মাওলানা সাজ্জাদ নোমানি
মানুষের সেবা ও তাদের উভয় জগতের সফলতার জন্যই মুসলমানদের সৃষ্টি করা হয়েছে
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ০৭ মার্চ ২০২৪, ১০:৫০ পিএম
বর্তমান বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ আলেম ভারতের মাওলানা খলিলুর রহমান সাজ্জাদ নোমান। ফাইল ছবি
বর্তমান বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ আলেম ভারতের মাওলানা খলিলুর রহমান সাজ্জাদ নোমানি একজন ইসলামি পণ্ডিত, অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডের মুখপাত্র, শিক্ষাবিদ এবং বহু ইসলামী বইয়ের লেখক। তিনি নকশবন্দি তরিকার একজন পণ্ডিত, যা সুফিবাদের একটি প্রধান সুন্নি আধ্যাত্মিক তরিকা।
সম্প্রতি লখনৌর ইন্দিরা নগরের বিখ্যাত জামে মসজিদে তাফসিরুল কুরআন সেমিনারে বক্তব্য রাখেন। এ সেমিনারে ভারী বর্ষণ সত্ত্বেও দূর-দূরান্ত থেকে বিপুল সংখ্যক কুরআনপ্রেমী মুসলিম উপস্থিত ছিলেন।এতে বিপুল সংখ্যক নারীও অংশ নেন।
শায়খ সাজ্জাদ নোমানির এ বক্তব্যটি ভারতের বিখ্যাত ইসলামিক পোর্টাল মিল্লাত টাইমস থেকে ভাষান্তর করেছেন- ইনজামামুল হক
দীর্ঘ একটা সময় সারা বিশ্ব মুসলিমদের হাতেই ছিল। কিন্তু মুসলিম সমাজে যখন ব্যক্তিকেন্দ্রিক চিন্তা এসে গেল ঠিক তখন থেকেই পরিস্থিতি পাল্টে যায়। আমাদের জীবনধারা এমন হওয়া উচিত যাতে তা সমাজের সব চাহিদা পূরণ এবং সমাজে নিজেদের গ্রহণযোগ্যতা ও বিশ্বাসের পরিবেশ তৈরি করে।
বিজ্ঞান-প্রযুক্তির আসল উদ্দেশ্য হওয়া উচিত মানুষের উপকার করা। আগে চিকিৎসা বিজ্ঞানের শিক্ষা অর্থ উপার্জনের মাধ্যম ছিল না, বরং তা মানুষের উপকারের এক বড় মাধ্যম ছিলো। কিন্তু ইউরোপ এটিকে বাণিজ্যিকীকরণ করে শুধু অর্থ উপার্জনের মাধ্যম বানিয়েছে। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বিপুল সংখ্যক মানুষ যাতে উপকৃত হতে পারে সেজন্য স্বাস্থ্য খাতে সেবার মনোভাব নিয়ে কাজ করা প্রয়োজন।
আল্লাহ আমাদেরকে সর্বক্ষেত্রে মানবজাতির সেবা করার জন্য মনোনীত করেছেন এবং দ্বীনকে সহজ করেছেন। কেউ যদি ধর্মকে কঠিন মনে করে, তবে সেই বিশেষ ব্যক্তির মধ্যে কোনো কিছুর অভাব রয়েছে।
মুসলমানদের পরিচয় কি? আল্লাহর বাণী পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব মুসলমানদের-।কিন্তু আজ মুসলিমরা সমাজের অন্য ধর্মের মানুষের সঙ্গে মেলামেশা করে না। আজ আমাদের মাঝে দাওয়াতি মনোভাবের শূন্যতা রয়ে গেছে। ইসলাম সম্পর্কে গভীর উপলব্ধি এবং সাধারণ মানুষের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণের মাধ্যমে আল্লাহর বাণী ছড়িয়ে দেওয়া মুসলমানদের দায়িত্ব। নারীরাও এ কাজে আরও ভালো ভূমিকা রাখতে পারে।
দাওয়াতি মনোভাবের শূন্যতা পূরণের দায়িত্ব রাজনৈতিক নেতাদের ওপর ছেড়ে দেওয়া যাবে না। এখন দলিত সমাজও অন্ধ অনুকরণ থেকে দূরে সরে যাচ্ছে।
তাই মুসলমানদের উচিত সমাজের সব শ্রেণী তথা শিখ, খ্রিস্টান, দলিত, আদিবাসী ও বৌদ্ধসহ সবার মাঝে দাওয়াতি কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া ও তাদের মাঝে ইসলামের অমিয় বানী পৌঁছে দেওয়া। যদি আপনি এমন না করেন তাহলে মনে রাখবেন আপনি কুরআন ও শরীয়তের পরিপন্থী কাজ করছেন।
মুসলিম সমাজের উচিত তার সম্পদের ব্যবহার উত্তম স্থানে করা। কারণ আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করা জাতিই শক্তিশালী হয় এবং অপব্যবহারের মাধ্যমে জাতি দুর্বল হয়। ধন-সম্পদের কোন মূল্য নেই, এটা নিন্দনীয় এক জিনিস- এখন এই দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করা প্রয়োজন।
বিয়েতে বাড়াবাড়ি বন্ধ করা এখন সময়ের গুরুত্বপূর্ণ ও জরুরি বিষয়। মুসলমানদেরকে খেদমতের ময়দানে সংগঠিত হতে হবে এবং সত্যের উপর অটল থাকার জন্য আল্লাহর রজ্জুকে দৃঢ়ভাবে ধারণ করতে হবে।