হারাম উপার্জনকারীর সঙ্গে কুরবানি দেওয়া যাবে?
ইসলাম ও জীবন ডেস্ক
প্রকাশ: ১২ জুন ২০২৪, ০৩:৪৩ পিএম
প্রশ্ন: কুরবানি যদি কারো সঙ্গে ভাগে নেওয়া হয় কিন্তু তাদের মধ্যে কারো উপার্জন হারাম হয় কিন্তু সেটা আমার অজানা, সেক্ষেত্রে কুরবানি হবে কিনা? আর যদি আমার জানা থাকে তার উপার্জন হারাম সেক্ষেত্রে কী করণীয়:
উত্তর: কারো ব্যাপারে যদি একথা নিশ্চিতভাবে জানা যায় যে, তিনি হারাম টাকা দিয়েই কুরবানি দিচ্ছেন তাহলে তার সঙ্গে কুরবানি করা জায়েজ হবে না। এরকম ব্যক্তির সঙ্গে কুরবানিতে শরিক হলে ওই পশুতে শরীক সবার কুরবানি বাতিল হয়ে যাবে। সুতরাং সতর্কতার সঙ্গে শরিক নির্বাচন করা জরুরি। (খুলাসাতুল ফাতওয়া ৪১৫)
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, অবশ্যই আল্লাহ পবিত্র এবং তিনি পবিত্র (মালই) কবুল করে থাকেন। (মুসলিম ২৩৯৩, তিরমিযী ২৯৮৯, দারেমী ২৭১৭)
পক্ষান্তরে বিষয়টি যদি অজানা থাকে, তাহলে তার সঙ্গে কুরবানি করা জায়েজ হবে।
কেননা, আল্লাহ তায়ালা বলেন, আল্লাহ কাউকে তার সাধ্যাতীত কোন কাজের ভার দেন না, সে তাই পায় যা সে উপার্জন করে এবং তাই তার উপর বর্তায় যা সে করে। (সুরা বাকারা ২৮৬)
এ বছর কত টাকা থাকলে কুরবানি ওয়াজিব হবে?
কুরবানি ইসলামি শরিয়তের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। রাসুলুল্লাহ (সা.) হিজরতের পর প্রতি বছর কুরবানি করেছেন। তিনি কখনও কুরবানি পরিত্যাগ করেননি; বরং কুরবানি পরিত্যাগকারীদের ওপর অভিসম্পাত করেছেন।
প্রাপ্তবয়ষ্ক, সুস্থ মস্তিষ্কসম্পন্ন প্রত্যেক মুসলমান নর-নারী মুকিম ব্যক্তি, যে ১০ জিলহজ সুবহে সাদিক থেকে ১২ জিলহজ সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনের অতিরিক্ত নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হবে, তার ওপর কুরবানি করা ওয়াজিব হবে।
নেসাব হলো: স্বর্ণের ক্ষেত্রে সাড়ে সাত ভরি। আর রুপার ক্ষেত্রে সাড়ে বায়ান্ন ভরি। আর অন্যান্য বস্তুর ক্ষেত্রে সাড়ে বায়ান্ন ভরি রুপার সমমূল্যের সম্পদ।
স্বর্ণ বা রুপার কোনো একটি যদি পৃথকভাবে নেসাব পরিমাণ না হয়, তবে স্বর্ণ-রুপা উভয়টি মিলে কিংবা এর সঙ্গে প্রয়োজন-অতিরিক্ত অন্য বস্তুর মূল্য মিলে সাড়ে বায়ান্ন ভরি রুপার সমমূল্যের হয়ে যায় সে ক্ষেত্রেও কুরবানি ওয়াজিব হবে।
স্বর্ণ-রুপার অলঙ্কার, নগদ অর্থ, যে জমি বার্ষিক খোরাকির জন্য প্রয়োজন হয় না এবং প্রয়োজন অতিরিক্ত আসবাবপত্র— এসবই কুরবানির নেসাবের ক্ষেত্রে হিসাবযোগ্য।