প্রশ্ন: মাগরিবের নামাজের ওয়াক্ত কত সময় পর্যন্ত বহাল থাকে?
উত্তর: পশ্চিম আকাশে আভা (সূর্যাস্তের পরে পশ্চিম দিগন্তে যে আলোকচ্ছটা থাকে তা) অদৃশ্য হওয়া পর্যন্ত ভিন্ন শব্দে বললে, ইশার ওয়াক্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত মাগরিবের ওয়াক্ত থাকে। সাধারণত এক ঘন্টা থেকে সোয়া ঘন্টা এই সময়টুকু দীর্ঘায়িত হয়।
তবে সূর্যাস্তের পরপরই অল্পসময়ের মধ্যেই মাগরিবের নামাজ পড়ে নেওয়া উত্তম।
আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রা.) বর্ণিত: তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন- জোহরের সালাতের ওয়াক্ত শুরু হয় যখন সূর্য (মাথার উপর থেকে পশ্চিম দিকে) হেলে পড়ে এবং মানুষের ছায়া তার দৈর্ঘ্যের সমান হয়। আর আসরের সালাতের সময় না হওয়া পর্যন্ত তা থাকে।
আসরের সালাতের সময় থাকে সূর্য বিবর্ণ হয়ে সোনালি বা তাম্রবর্ণ ধারণ না করা পর্যন্ত। মাগরিবের সালাতের সময় থাকে সূর্যাস্তের পর সন্ধ্যা গোধূলি বা পশ্চিম দিগন্তে উদ্ভাসিত শুভ্রতা অথবা লালিমা অন্তর্হিত না হওয়া পর্যন্ত।
ইশার সালাতের সময় থাকে অর্ধরাত্রি অর্থাৎ- মধ্যরাত পর্যন্ত। আর ফজরের সালাতের সময় শুরু হয় ফজর বা ঊষার উদয় থেকে শুরু করে সূর্যোদয় পর্যন্ত। অতএব সূর্যোদয়ের সময় সালাত আদায় করা বন্ধ রাখবে। কারণ সূর্য শয়তানের দু’ শিঙয়ের মধ্যখানে উদিত হয়।
সাহাবি উকবা বিন আমের আল জুহানি (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘রাসূল (সা.) আমাদের তিন সময়ে নামাজ এবং মৃতদের দাফন করতে নিষেধ করেছেন। ১. সূর্য উঠার সময়, যতক্ষণ না তা পুরোপুরি উঁচু হয়ে যায়। ২. সূর্য যখন মাথার ওপর ওঠে তখন থেকে পশ্চিমে হেলে পড়ার সময়টুকু। ৩. এবং সূর্য হলুদবর্ণ হওয়ার পর থেকে ডোবার আগ পর্যন্ত।’ বুখারি, হাদিস নম্বর ৫৫১ এবং মুসলিম, হাদিস নম্বর ১১৮৫।
এ তিন সময় নামাজ পড়া নিষেধ হওয়ার কারণ সম্পর্কে জ্ঞানীরা বলেন, সূর্য যখন ওঠে, যখন মাথার ওপর ওঠে এবং যখন ডুবে যায়- এ তিন সময় সূর্য পূজারিরা সূর্যকে সেজদাহ করে। তখন কেউ যদি নামাজ পড়ে তাহলে তাকেও সূর্য পূজারি মনে হতে পারে। এ জন্য এ সময় সব ধরনের নামাজ পড়া এবং সেজদাহ করা ইসলামী শরিয়ত মাকরুহে তাহরিমি তথা নিষেধ মনে করে।
মাওলানা ইউসুফ লুধিয়ানাভী (রহ.) বলেন, এ তিন সময়ে নামাজ তো দূরের কথা এমনকি তিলাওয়াতে সেজদাহ করাও নিষেধ। জানাজার নামাজ এবং মৃতকে দাফন করাও নিষেধ। তবে মৃতকে তাড়াতাড়ি দাফন করার প্রয়োজন হলে জানাজা পড়িয়ে দাফন করার অনুমতি আছে।