বিজয় উদযাপনে করণীয় সম্পর্কে পবিত্র কোরআন ও হাদিসে নির্দেশনা এসেছে।
বিজয় শিরোনামে নাসর ও ফাতহ নামে দুটি সূরাও রয়েছে পবিত্র কোরআনে। ইরশাদ হয়েছে, ‘যখন আল্লাহর সাহায্যে বিজয় আসবে, তখন মানুষকে দলে দলে আল্লাহর দ্বীনে প্রবেশ করতে দেখবে। তখন তোমার প্রতিপালকের পবিত্রতা বর্ণনা করো। আর তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো। নিশ্চয়ই তিনি ক্ষমাশীল’ (নাসর, আয়াত : ১-৩)।
এ সূরায় বিজয় উদযাপনের দুই দফা কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। ১. আল্লাহর প্রশংসাগাথায় তাঁর পবিত্রতা বর্ণনা করা। ২. যুদ্ধকালীন অজান্তে যেসব ভুলত্রুটি হয়েছে, তার জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা।
অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে, ‘আমি তাদের পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠা (বিজয়) দান করলে তারা সালাত কায়েম করবে, জাকাত দান করবে এবং সৎকাজের আদেশ করবে ও অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করবে (সূরা হজ, আয়াত : ২২)।
হাদিসে বিজয় উদযাপনে যেসব কর্মসূচির উল্লেখ পাওয়া যায় তা হল আট রাকাত শোকরিয়া নামাজ আদায় করা। কেননা নবী করিম (সা.) মক্কা বিজয়ের দিন শোকরিয়া হিসেবে আট রাকাত নামাজ আদায় করেছিলেন (জাদুল মায়াদ, আল্লামা ইবনুল কাইয়িম জাওজি)।
নবীজির দেখাদেখি অনেক সাহাবিও তাঁর অনুকরণে আট রাকাত নফল নামাজ আদায় করেন। দশম হিজরিতে মক্কা বিজয়ের পর মহানবী (সা.) আনন্দ উদযাপন করেছেন। প্রিয় জন্মভূমির স্বাধীনতায় তিনি এত বেশি খুশি হয়েছিলেন, যা ভাষায় ব্যক্ত করা সম্ভব নয়।
বিজয়ের আনন্দে তিনি সেদিন ঘোষণা করেছিলেন, ‘যারা কাবাঘরে আশ্রয় নেবে তারা নিরাপদ। এভাবে মক্কার সম্ভ্রান্ত কয়েকটি পরিবারের ঘরে যারা আশ্রয় নেবে, তারা যত অত্যাচার-নির্যাতনকারীই হোক না কেন তারাও নিরাপদ। এই ছিল প্রিয়নবীর মক্কা বিজয়ের আনন্দ উৎসবের ঘোষণা।
এভাবে মহানবী (সা.) বিনা রক্তপাতেই বিজয়ীরূপে মক্কায় প্রবেশ করলেন এবং এমন এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন, যুগযুগান্তরে সবার মুখে আজও যা আলোচিত হয়ে আসছে, যেই কুরাইশরা মুসলমানদের ক্ষতি সাধনে সামর্থের শেষ সময় পর্যন্ত অপচেষ্টা চালিয়েছিল তাদেরকে তিনি ‘সাধারণ ক্ষমা’ ঘোষণা করেন, তাও কখন-যখন তিনি মক্কার অধিপতি, ইচ্ছে হলে নিয়মানুযায়ী সবাইকে মৃত্যুদণ্ডও দিতে পারতেন।
আসলে আল্লাহর রাসুলরা উত্তম চরিত্র নিয়েই দুনিয়ায় আগমন করেন, যেন উম্মত তাদের থেকে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে।