গাড়িতে নামাজ আদায় করবেন যেভাবে
শায়েখ উমায়ের কোব্বাদী
প্রকাশ: ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৩৯ পিএম
প্রশ্ন: অনেক দূরের রাস্তায় যাতায়াত করার সময় বাসের মধ্যে নামাজের ওয়াক্ত হয়; কিন্তু দেখা যায় নামাজ পড়ার জায়গা পাওয়া যায়না। সেক্ষেত্রে বাসে নামাজ পড়ার বিধান কি?
উত্তর: এক- নামাজে সমস্যা হতে পারে এমন সময় বাসে উঠা উচিত নয়, তবে প্রয়োজনে রওনা করতে হলে যেন নামাজ কাযা না হয় এ ব্যাপারে যত্নবান হতে হবে।
বাস থেকে বার বার ওঠানামা কষ্টকর হওয়ার কারণে নামাজ কাজা করা যাবে না; বরং নামাজের সময়গুলোতে বাস থামিয়ে নিচে কোন স্থানে কিয়াম ও রুকু-সিজদার দ্বারা নামাজ আদায় করবে।
এক্ষেত্রে আরেকটি সংশোধনযোগ্য বিষয় হল অনেক সময় পুরুষেরা বাস থামিয়ে নামাজ পড়লেও নারীরা পর্দার দোহাই দিয়ে অথবা লজ্জার কারণে নামাজ পড়ে না। অথচ এটা চরম অন্যায় ও গোনাহের কাজ। বরং তারা যথা নিয়মে ওজু করে মসজিদের এক কিনারায় বা অন্য কোন স্থানে বোরকা পরিহিত অবস্থায় নামাজ আদায় করবে।
দুই-কিন্তু যদি বাস থামানো না যায় কিংবা বাস থেকে নামলে সঙ্গী সাথী ও বাস চলে যাবে এবং পরবর্তীতে সে আর বাসে একা উঠতে পারবে না বা তাকে নেওয়া হবে না-এমন আশঙ্কা থাকে; এমতাবস্থায় বাসে নামাজ পড়া জায়েজ। এ ক্ষেত্রে দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ার সুযোগ থাকলে দাঁড়িয়ে নামা্জ পড়ে নিবে। সুযোগ থাকা সত্ত্বেও যদি কেউ বসে নামাজ পড়ে, তবে নামাজ হবে না।
যদি দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ার ক্ষেত্রে পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে, তাহলে কিছুতে হেলান দিয়ে দাঁড়াবে। কারণ হাত বাঁধা সুন্নত আর দাঁড়ানো ফরজ। তাই ফরজ রক্ষার্থে সুন্নতের ক্ষেত্রে শীথিলতা মার্জনীয়। পক্ষান্তরে দাঁড়ানোর কোনোপ্রকার সুযোগ না থাকলে বসে ইশারা করে নামাজ পড়ে নিবে। এই নামাজ পরে আর দোহরাতে হবেনা।
কিবলামুখি হতে যথাসাধ্য চেষ্টা করবে। যদি গাড়ি কিবলামুখ থেকে অন্যদিকে ঘুরে যায় তবে নামাজে থাকা অবস্থায় কিবলামুখি ঘুরে যাবে। যদি সম্ভব না হয়, তাহলে যেদিকে মুখ হয়, সেদিকে ফিরেই নামাজ শেষ করবে। কিন্তু ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও কিবলামুখি হয়ে নামাজ আদায় করতে না পারলে এই নামাজ পরে আবার পড়ে নিতে হবে। কিবলামুখি ফিরে নামাজ আদায় করতে পারলে পরে তা আবার আদায় করার প্রয়োজন নেই।
অনুরূপভাবে যদি পানি না থাকে তাহলে তায়াম্মুম করে নামাজ পড়ে নিবেন। এই নামাজও পরে দোহরাতে হবেনা।
আর যদি তায়াম্মুম করারও সুযোগ না থাকে, তবু ইশারায় নামাজ পড়ে নিবে। অবশ্য পরে এই নামাজের কাযা করতে হবে।
সূত্র: (মাআরিফুস সুনান ৩/৩৯৪-৯৬; আহসানুল ফাতাওয়া ৪/৮৮. ১/২৯১; রদ্দুল মুহতার ২/১০২,৪৯১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২৮,১৪৪)