শবে মেরাজের নামাজ ও রোজা কয়টি!
মুহাম্মদ এনায়েত কবীর
প্রকাশ: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৭:৩৬ পিএম
শবে মেরাজ মানে প্রিয় নবীজির মেরাজ গমনের রাত। এ রাতে আমাদের নবীজি আল্লাহর দরবারে উপস্থিত হয়ে তার নৈকট্য লাভের এক অনন্য মর্যাদা ও গৌরব লাভ করেন।
শবে মেরাজ এলে বিভিন্ন প্রশ্ন শোনা যায়। যেমন শবে মেরাজের রোজা কয়টি বা শবে মেরাজের নামাজ কিভাবে পড়তে হয়, কয় রাকাত পড়তে হয়?
মূলত শবে মেরাজের আলাদা কোনো নফল নামাজ, রোজা বা ইবাদত নেই । কুরআন হাদিসে শবে মেরাজের স্বতন্ত্র নফল কোনো ইবাদতের কথা বলা হয়নি।
মেরাজের ঘটনার পর নবীজি অনেক দিন জীবিত ছিলেন; কিন্তু পরবর্তী বছরগুলোতে তিনি নিজে শবে মেরাজ পালন করেননি বা করতেও বলেননি। সাহাবায়ে কেরামও মেরাজ দিবস বা মেরাজের নফল কোনো নামাজ রোজা পালন করেননি। তাই শুধু শবে মেরাজকে কেন্দ্র করে নামাজ বা রোজা করলে তা মনগড়া আমল এবং বেদাত বলে গণ্য হবে। আর মনগড়া আমলে কোনো সওয়াব নয় বরং গুনাহ হবে।
শুধু শবে মেরাজকেন্দ্রিক নামাজ রোজা পালনে বারণ করলে কেউ কেউ বাঁকা কথা বলেন। তারা বলেন, আরে ভাই, কেউ শবে মেরাজের নামাজ রোজা করে তো কোনো পাপের কাজ করছে না। এতে তেমন কী সমস্যা? তাদেরকে বলি, আপনার ধানের জমিতে আগাছা ফেলে দেন কেন? এতে তেমন কি আর সমস্যা?
আপনি উত্তর দেবেন যে, বাম্পার ফলনের জন্য আগাছা কেটে ফেলতে হয়। ঠিক তেমনিভাবে ইমান ও আমলের ভালো ফলাফলের জন্যও বেদাত নামক আগাছা থেকে নিজেকে মুক্ত রাখতে হয়। ইসলাম যেসব কাজের আদেশ করেননি সেগুলো থেকে নিজেকে মুক্ত রাখতে হয়। কারণ এগুলো হলো ইমান আমলের ভালো ফলাফলের পথে আগাছা।
হযরত ওমর (রা.)-এর রাজত্বকালের ঘটনা। তিনি জানতে পারলেন যে, কিছু মানুষ শবে মেরাজের রোজা রাখে। তিনি টহলে বের হলেন। লোকদের ঘরে গিয়ে শবে মেরাজের রোজা রেখেছে কিনা জিজ্ঞাসাবাদ করতে লাগলেন। কেউ রোজা রেখেছে বলে মনে হলে তাকে ধমকের সুরে বলতেন, তুমি যে রোজা রাখোনি আমার সামনে খাবার খেয়ে এর প্রমাণ দাও।
নবীজি মেরাজে গিয়ে আমাদের জন্য দৈনিক ৫ ওয়াক্তে ১৭ রাকাত ফরজ নামাজ নিয়ে এসেছেন। ফজরে ২ রাকাত ফরজ, জোহরে ৪ রাকাত ফরজ, আসরে ৪ রাকাত ফরজ এবং মাগরিবের ৩ রাকাত, এশায় ৪ রাকাত ফরজ। এই মোট সতেরো রাকাত।
নামাজ ছাড়া অন্য কোনো ফরজ ইবাদত দেওয়ার জন্য আল্লাহতালা নবীজিকে কাছে ডেকে নেননি। সুতরাং প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্তে সতেরো রাকাত ফরজ নামাজকে অনিবার্য এবং জরুরি ধরে নিতে হবে। মূলত দৈনিক ১৭ রাকাত ফরজ নামাজই শবে মেরাজের নামাজ।
লেখক: শিক্ষক, শেখ জনূরুদ্দীন রহ. দারুল কুরআন চৌধুরীপাড়া মাদরাসা, ঢাকা-১২১৯