অস্থায়ী পদ্ধতিতে জমি বন্ধক দেওয়া-নেওয়া জায়েজ?

ইসলাম ও জীবন ডেস্ক
প্রকাশ: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৪:২৭ পিএম

প্রশ্ন: আমাদের এলাকায় জমি বন্ধক (কট) দেওয়ার প্রচলন আছে। আর তা নাকি জায়েজ নেই। তাই কেউ কেউ অস্থায়ী বিক্রি নামে জমি বন্ধক নিয়ে থাকে।
এখন আমার জানার বিষয় হল, এমন অস্থায়ী পদ্ধতিতে জমি বন্ধক দেওয়া-নেওয়া শরীয়তসম্মত হবে কি না?
উল্লেখ্য যে, অস্থায়ী বিক্রির পদ্ধতি হল, কোনো ব্যক্তি কারো থেকে জমি বন্ধক নিল এই শর্তে যে, তুমি বিশ হাজার টাকা নাও। যখন আমাকে বিশ হাজার টাকা ফেরত দিবে তখন তোমার জমি ফেরত দিব।
বন্ধক চলাকালে বন্ধকগ্রহিতা জমি থেকে উপকৃত হবে। উপরোক্ত বিষয়ের উপর দলিলভিত্তিক আলোচনার মাধ্যমে জানিয়ে ধন্য করবেন।
উত্তর: প্রশ্নোক্ত লেনদেন অর্থাৎ কাউকে নির্ধারিত মেয়াদের জন্য টাকা দিয়ে গ্রহীতার জমি ভোগ করা সুদী কারবারের অন্তর্ভুক্ত। এই লেনদেনকে অস্থায়ী বিক্রি নাম দিলেও তা বৈধ হবে না।
উল্লেখ্য, এক্ষেত্রে বৈধ পদ্ধতিতে লেনদেন করতে চাইলে উভয় পক্ষ শুরু থেকেই জমি ইজারা/ভাড়া চুক্তি করবে। কোনো কোনো এলাকায় যাকে পত্তন বা লীজ বলা হয়।
এক্ষেত্রে জমির মালিক প্রয়োজন অনুযায়ী দীর্ঘ মেয়াদী চুক্তি করে পূর্ণ ভাড়া অগ্রীম উসূল করে নিবেন। যেমন জমির মালিকের বিশ হাজার টাকা প্রয়োজন। আর কাঙ্খিত জমির বার্ষিক ভাড়া ৪ হাজার টাকা। তাহলে ৫ বছরের জন্য জমিটি ভাড়া দিয়ে বিশ হাজার টাকা অগ্রীম নিয়ে নিবে।
যদি ৫ বছরের পূর্বেই চুক্তি শেষ করে দেয় তাহলে সে অনুপাতে তাকে ভাড়া ফেরত দিতে হবে। উল্লেখ্য, এক্ষেত্রে উভয়ের সম্মতিতে বর্তমান ভাড়া থেকে কিছু কম-বেশিতেও চুক্তি করার অবকাশ আছে। তবে লীজের বাজারমূল্য থেকে অনেক বেশি তফাত করা যাবে না।
সূত্র: মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক ৮/২৪৫; ইলাউস সুনান ১৮/৬৪; আলমাবসুত সারাখসী ২১/১০১; ফাতাওয়া খানিয়া ২/১৬৪; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৭/১৪৭; আলবাহরুর রায়েক ৬/৮; ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৪/৪০৬; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৩/২০৮; রদ্দুল মুহতার ৫/২৮৬, ৬/৪৮২; শরহুল মাজাল্লা, খালেদ আতাসী ২/৪১০, ৩/১৯৬; মাজাল্লাতু মাজমাইল ফিকহিল ইসলামী, জিদ্দা, সংখ্যা ৭, ভলিয়ম ৩, পৃ. ৫৩৯, ৫৫৭