রোজা রেখে ক্ষুধা ও তৃষ্ণার অনুভূতি এড়াবেন কিভাবে?
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৮ মার্চ ২০২৪, ১০:০৮ পিএম
রমজান মাসে বিশ্বজুড়ে রোজা পালন করছেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। ইসলাম ধর্মের অন্যতম স্তম্ভ এই রোজা। এই মাসে মুসলমানরা ভোর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত খাওয়া-দাওয়া থেকে বিরত থাকেন। এই মাসে দীর্ঘ সময়ের জন্য খাদ্য ও পানীয় পরিহারের ফলে অনেকেই ক্লান্তি ও অবসাদ অনুভব করতে পারেন। যারা উচ্চ রক্তচাপ বা হাই ব্লাড সুগারের মতো স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছেন তাদের এ উপবাস কষ্টকর হতে পারে। এখানে স্বাস্থ্যকর উপায়ে রোজা রাখার জন্য পুষ্টি বিশেষজ্ঞদের দেওয়া কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ টিপস তুলে ধরা হয়েছে; যা অনুসরণ করলে স্বাস্থ্য ভালো থাকবে।
বিবিসির প্রতিবেদনে, রোজাদারদের সঙ্গে কথা বলে তাদের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা জানার চেষ্টা করেছে; যার মাধ্যমে অনেকেই রমজান মাসে কিভাবে কাটাবেন তার পরিকল্পনা করতে পারেন।
তিন ধাপে সেহরি
রোজাদার ব্যক্তি দিনের প্রথম আহার হলো সেহরি। পুষ্টি বিশেষজ্ঞ ফাদি আব্বাস পরামর্শ দিয়েছেন যে নিম্নলিখিত টিপস অনুসরণ করলে দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকা সহজ হবে, শরীরে পানিশূন্যতা কম হবে যা স্বাস্থ্য ঠিক রাখবে।
আব্বাস বিবিসিকে বলেছেন, সেহরিতে আপনার উচিত এমন সব খাবারের দিকে মনোনিবেশ করা যাতে প্রায় ৭০ শতাংশ পানি থাকে। তার মতে, খাবারটি তিন ধাপে খাওয়া উচিত। এক ধাপের সঙ্গে আরেক ধাপের যেন পাঁচ মিনিটের ব্যবধান থাকে।
সেহরি শুরু করতে হবে সালাদ দিয়ে। এতে থাকতে পারে শসা, লেটুস ইত্যাদি। তবে খেয়াল রাখতে হবে সালাদে যেন লবণ বেশি না থাকে।
কেননা লবণ বেশি খেলে কয়েক ঘণ্টা পরে শরীরে প্রচুর পানির প্রয়োজন হয়। পনির এবং বাদামের অনেক উপকারিতা থাকলেও এতে থাকা লবণের কারণে শরীরে পানির চাহিদা বেড়ে যায়।
তিনি বলেন, সেহরির দ্বিতীয় ধাপে ক্ষেত্রে হবে শর্করা ও চিনি জাতীয় খাবার। এক্ষেত্রে দুই তিন টুকরো বা এক কাপ তাজা ফল খাওয়া ভাল, যেগুলোয় পানির পরিমাণ বেশি। যেমন তরমুজ, কমলা। এসব ফলের জুস করেও খেতে পারেন এক কাপ পরিমাণে। এরপর তৃতীয় বা শেষ ধাপে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি খেতে হবে।
রোজা রাখার সময় সেহরিতে চা এবং কফি পান করা এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছে ব্রিটেনের জাতীয় স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ। কারণ এসব পানি হলো মূত্রবর্ধক এবং এতে ক্যাফিন থাকে। এতে শরীর থেকে দ্রুত পানি বেরিয়ে যাবে। শরীরের তরল কমে যাওয়া মানে তা দ্রুত প্রতিস্থাপন করা প্রয়োজন। না হলে পানিশূন্যতা বা ডিহাইড্রেশন হবে। এর ফলে মাথাব্যথা, নিম্ন রক্তচাপ, কিডনি সমস্যা এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিতে পারে।
ক্লান্ত বা অলস বোধ করলে কী করবেন?
রমজানের টেবিলে খাবারের সমাহার কেমন হবে সেটি একেকটি পরিবারের আর্থিক পরিস্থিতির ওপরও নির্ভর করে। আবার রোজার মাসে অনেকে আত্মীয়-স্বজন এবং প্রতিবেশীদের সঙ্গে ইফতার বিনিময় করেন। প্রতিদিন তাদের টেবিলে হরেকরকম খাবার থাকে। এতে দেখা যায়, একজন ব্যক্তি ইফতারে তার প্রয়োজনের চেয়ে বেশি খায়। এতে তার কী ক্ষতি হচ্ছে সেটা তিনি বুঝতে পারেন না।
এই ভূরিভোজের ফলে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়, যেমন পেটে ব্যথা, পেট ভার লাগা, অলসতা, ঘুম ঘুম ভাব ইত্যাদি হয়। তবে কিছু মানুষের জন্য সমস্যাটি আরও গুরুতর হয়ে উঠতে পারে যদি তার উচ্চ রক্তচাপ বা রক্তে চিনির মাত্রা বেশি থাকে।
ফাদি আব্বাসের মতে, রোজার প্রথম দিনগুলো সবচেয়ে কঠিন, কারণ শক্তির উৎস হিসাবে শরীরের চর্বির প্রয়োজন শুরু হয় চার দিনের পর থেকে।
আব্বাস বলেন, সেহরির মতো ইফতারও তিনটি পর্যায়ে খেতে হবে, এক খাবার থেকে পরের খাবারের মধ্যে ছয় মিনিটের ব্যবধানে থাকতে হবে। কারণ আপনার পেট ভরেছে কিনা মস্তিষ্কের সেই সংকেত পেতে ১৮ মিনিট সময় লাগে। তাই এই সময়ের কথা মাথায় রেখেই খাবারের ধাপগুলো সাজানো প্রয়োজন।
ফাদি আব্বাস বলেন, প্রথম পর্যায়ে এক কাপ পানি খেয়ে রোজা ভাঙার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এই পানি খেতে হবে বসে থাকা অবস্থায় এবং তিনটি ধাপেই পানি যোগ করতে হবে।
ছয় মিনিট পর, দ্বিতীয় ধাপে আপনি রোজার সময় শরীরের যে শক্তি হারিয়েছেন তা পূরণ করবেন। এজন্য চিনি ও শর্করা জাতীয় খাবার খাওয়া শুরু করেন। সেটা হাতে তৈরি খাবারের পরিবর্তে প্রাকৃতিক খাবার হলে ভালো যেমন খেজুর বা তাজা ফলের রস।
তৃতীয় ধাপ শুরুর আগে আরও ছয় মিনিট অপেক্ষা করার কথা জানান ফাদি আব্বাস। পেটে চাপ না দেওয়ার জন্য একটি থালায় ছোট ছোট করে কাটা সালাদ খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। শাকসবজিতে থাকা ফাইবার শরীরকে ভিটামিন সরবরাহ করতে ও কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করতে খুব প্রয়োজনীয়।
তিনি আরও বলেন, সালাদের পরে, আপনার খুব বেশি হলে একটি বা দুটি খাবার খাওয়া উচিত, যাতে প্রোটিন এবং কার্বোহাইড্রেট থাকে। উদাহরণস্বরূপ, আলু, ভাত, রুটি, পিঠা, খিচুরি ইত্যাদি।
শুধুমাত্র এক ধরনের খাবারই বেছে নেবেন। একইভাবে প্রোটিনের ক্ষেত্রেও শুধুমাত্র এক ধরনের খাবার খাবেন যেমন: বিভিন্ন ধরনের শস্য, ডিম, চর্বিহীন মাংস ও দুগ্ধজাত খাবার।
এসব খাবার কতটা চিবিয়ে খাচ্ছেন সেটাও জরুরি। খাবার নরম হলে ৩০ সেকেন্ড ধরে চাবাবেন এবং শক্ত হলে যেমন মাংস এবং বাদাম এগুলো খেতে এক মিনিট ধরে চিবিয়ে খাবেন।
শরীরের জন্য প্রচুর পরিমাণে পানির প্রয়োজন থাকা সত্ত্বেও একবারে অনেক পানি খাওয়া এবং ভুল উপায়ে প্রচুর পরিমাণে পান করা অন্ত্র এবং কিডনির কাজকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।
অতএব আপনাকে অবশ্যই একটি স্বাস্থ্যকর পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে। সকালের নাস্তা খাওয়ার এক ঘণ্টা আগে একবারে দুই কাপের বেশি পানি পান করবেন না। তবে পানি খাওয়ার ক্ষেত্রে আপনার তৃষ্ণার্ত হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা উচিত নয়, বরং প্রতি ঘণ্টা বা দেড় ঘণ্টা পর পর আপনার পানি পান করা উচিত। এমনকি পানি পান করার সময় মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য আপনি অ্যালার্ম সেট করতে পারেন।
নারীরা কি পুরুষদের চেয়ে বেশি ধৈর্যশীল?
রমজান মাসের জন্য আগে থেকে চিন্তাভাবনা এবং পরিকল্পনা করার দক্ষতা সবার সমান নয়। এই মাসে খাদ্য এবং সামাজিক অভ্যাসের আকস্মিক পরিবর্তনের কারণে কেউ কেউ ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং বড় ধরণের সমস্যার মুখে পড়ে। এতে আশেপাশের লোকদের সঙ্গে তাদের সামাজিক যোগাযোগ বা তাদের কাজের গুণমানের ওপর প্রভাব পড়ে। যেমন দুই ভাই সাঈদ এবং ওসমান আলেপ্পো শহরে নির্মাণ কাজ করে।
সাঈদ বিবিসিকে জানিয়েছেন, যদিও আমি খুব ভালো করেই জানি যে এই পবিত্র মাসে আমাকে ধৈর্যশীল এবং প্রশান্ত মনের অধিকারী হতে হবে, কিন্তু দুপুরের মধ্যেই আমার মেজাজ চরম খিটখিটে হয়ে যায়। আমি আমার আচরণ নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে অন্যান্য শ্রমিকদের ওপর চিৎকার করি। পরে অবশ্য দ্রুতই আমি এর জন্য দুঃখিত হই এবং তাদের কাছে ক্ষমা চাই। কিন্তু এমন পরিস্থিতি আমার সঙ্গে বার বার হচ্ছে।
তার ভাই ওসমান বলেছেন, আমি প্রথম দিন ক্ষুধা সহ্য করতে পারি, কিন্তু এক সপ্তাহ পরে, আমি খুব তৃষ্ণার্ত বোধ করি এবং এর ফলে আমার মাথাব্যথা হয়। আমি একজন অসহ্য ব্যক্তি হয়ে উঠি, কিন্তু আমি আমার নার্ভাসনেস নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না।
এই ধরনের সমস্যার সম্মুখীন শুধুমাত্র সাঈদ এবং ওসমানেরই হন এমনটা নয়, বরং অনেক পুরুষই এই অভিজ্ঞতার সঙ্গে নিজেদের মিল পাবেন। তাই এ বিষয়ে পুষ্টি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মেনে চলাই বাঞ্ছনীয়। কারণ আপনি যে খাবার খান তা আপনার আচরণে বড় ভূমিকা রাখে।
এ বিষয়ে মরক্কোর খাদ্য, বিজ্ঞান এবং পুষ্টি বিশেষজ্ঞ মোহাম্মদ ফায়েদ বলেছেন, সাধারণত নারীরা পুরুষদের তুলনায় রোজা সহ্য করতে বেশি সক্ষম কারণ একজন নারীর শরীরে চর্বির পরিমাণ পুরুষের শরীরের তুলনায় বেশি। পুরুষদের পেশী ভর মহিলাদের পেশী ভরের চেয়ে বেশি।
ফায়েদের মতে, এর পেছনে বৈজ্ঞানিক কারণ রয়েছে এবং তা হল নারীদের মধ্যে এমন কিছু সক্রিয় হরমোন রয়েছে যা পুরুষদের চেয়ে বেশি, এবং তাদের মধ্যে আবার কিছু হরমোন পুরুষদের মধ্যে বেশি সক্রিয়।
ফায়েদ বলেন, এস্ট্রোজেন হরমোন মহিলাদের ক্ষুধা সহ্য করতে এবং যতক্ষণ সম্ভব শান্ত মেজাজে রাখতে সাহায্য করে, যা তাদের আবেগ এবং উদ্বেগের অনুভূতিগুলো মোকাবেলা করতে সহায়তা করে, যেখানে কিনা পুরুষদের মধ্যে টেস্টোস্টেরন হরমোনের আধিক্য বেশি। যা তাদের আবেগ, উদ্বেগ এবং উত্তেজনার অনুভূতিকে উদ্দীপিত করে।
ফায়েদ আরও জানান, একজন নারীর শরীরে সাধারণভাবে একজন পুরুষের চাহিদার তুলনায় কম খাবারের প্রযোজন হয়। নারীরা যখন প্রচুর পরিমাণে মাংস, হাঁস-মুরগি এবং পনির খান তখন হরমোনের উৎপাদন বেড়ে যায়।
তিনি বলেন, এতে তাদের স্নায়বিক অবস্থা প্রভাবিত হয়। কারণ এস্ট্রোজেন কোলেস্টেরলের সাথে যুক্ত। তাই প্রচুর পরিমাণে মাংস খাওয়ার ফলে কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পায় এবং এইভাবে নারীর স্নায়ুতে রক্তচাপ বৃদ্ধি পায়।
চাকরিজীবী নারী
পূর্বাঞ্চলীয় দেশগুলোয় নারীদের তুলনায় পুরুষরা বেশি বাইরে কাজ করে। বাইরে পুরুষদের কাজের প্রকৃতি এমন থাকে যেখানে তাদের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সাধারণভাবে নারীদের তুলনায় বেশি চলাফেরা করতে হয়। এর অর্থ হলো তারা নারীদের তুলনায় বেশি শক্তি এবং ক্যালোরি হারাতে পারেন।
তবে কর্মজীবী নারীদের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি ভিন্ন, তারা বাইরের কাজ তো করেনই পাশাপাশি বাড়ি ফিরে শিশুদের দেখাশোনা এবং গৃহস্থালির বড় বোঝা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তাকেই সামলাতে হয়।
এক্ষেত্রে নারীর ক্যালোরি খরচ হওয়ার হার একজন পুরুষের সমানই হয়। কখনও কখনও নারীরা পুরুষদের তুলনায় দ্বিগুণ কাজ করে, দ্বিগুণ ক্যালোরি খরচ করে।
ফায়েদের ধারণা একজন ব্যক্তির মেজাজ কেমন হবে সেটা অনেকটাই নির্ভর করে তিন ধরনের খাবার খাচ্ছেন তার ওপরে। তিনি বলেন, যারা প্রচুর মাংস খান তারা নিরামিষাশীদের তুলনায় বেশি আবেগপ্রবণ এবং মানসিক চাপে থাকেন।
তিনি জানান, একজন নারী, পুরুষের মতো একই পরিমাণে মাংস ও পনির খেলে তিনি একই মানসিক এবং স্নায়বিক পরিস্থিতিতে ভুগতে পারেন। যা কিনা একজন পুরুষ ভোগেন।
খেলাধুলা ও ব্যায়াম করার সেরা সময় কোনটি?
অনেকে বিশ্বাস করেন শরীরের অতিরিক্ত ক্যালোরি থেকে মুক্তি দেওয়ার জন্য তারাবির নামাজ যথেষ্ট ব্যায়ামের মতো কাজ করে। কিন্তু তা ঠিক নয়। তাই নামাজ পড়ার পাশাপাশি কিছু ধরনের ব্যায়াম করা দরকার যা হৃৎস্পন্দন বাড়িয়ে দেবে। এ বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন লন্ডন-ভিত্তিক পুষ্টি বিশেষজ্ঞ আইসন কোয়াঞ্জ।
পুষ্টি বিশেষজ্ঞ আইসন কোয়াঞ্জ বলেছেন, যেকোনো ধরনের ব্যায়াম শুরু করার আগে পাকস্থলীকে অবশ্যই হজম প্রক্রিয়া থেকে সম্পূর্ণ বিশ্রাম নিতে হবে। অর্থাৎ সেহরি বা ইফতারের অন্তত তিন ঘণ্টা পর ব্যায়াম শুরু করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, প্রথম দিনগুলোয় শরীরের উপর বেশি চাপ দেবেন না। এজন্য হালকা ব্যায়াম করুন যেমন হাঁটাহাঁটি করা, ঘরের মধ্যে হালকা ভারোত্তোলন করা, সিঁড়ি দিয়ে কয়েকবার ওঠা।
প্রতিদিন অল্প অল্প করে ব্যায়ামের এই হার বাড়ানো ভালো। একেকজন ব্যক্তির সক্ষমতা এবং স্বাস্থ্য পরিস্থিতি অনুযাযী ব্যায়ামের গ্রহণযোগ্য স্তর একেকরকম হবে। জনস্বাস্থ্য বজায় রাখতে বিশেষ করে রমজানে পানির গুরুত্ব ব্যাখ্যা করেছেন কোয়াঞ্জ।
এ সময় তিনি কোমল পানীয় এবং কৃত্রিমভাবে মিষ্টি করা পানীয় থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। এর পরিবর্তে সারা বিশ্বে ব্যাপক প্রচলিত এমন ভেষজ পানীয় যেমন ক্যামোমাইল টি, গ্রিন টি এবং অন্যান্য ভেষজ পানীয় খেতে বলেছেন। তবে কার জন্য কতোটুকু পানীয় সেটার পরিমাণ জেনে প্রত্যেককে তার বয়স অনুযায়ী পান করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
রোজা রেখে কিভাবে সময় কাটাবেন তার পরিকল্পনা
সৌদি আরবের রিয়াদ শহরের বাসিন্দা দুই সন্তানের মা আংহাম বিশ্বাস করেন যে রমজান মাসের জন্য তার আগাম পরিকল্পনা এই মাসটিকে স্বাচ্ছন্দ্যময় করে তুলতে পারে। এই মাসটি তার স্বাস্থ্যের উন্নতি, দক্ষতা বিকাশ এবং নিজেকে নিয়ে সন্তুষ্ট বোধ করার একটি মাস হয়ে উঠতে পারে।
তিনি বিবিসিকে বলেছেন, আমি রমজানের এক সপ্তাহ আগে থেকে বিরতিহীন রোজা রাখা শুরু করি যেন আমার শরীর ক্ষুধা সহ্য করার জন্য প্রস্তুত হয় এবং এভাবে রমজানে প্রতিদিনের রুটিনে আকস্মিক পরিবর্তনের সমস্যা থেকে নিজেকে রক্ষা করেছি। আরও জানান, প্রতি বছর আমি একটি লক্ষ্য নির্ধারণ করি যা আমি অর্জন করতে চাই। এই মাসে আমি দুইবার কোরান খতম করার পরিকল্পনা করেছি।
তিনি বলেন, সেইসঙ্গে আমার সন্তানদের যত্ন নেওয়ার পাশাপাশি তাদের কিছু কোরানের আয়াত মুখস্থ করানোর পরিকল্পনা করেছি। নিজেকে ঘরের কাজেও ব্যস্ত রাখি। সব মিলিয়ে সময় কিভাবে চলে যায় খেয়ালই করি না।
জর্ডানের আকাবায় বসবাসকারী ২৫ বছর বয়সি তরুণী নাদিয়া বলেছেন, আমি পড়াশোনা করার মাধ্যমে আমার ক্ষুধা ও তৃষ্ণার সঙ্গে লড়াই করি। তাই আমি এতদিন যেসব বই বা উপন্যাস পড়া হয়নি, সেগুলো পড়ে ফেলি, কিছু টিভি শো দেখি এবং আমার ইংরেজি ভাষা বিকাশে সময় ব্যয় করি।
এক কথায় নিজেকে দক্ষ করে তুলতে আমি এতটাই ব্যস্ত থাকি যে আমি আমার তৃষ্ণা বা ক্ষুধা নিয়ে ভাবার কোনো অবসর পাই না।
সূত্র: বিবিসি বাংলা।