সুরা ফুরকানে সমুদ্রের বিস্ময়ের আলোচনা
ইসলাম ও জীবন ডেস্ক
প্রকাশ: ০১ জুলাই ২০২৪, ০৩:০০ পিএম
পবিত্র কুরআনের পঁচিশতম সুরা হচ্ছে সুরা ‘ফুরকান’। এটি একটি মাক্কি সুরা এবং এই সুরাটি ৪২তম সুরা যা নবী করিমের (সা.) উপর অবতীর্ণ হয়েছে। সুরা ফুরকানে মোট ৭৭টি আয়াত এবং এই সুরাটি পবিত্র কুরআনের ১৮ ও ১৯তম পারায় রয়েছে।
‘ফুরকান’ অর্থ ন্যায় থেকে অন্যায়কে পৃথক করা, এটি কুরআনের একটি নাম হিসাবে বিবেচিত হয়। এই সুরায় তাওহিদ, কিয়ামত, নবুওয়ত এবং মূর্তিপূজার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের বিষয়গুলোর উপর জোর দেওয়া হয়েছে এবং সুরার শেষের আয়াতসমূহে প্রকৃত ইমানী তথা বিশ্বাসীদের বৈশিষ্ট্যগুলো বর্ণনা করা হয়েছে।
সুরা ফুরকানকে বিষয়ের দিক থেকে তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়:
প্রথম অংশে, মুশরিকদের যুক্তির সমালোচনা করা হয়েছে এবং সত্যের বাণী গ্রহণ না করার জন্য তাদের অজুহাতের জবাব দেওয়া হয়েছে এবং তাদেরকে মহান আল্লাহর শাস্তি সম্পর্কে সতর্ক করা হয়েছে, অতঃপর অতীতের ইতিহাসের কিছু অংশ বর্ণনা করা হয়েছে। এই অংশে যারা নবীদের দাওয়াতের বিরোধিতার কারণে চরম বিপর্যয়ের কবলে পড়েছিল, সেই ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে।
সুরা হাশরের শেষ তিন আয়াত, অর্থ ও ফজিলত
দ্বিতীয় অংশে, তাওহিদের কারণ এবং সৃষ্টি জগতে আল্লাহর মহানুভবতার নিদর্শন যেমন: সূর্যের আলো, রাতের অন্ধকার, প্রবহমান বাতাস, বৃষ্টিপাত, মৃত জমির পুনরুজ্জীবন, জমিনসমূহ ও আসমানসমূহ সৃষ্টি এবং সূর্য ও চন্দ্র সৃষ্টির বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
সৃষ্টির আশ্চর্যের কথা উল্লেখ করে এমন ঘটনাগুলোর মধ্যে, আমরা এই সুরার ৫৩ নম্বর আয়াত উল্লেখ করতে পারি, যেখানে বলা হয়েছে
وَهُوَ الَّذِي مَرَجَ الْبَحْرَيْنِ هَذَا عَذْبٌ فُرَاتٌ وَ هذَا مِلْحٌ أُجَاجٌ وَجَعَلَ بَيْنَهُمَا بَرْزَخًا وَحِجْرًا مَحْجُورًا
তিনিই দু’টি সাগরকে সংযুক্ত করেছেন, যার একটি মিষ্ট, সুপেয় এবং অপরটি লবণাক্ত, তিক্ত; উভয়ের মধ্যে এক সীমারেখা এবং এক অনতিক্রম্য ব্যবধান রেখেছেন।
এই আয়াতে দুটি সমুদ্রের কথা বলা হয়েছে, যেগুলো সৃষ্টি জগতের অন্যতম বিস্ময় হিসেবে বিবেচিত।
সুরা আর-রহমানের ১৯ নম্বর আয়াত এবং সুরা নামলের ৬১ নম্বর আয়াতেও এই দুটি সমুদ্রের কথা বলা হয়েছে।
উল্লিখিত বৈশিষ্ট্য অনুসারে, এটি বলা যেতে পারে যে এই আয়াতটি বাল্টিক সাগর এবং উত্তর সাগরের মধ্যবর্তী সীমানাকে নির্দেশ করে, যা ডেনমার্কের পর্যটন শহর স্কাগেনে দেখা যায়। এছাড়াও, ভূমধ্যসাগর এবং আটলান্টিক মহাসাগরেও একই দৃশ্য পরিলক্ষিত হয়।
সুরা ফুরকানের তৃতীয় অংশটি সত্যিকারের ইমানদার (ইবাদ আল-রহমান) এবং আল্লাহর খাঁটি বান্দাদের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কেও আলোচনা করা হয়েছে; এই গুণগুলো হল বিশ্বাস, ধার্মিক কাজ, লালসার বিরুদ্ধে লড়াই, যথেষ্ট সচেতনতা, এবং সামাজিক দায়িত্ববোধের প্রতিশ্রুতি ও অনুভূতির প্রমুখ।
মৃতদের মাগফিরাতে যেসব আমল করবেন