প্রশ্ন: আমার স্ত্রীর ১ ভরির কিছু কম স্বর্ণ আছে। নগদ কোন টাকা আমার বা আমার স্ত্রী কারোরই নাই। আমার কি জাকাত ফরজ হবে?
উত্তর: যদি কোনো ব্যক্তির কাছে শুধু স্বর্ণ থাকে এবং জাকাতযোগ্য অন্য কোন সম্পদ না থাকে, তাহলে যদি স্বর্ণের নেসাব পূর্ণ না হয়, তথা সাড়ে সাত ভরি স্বর্ণ না থাকে, তাহলে তার ওপর যাকাত আবশ্যক হবে না। যদি নেসাব পূর্ণ হয় তাহলে জাকাত আবশ্যক হবে।
হাদিস শরিফে এসেছে, হজরত আলী (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, বিশ দীনারের কম পরিমাণ স্বর্ণে জাকাত ওয়াজিব নয়। (আবু দাউদ ১৫৭৩)
আর বিশ দীনারে আধুনিক হিসাবে সাড়ে সাত ভরি হয়।
জাকাতের নেসাব হলো, সাড়ে সাত ভরি স্বর্ণ বা সাড়ে বায়ান্ন ভরি রুপা বা সমমূল্যের নগদ অর্থ, বন্ড, সঞ্চয়পত্র, শেয়ার, ব্যাংকে জমাকৃত যে কোনো ধরনের টাকা, ফিক্সড ডিপোজিট হলে মূল জমা টাকা অথবা সমমূল্যের ব্যবসার পণ্য থাকলে জাকাত আদায় করতে হবে।
স্বাধীন, প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থ ও বুদ্ধিসম্পন্ন মুসলিম নর-নারী যার কাছে ঋণ, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ও প্রয়োজনীয় খাদ্য-বস্ত্রের অতিরিক্ত সোনা, রুপা, নগদ টাকা, প্রাইজবন্ড, সঞ্চয়পত্র, ডিপিএস, শেয়ার ও ব্যবসায়িক সম্পত্তির কোনো একটি বা সবকটি রয়েছে, যার সমষ্টির মূল্য উল্লিখিত নেসাব পরিমাণ হয়, তিনিই সম্পদশালী। এ পরিমাণ সম্পদ এক বছর স্থায়ী হলে বা বছরের শুরু ও শেষে থাকলে বছর শেষে জাকাত দিতে হবে।
মালে নামি অর্থাৎ বর্ধনশীল সম্পদের জাকাত দিতে হয়, যদি নেসাব পরিমাণ হয়।
ইসলামী শরিয়া মোতাবেক বর্ধনশীল সম্পদ হচ্ছে-
১. স্বর্ণ ও রুপা
২. নগদ অর্থ
৩.ব্যবসায়ী পণ্য
৪. গবাদি পশু
১. স্বর্ণের নেসাব ২০ মিসকাল অর্থাৎ সাড়ে ৭ তোলা (৪৭৮.৮৭ গ্রাম) ও রুপার নেসাব ২শত দিরহাম অর্থাৎ সাড়ে ৫২ তোলা(৬২১.৩৫ গ্রাম)।
২. নগদ অর্থের নেসাব: সাড়ে ৫২ তোলার সমমূল্য।
৩. ব্যবসায়িক পণ্যের নেসাব: সাড়ে৫২ তোলার সমমূল্য।
৪. গবাদিপশুর নেসাব: শর্তগুলো বাংলাদেশে পাওয়া যায় না।
কেউ যদি নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হন। এবং সেই মাল এক বছর হাতে থাকে ও ঋনমুক্ত থাকে, তাহলে চল্লিশ ভাগের এক ভাগ অর্থাৎ আড়াই পার্সেন্ট জাকাত দিতে হবে।
উল্লেখ্য, জমি, ঘর, বাড়ি, গাড়ি ও ফ্ল্যাট এগুলোতে জাকাত আসেনা। যদি এগুলো ব্যবসার জন্য হয়, তাহলে জাকাত আসবে।