Logo
Logo
×

ইসলাম ও জীবন

যেসব কারণে রোজা ভেঙে ফেলা জায়েজ

Icon

ইসলাম ও জীবন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৪ মার্চ ২০২৫, ১২:৩৩ পিএম

যেসব কারণে রোজা ভেঙে ফেলা জায়েজ

রমজানের রোজা রাখা প্রতিটি সুস্থমস্তিস্ক সম্পন্ন, প্রাপ্তবয়স্ক মুসলমানের জন্য ফরজ।

কোনো বৈধ কারণ ছাড়া রোজা না রাখা বা ভেঙে ফেলা হারাম। তবে শরীয়ত কিছু বিশেষ অবস্থায় রোজা না রাখার বা ভেঙে ফেলার অনুমতি দিয়েছে, যা মোট নয়টি। 

নিচে সেগুলোর সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা দেওয়া হলো:

১) সফর (ভ্রমণ):

যদি কেউ (শরয়ী) সফরে থাকে, তবে তার জন্য রোজা না রাখা বা ভেঙে ফেলা জায়েজ। পরে কাজা আদায় করতে হবে। তবে সফরে কোনো কষ্ট না হলে রোজা রাখা উত্তম।

২) কঠিন অসুস্থতা:

যদি কেউ এমন অসুস্থ হয় যে রোজা রাখলে তার রোগ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে, কিংবা প্রাণনাশ বা কোনো অঙ্গের ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে, তাহলে রোজা না রাখার অনুমতি আছে। তবে সুস্থ হওয়ার পর কাজা আদায় করতে হবে, কাফফারা দিতে হবে না।

৩,৪) গর্ভবতী বা দুগ্ধদানকারী নারী:

যদি গর্ভবতী বা দুগ্ধদানকারী মা নিজের বা শিশুর জীবনের জন্য শঙ্কিত হয়, তবে রোজা না রাখা বা ভেঙে ফেলা জায়েজ। সুস্থ হওয়ার পর কাজা আদায় করা ফরজ, তবে কাফফারা লাগবে না।

৫,৬) চরম ক্ষুধা ও তৃষ্ণা:

যদি না খাওয়া বা না পান করার কারণে জীবননাশের বা মানসিক ভারসাম্য হারানোর আশঙ্কা থাকে, তাহলে রোজা ভেঙে ফেলা জায়েজ। পরে কাজা আদায় করতে হবে, তবে কাফফারা নেই।

৭) জীবননাশ বা মানসিক ভারসাম্য হারানোর আশঙ্কা:

যদি কোনো সাপ বা বিষাক্ত প্রাণী কামড় দেয় বা অন্য কোনো কারণে জীবননাশ বা পাগল হওয়ার আশঙ্কা থাকে, তাহলে রোজা ভেঙে ফেলা জায়েজ। পরে কাজা আদায় করতে হবে, তবে কাফফারা লাগবে না।

৮) জিহাদ:

যদি কোনো মুজাহিদ নিশ্চিত জানে যে সে যুদ্ধ করবে এবং যুদ্ধের সময় দুর্বল হয়ে পড়তে পারে, তাহলে তার জন্য রোজা ভাঙা জায়েজ। পরে কাজা আদায় করতে হবে, তবে কাফফারা নেই।

৯) জোরপূর্বক খাওয়ানো (ইকরাহ):

যদি কাউকে জোর করে রোজা ভাঙতে বাধ্য করা হয় এবং না খেলে প্রাণনাশ, অঙ্গহানি বা প্রচণ্ড শারীরিক নির্যাতনের আশঙ্কা থাকে, তাহলে রোজা ভেঙে ফেলা জায়েজ। তবে যদি সে ধৈর্য ধারণ করে, তাহলে আল্লাহর কাছে প্রতিদান পাবে।

নফল রোজার ক্ষেত্রে বিশেষ শিথিলতা:

উল্লিখিত কারণগুলোর পাশাপাশি মেহমান ও মেহমানকে আপ্যায়নের ক্ষেত্রেও নফল রোজা ভেঙে ফেলার অনুমতি আছে।

• যদি কোনো ব্যক্তি নফল রোজা রেখে থাকে এবং অতিথির উপস্থিতিতে খাওয়ার প্রয়োজন হয়, তাহলে রোজা ভেঙে খাওয়া জায়েজ। পরে এক দিনের কাজা রাখতে হবে।

• যদি রোজা ভেঙে যাওয়ার পর কাজা রাখতে পারার বিষয়ে আত্মবিশ্বাস না থাকে, তাহলে রোজা না ভাঙাই উত্তম।

• এই ছাড়ের (মেহমানদারীর) সময় সূর্য ঢলার (যাওয়াল) আগ পর্যন্ত, এরপর রোজা ভাঙা বৈধ নয়।

ঋতুস্রাব ও প্রসব-পরবর্তী স্রাব (হায়েজ ও নেফাস):

নারীদের জন্য ঋতুস্রাব বা প্রসব-পরবর্তী অবস্থায় রোজা রাখা বৈধ নয়।

• রোজা থাকা অবস্থায় যদি ঋতুস্রাব বা প্রসব-পরবর্তী রক্তপাত শুরু হয়, তাহলে রোজা ভেঙে যাবে।

• এই দিনগুলোর পর কাজা রাখা ফরজ, তবে কাফফারা নেই।

জীবন রক্ষা করা ফরজ:

• যদি নিজের জীবন বা শিশুর জীবন রক্ষার জন্য রোজা ভাঙতে হয়, তাহলে তা করা ফরজ ও ওয়াজিব।

• তবে সফরের মতো ক্ষেত্রে জীবনহানির আশঙ্কা না থাকলে রোজা ভাঙা বৈধ হলেও রোজা রাখা উত্তম।

• কেউ যদি ইচ্ছাকৃতভাবে না খেয়ে বা না পান করে এমন পর্যায়ে পৌঁছে যায় যে সে মারা যায় বা এত দুর্বল হয় যে ফরজ ইবাদতও করতে পারে না, তাহলে সে আল্লাহর কাছে অপরাধী গণ্য হবে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম