প্রশ্ন: আমি প্রবাসে থাকি। আমি বাংলাদেশ থেকে মানুষদের জার্মানির ভিসা পাবার ব্যবস্থা করে,তাদের কাছ থেকে ফি নেই , তবে কি আমার উপার্জন হালাল হবে? আমি সব খরচের পরে খুব সামান্যই লাভ করব।
উত্তর: যেহেতু কিয়ামতের দিন উপার্জনের উৎস সম্পর্কে জবাবদিহি করতে হবে সেহেতু মুমিনের জন্য হালাল উপার্জন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ( সুনানুত তিরমিযী, হাদিস, নং ২৪১৭)
আর ইসলাম কল্যাণকর সকল বস্তুকে মানবজাতির জন্য হালাল করেছে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘হে মানুষ পৃথিবীতে হালাল ও উত্তম যা রয়েছে তা থেকে আহার কর।’(সূরা বাক্বারা ১৬৮)
সুতরাং আপনার এই কাজের মাঝে যদি মিথ্যাচার, প্রতারণা, সুদ-ঘুষের সম্পৃক্ততা, জুলুম, খেয়ানত না থাকে; বরং যদি কাজটা আপনি সততা, আমানতদারিতা, স্বচ্ছতা, আন্তরিকতা, শৃঙ্খলা ও ওয়াদা পালনসহ সম্পাদন করতে পারেন তাহলে এর বিনিময়ে মুনাফা অর্জন আপনার জন্য হালাল হবে।
হাদিসে এসেছে, ‘আবু সাঈদ খুদরী রা. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সৎ ও আমানতদার ব্যবসায়ী (কিয়ামতের দিন) নবীগণ, সিদ্দিকীন ও শহীদদের সঙ্গে থাকবে।” (সুনানুত তিরমিযী, হাদিস নং ১২০৯)
ভিসা মূলত একটি হককে মুজাররাদ বা নিরেট একটি হক। নিরেট হক শরয়ী দৃষ্টিতে ক্রয়বিক্রয় জায়েজ নয়।
তবে যদি কোন ব্যক্তির ভিসা অর্জনের জন্য অর্থ ও সময় ব্যয় হয়, তাহলে ভিসার জন্য খরচ কৃত টাকার অতিরিক্ত মেহনতের মজুরী ধরে নির্ধারিত টাকা ফি হিসেবে গ্রহণ করতে পারবে।
এক্ষেত্রে যদি ভিসাটি পেতে কোন প্রকার চেষ্টা বা অর্থ ব্যয় না হয়ে থাকে বরং কোন কোম্পানি বা সরকারের পক্ষ থেকে ভিসা প্রদান করে থাকে কাউকে কাঙ্খিত দেশে আনার জন্য, তাহলে ওই ভিসা বিক্রি করে অতিরিক্ত টাকা কামানো জায়েজ নয়।
সূত্র: আল আশবা ওয়ান নাযায়ের-১৭৮, রদ্দুল মুহতার-৪/৫১৮, রদ্দুল মুহতার-৫/১৩৫, রদ্দুল মুহতার-১৫/১৩৭