সুরা হাশরের শেষ তিন আয়াত, অর্থ ও ফজিলত
ইসলাম ও জীবন ডেস্ক
প্রকাশ: ২৬ জুন ২০২৪, ১০:৩৯ এএম
সুরা হাশরের শেষ তিন আয়াতের গুরুত্ব অপরিসীম। এর মধ্যে আল্লাহ তাআলার আসমাউল হুসনা-এর অনেক গুরুত্বপূর্ণ আসমা বা নাম উল্লেখ রয়েছে। আল্লাহর সুন্দর সুন্দর নামগুলো আল্লাহ তাআলা এই তিন আয়াতের মধ্যে তুলে ধরেছেন।
২৪ আয়াত বিশিষ্ট সুরা হাশরের রুকু সংখ্যা ৩। এ সুরাটি পবিত্র মদীনা নগরীতে নাজিল হয়েছে।
প্রথম থেকে তৃতীয় তথা শেষ রুকু, ১ থেকে ২৪ নম্বর আয়াত। সত্য অস্বীকারকারীদের পরিণতি দুনিয়া ও আখেরাতে কত কঠিন তা বলে শুরু হয়েছে এ সুরা। সুরার বড় অংশে সমরনীতির আলোচনা রয়েছে। সুরা শেষ হয়েছে মোমিনদের উদ্দেশ্যে উপদেশ বাণী দিয়ে।
সুরা হাশরের শেষ তিন আয়াতের ফজিলত অনেক বেশি। সকাল-বিকাল সুরা হাশরের শেষ তিন আয়াত পড়া অনেক গুরুত্বপূর্ণ ও সওয়াবের আমল। এ সম্পর্কে বিভিন্ন হাদিস বর্ণিত হয়েছে।
হাদিস ও তাফসির গ্রন্থে সুরা হাশরের বেশ কিছু ফজিলত ও আমল উল্লেখ করা হয়েছে। ইরবাজ ইবনে সারিয়া (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) ঘুমানোর আগে মুসাব্বিহাত সুরা পাঠ করতেন। এগুলোর মধ্যে এমন একটি আয়াত আছে, যে আয়াতটি এক হাজার আয়াত অপেক্ষা উত্তম। (মুসাব্বিহাতের মধ্যে সুরা হাশর অন্তর্ভুক্ত) (তিরমিজি, হাদিস : ২৯২১)
চলুন জেনে নিই সুরা হাশরের শেষ তিন আয়াতের আরবি, বাংলা উচ্চারণ ও অর্থসহ ফজিলত সম্পর্কে হাদিস।
মাকাল বিন ইয়াসার (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি সকাল বেলা তিন বার ‘আউজুবিল্লাহিস সামীয়িল আলীমি মিনাশ শাইতানির রাজীম’ পড়বে। এরপর সুরা হাশরের শেষ তিন আয়াত তিলাওয়াত করবে। আল্লাহ তাআলা ওই ব্যক্তির জন্য ৭০ হাজার ফেরেশতা নিযুক্ত করেন; যারা ওই ব্যক্তির জন্য সন্ধ্যা পর্যন্ত মাগফিরাতের দোয়া করতে থাকে।
আর এ সময়ের মধ্যে যদি লোকটি মারা যায়, তাহলে সে শহীদের মৃত্যু লাভ করবে। আর যে ব্যক্তি এটি সন্ধ্যার সময় পড়বে, তাহলে তার একই মর্যাদা রয়েছে।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ৩০৯০; আবু দাউদ, হাদিস : ২৯২২; মুসনাদ আহমদ, হাদিস : ১৯৭৯৫; কানজুল উম্মাল, হাদিস : ৩৫৯৭)
সুরা হাশরের শেষ তিন আয়াত:
هُوَ اللَّهُ الَّذِي لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ عَالِمُ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ هُوَ الرَّحْمَنُ الرَّحِيمُ (22) هُوَ اللَّهُ الَّذِي لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ الْمَلِكُ الْقُدُّوسُ السَّلَامُ الْمُؤْمِنُ الْمُهَيْمِنُ الْعَزِيزُ الْجَبَّارُ الْمُتَكَبِّرُ سُبْحَانَ اللَّهِ عَمَّا يُشْرِكُونَ (23) هُوَ اللَّهُ الْخَالِقُ الْبَارِئُ الْمُصَوِّرُ لَهُ الْأَسْمَاءُ الْحُسْنَى يُسَبِّحُ لَهُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَهُوَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ [الحشر:22-24]
বাংলা উচ্চারণ: ‘হুআল্লা হুল্লাজি লা ইলাহা ইল্লা হুয়া, আলিমুল গাইবী ওয়াশ শাহাদাদি, হুয়ার রাহমানুর রাহিম। হুআল্লা হুল্লাজি লা ইলাহা ইল্লা হুয়াল মালিকুল কুদ্দুসুস সালামুল মু’মিনুল মুহাইমিনুল আজিজুল জাব্বারুল মুতাকাব্বির। ছুবহানাল্লাহি আম্মা য়ুশরিকুন। হুআল্লাহুল খালিকুল বা-রিউল মুছাওয়িরু লাহুল আসমাউল হুসনা। ইউছাব্বিহু লাহু মা ফিস-সামাওয়াতি ওয়াল আরদ্; ওয়া হুয়াল আজিজুল হাকিম।’
অর্থ: তিনি আল্লাহ, তিনি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। তিনি অদৃশ্য ও দৃশ্যের পরিজ্ঞাতা। তিনি পরম করুণাময়, পরম দয়াময়। তিনিই আল্লাহ্, তিনি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। তিনিই মালিক, তিনিই পবিত্র, তিনিই শান্তি, নিরাপত্তাবিধায়ক, তিনিই রক্ষক, তিনিই পরাক্রমশালী, তিনিই প্রবল, তিনিই অহংকারের অধিকারী। ওরা যাকে শরিক করে আল্লাহ্ তার থেকে পবিত্র, মহান। তিনিই আল্লাহ্, সৃজনকর্তা, উদ্ভাবনকর্তা, রূপদাতা, সব সুন্দর নাম তারই । আকাশ ও পৃথিবীতে যা-কিছু আছে সমস্তই তার পবিত্র মহিমা ঘোষণা করে। তিনি পরাক্রমশালী, তত্ত্বজ্ঞানী। (সুরা হাশর, আয়াত: ২২থেকে ২৪)