প্রশ্ন: অনেককে বলতে শোনা যায় কুরবানির পশু বেহেশতে যাবে, এ কথাটি কি ঠিক?
উত্তর: কুরবানির পশু বেহেশতে যাবে এ মর্মে কুরআনে-হাদিসে নির্দিষ্টভাবে বলা হয় নি।
পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, এগুলোর (কুরবানির পশু তথা গরু,উট,ছাগল) গোশত ও রক্ত আল্লাহর কাছে পৌঁছে না, কিন্তু পৌঁছে তার কাছে তোমাদের মনের তাকওয়া। এমনিভাবে তিনি এগুলোকে তোমাদের বশ করে দিয়েছেন, যাতে তোমরা আল্লাহর মহত্ত্ব ঘোষণা কর এ কারণে যে, তিনি তোমাদের পথ প্রদর্শন করেছেন। সুতরাং সৎকর্মশীলদের সুসংবাদ শুনিয়ে দিন।
হাদিস শরিফে এসেছে, হজরত আয়েশা (রা.) হতে বর্ণিত আছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কুরবানির দিন মানুষ যে কাজ করে তার মধ্যে আল্লাহ তাআলার কাছে সবচেয়ে পছন্দনীয় হচ্ছে রক্ত প্রবাহিত করা (কুরবানি করা)। কিয়ামতের দিন তা নিজের শিং, পশম ও ক্ষুরসহ হাজির হবে। তার (কুরবানির পশুর) রক্ত জমিনে পড়ার আগেই আল্লাহ্ তাআলার নিকটে এক বিশেষ মর্যাদায় পৌছে যায়। অতএব তোমরা আনন্দিত মনে কুরবানি কর। (তিরমিযী হাদিস ১৪৯৩)
অতএব, কুরবানির পশু বেহেশতে যাবে একথা বলা যাবে না।
প্রাণীদের হাশরের ব্যাপারে হাদিসে এসেছে, তাদের মধ্যকার হিসাব/বদলা চুকিয়ে দিয়ে আল্লাহ তাআলা বলবেনঃ তোমরা মাটি হয়ে যাও।
হজরত আবু হুরাইরাহ (রা.) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কিয়ামতের দিন প্রত্যেক পাওনাদারকে তার পাওনা চুকিয়ে দিতে হবে। এমনকি শিং বিশিষ্ট বকরি থেকে শিং বিহীন বকরির প্রতিশোধ গ্রহণ করা হবে। (সহিহ মুসলিম ২৫৮২ / ৬৩৪৪)
সুতরাং কুরবানির পশু সরাসরি বেহেশতে যাবে এমন কোনো বর্ণনা কুরআন-হাদিসে পাওয়া যায়নি। বরং কুরবানিদাতার তাকওয়া ও মনের অবস্থাই আল্লাহ তায়ালা দেখেন এবং সে হিসেবে প্রতিদান দেবেন।