নামাজে রাকাত নিয়ে সংশয় হলে যা করবেন
ইসলাম ও জীবন ডেস্ক
প্রকাশ: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৪:৪৯ পিএম
প্রশ্ন: অনেক সময় নামাজের রাকাত নিয়ে সংশয়ে পড়ে যাই। চেষ্টা করেও স্মরণ করতে পারি না কত রাকাত পড়েছি। এক্ষেত্রে করণীয় কী?
উত্তর: নামাজের রাকাত-সংখ্যা নিয়ে সংশয়ে পড়লে করণীয় হল, যে সংখ্যার ব্যাপারে প্রবল ধারণা হবে সেটাকে ধরে নিয়ে অবশিষ্ট রাকাত পূর্ণ করবে। এক্ষেত্রে সাহু সিজদা দেওয়া লাগবে না।
পক্ষান্তরে রাকাত সংখ্যার ব্যাপারে যদি কোনো ধারণাই প্রবল না হয় তাহলে সম্ভাব্য সংখ্যার মাঝে কম সংখ্যাটি ধরবে। অতপর ওই হিসাবে অবশিষ্ট নামাজ পূর্ণ করবে। এক্ষেত্রে প্রত্যেক রাকাতের শেষে বৈঠক করে তাশাহহুদ পড়বে এবং শেষ বৈঠকে সাহু সিজদা দিয়ে নামাজ শেষ করবে।
এর কয়েকটি ধরন হতে পারে।
১. দুই রাকাতবিশিষ্ট নামাজে দুই নাকি তিন রাকাত মনে হলে দুই রাকাত ধরে নিতে হবে। আর এ সংশয়ের কারণে সাহু সেজদা দিতে হবে।
২. চার রাকাতবিশিষ্ট নামাজে তিন নাকি চার মনে হলে, তিন রাকাত হিসাব করতে হবে। শেষে সাহু সেজদা করতে হবে।
৩. নামাজে প্রবল সন্দেহ হলে যেই রাকাতের প্রতি প্রবল ধারণা হবে সেটি আমলে নিতে হবে।
৪. কোনটিই প্রবল মনে না হলে, যেটি কম রাকাত সেটি ধর্তব্য হবে। তবে শেষে সাহু সেজদা দিতে হবে।
৫. নামাজ শেষে রাকাত নিয়ে সন্দেহ হলে পুনরায় আদায় করতে হবে।
যে ব্যক্তির প্রায় সময়ই সন্দেহ হয় এবং সন্দেহ তার অভ্যাসে পরিণত হয়, তবে যেদিকে তার মন বেশি যায়, সেটার ওপর আমল করবে।
যদি সব বিষয়ে ধারণা সমান হয়, তবে কমটির ওপর আমল করবে এবং প্রতি রাকাতকে নামাজের শেষ মনে করে বসবে এবং শেষে সেজদায়ে সাহু করতে হবে। (মুসলিম, হাদিস: ৮৮৮)
এ প্রসঙ্গে এক হাদিসে ইরশাদ হয়েছে- হজরত আবদুর রহমান ইবনে আউফ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, তোমাদের কারো যদি নামাজের মধ্যে সন্দেহ হয়, ফলে সে জানে না যে এক রাকাত পড়ল নাকি দুই রাকাত। তাহলে সে যেন এক রাকাত ধরে নিয়ে নামাজ পড়ে।
আর যদি দুই রাকাত পড়ল না তিন রাকাত, তা না জানে তাহলে যেন দুই রাকাত ধরে নামাজ পড়ে এবং (এসব ক্ষেত্রে) সালাম ফেরানোর পূর্বে দুটি সেজদা আদায় করে (অর্থাৎ সাহু সিজদা করে)।
উল্লেখ্য যে, নামাজের মধ্যে এ ধরনের সংশয় মনোযোগের অভাবে হয়ে থাকে। তাই খুশু-খুযুর সঙ্গে নামাজ আদায়ের প্রতি যত্নবান হতে হবে। এজন্য কোনো আল্লাহ ওয়ালা বুযুর্গের সোহবতে যাওয়া ও তার পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে।
সূত্র: কিতাবুল আছল ১/২২৪; ফাতাওয়া খানিয়া ১/১২০; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/৪২৯; ফাতহুল কাদীর ১/৪৫২; রদ্দুল মুহতার ২/৯৩; বাদায়েউস সানায়ে ১/৪০৩