেকে সে তুচ্ছ মনে করে। এ কারণে তাকে এমন পুরস্কারে ভূষিত করা হবে যা হবে তার ক্ষুৎপিপাসার যথার্থ বিনিময়। নবি করিম (সা.) বলেছেন, ‘রমজান মাসে আমার উম্মতকে পাঁচটি বিশেষ সুবিধা দেওয়া হয়েছে, যা আমার আগের কোনো নবিকে দেওয়া হয়নি। ১. রমজানের প্রথম রাতে আল্লাহ তাদের দিকে (রহমতের) দৃষ্টি দেন, আর আল্লাহ যার দিকে দৃষ্টি দেন, তাকে কখনো শাস্তি দেন না। ২. সন্ধ্যার সময় তাদের মুখ থেকে যে গন্ধ বের হয়, তা আল্লাহর কাছে মেশকের সুগন্ধির চেয়েও উত্তম। ৩. প্রত্যেক দিনে ও রাতে ফেরেশতারা রোজাদারদের জন্য দোয়া করেন। ৪. আল্লাহতায়ালা তার বেহেশতকে বলেন, ‘তুমি আমার বান্দার জন্য সুসজ্জিত ও প্রস্তুত হও! আমার বান্দারা অচিরেই দুনিয়ার দুঃখ-কষ্ট থেকে অব্যাহতি পেয়ে আমার বাড়িতে ও আমার সম্মানজনক আশ্রয়ে এসে বিশ্রাম নেবে।’ ৫. রমজানের শেষ রাতে আল্লাহ তাদের সব গুনাহ মাফ করে দেন। এক ব্যক্তি বলল, ‘এটা কি লাইলাতুল কদর?’ রাসুল (সা.) বললেন, ‘না, তুমি দেখনি শ্রমিকেরা যখন কাজ শেষ করে, তখনই পারিশ্রমিক পায়?’ (বায়হাকি)। এসব ফজিলত ও বরকত লাভ করতে হলে রোজা রাখতে হবে একমাত্র আল্লাহর নির্দেশ পালনের জন্য ও তারই সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে। যদি বান্দা সমাজ ও পরিবেশের চাপে পড়ে সিয়াম পালন করে, আল্লাহর আনুগত্য প্রকাশ ও তাঁর সন্তুষ্টির পরিবর্তে লোকলজ্জা থেকে রেহাই পাওয়া বা ধার্মিকরূপে প্রশংসা কুড়ানোই যদি হয় তার সিয়াম পালনের উদ্দেশ্য, তবে সিয়ামের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যে সে সফল হতে পারবে না। তাই রাসুল (সা.) সুস্পষ্ট ভাষায় উম্মতকে সতর্ক করে বলেছেন, শুধুই আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য রোজা রাখতে হবে। কেননা এমন সিয়ামই শুধু আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য, যার মূল উপাদান হচ্ছে ইমান ও ইহতিসাব; ইরশাদ হয়েছে : যে ব্যক্তি ইমানে উজ্জীবিত হয়ে পুণ্যের আশায় রমজানের সিয়াম পালন করবে তার পূর্ব জীবনের গোনাহখাতা ক্ষমা করে দেওয়া হবে। (বুখারি)। রোজার বাহ্যিকরূপ তথা বিধি-বিধানের প্রতি যেরূপ সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে তদ্রুপ সিয়ামের হাকিকত ও মর্ম এবং সিয়ামের উদ্দেশ্য অনুধাবনের প্রতিও সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। কাজেই একদিকে যেমন পানাহার বর্জন ও জৈবিক চাহিদা পরিহার করে চলতে হবে, তেমনি এমন সব অন্যায় ও অপরাধ পরিহার করতে হবে যা সিয়ামের ভাবমূর্তি বিনষ্টকারী, সিয়ামের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের পরিপন্থি এবং সিয়ামের নৈতিক ও চারিত্রিক সফলতা লাভের পথে অন্তরায়।

লেখক : নায়েবে আমির, খেলাফত মজলিস বাংলাদেশ

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম