ইজতেমায় এলে কি হজের সওয়াব হয়?
মুহাম্মদ এনায়েত কবীর
প্রকাশ: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৮:৪৮ পিএম
ইজতেমা আরবি শব্দ। অর্থ হলো সমাবেশ বা সম্মেলন। ইজতেমার উদ্দেশ্য হলো মানুষের হৃদয়ে ঈমান ও তাকওয়ার বোধ জাগ্রত করা। দেশ ধর্ম ও মানুষের প্রতি কল্যাণের মানসিকতা সৃষ্টি করা।
এক কথায় বললে- ধর্মের প্রতিটি শাখার বিস্তারিত বয়ান এবং অনুশীলন হয় ইজতেমায়।
তাবলিগ অর্থ প্রচার প্রসার। সারা বিশ্বে ইসলামের প্রচার-প্রসারে দাওয়াত ও তাবলিগ অন্যতম মাধ্যম এই তাবলিগ। যদিও আমাদের সমাজে প্রচলিত তাবলিগের পথচলা শুরু হয়েছে ভারতে। দারুল উলুম দেওবন্দের ছাত্র মাওলানা ইলিয়াসের (রহ.) হাত ধরে; কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তাবলিগের মূল দায়িত্ব পালন করেছেন আমাদের প্রিয় নবীজি।
আল্লাহ তায়ালা আমাদের নবীজিকে দ্বীনের তাবলিগ করার দায়িত্ব দিয়ে বলেন, হে রাসূল, আপনার রবের পক্ষ থেকে আপনার কাছে যা নাজিল করা হয়েছে, তা তাবলিগ করুন বা পৌঁছে দিন। সূরা মায়েদা আয়াত- ৬৭।
সুতরাং তাবলিগকে আড় চোখে দেখার কোনো সুযোগ নেই। কারণ তাবলিগের কাজ স্বয়ং প্রিয় নবীজি থেকে নিয়ে অসংখ্য সাহাবী এবং অলি আউলিয়ান করে গেছেন।
তাবলিগের ইজতিমায় ব্যাপারে কেউ যদি ভুল মানসিকতা পোষণ করে সেটা একান্তই তার ব্যক্তিগত ভুল। এর দায় ইজতেমা বা তাবলিগের নয়। এদেশের মানুষ অনেক রকম বৈচিত্র্যময় ভুল বিশ্বাস পোষণ করে।
এখন কেউ যদি মনে করে যে, শুধু ইজতেমায় আসলেই সব গোনাহ মাফ হয়ে যাবে। তিনবার ইজতেমায় গেলে এক হজের সওয়াব পাওয়া যাবে কিংবা ইজতেমা হলো গরিবের হজ- তাহলে এগুলো একান্তই তার নিজস্ব ব্যক্তিগত ভুল বিশ্বাস।
আমাদের প্রিয় নবীজি এবং সাহাবীগণও তাবলিগের কাজ করতে গিয়ে প্রচণ্ডরকম জুলুমের শিকার হয়েছেন। দেশান্তরিত হয়েছেন। তাদের শরীর রক্তাক্ত হয়েছে। লাঞ্ছনার হেন কোনো পন্থা নেই যা তাদের ওপর প্রয়োগ করা হয়নি; কিন্তু এ সত্ত্বেও তাদের কেউই তাবলিগের কাজকে হজের সমতুল্য বলে ঘোষণা করেননি।
তাবলিগের কোনো দায়িত্বশীল ব্যক্তি বা আলেমও এ দাবি কখনই করেননি। কোন ফতোয়া বা অন্য কোনো গ্রন্থেও এমন কথার সমর্থন পাওয়া যায় না।
সুতরাং কিছু মানুষের ভুল বিশ্বাসের কারণে তাবলিগ বা ইজতেমা নিয়ে সমালোচনা বা তির্যক মন্তব্য করা কখনো যৌক্তিক নয়।
লেখক: শিক্ষক, শেখ জনূরুদ্দীন রহ. দারুল কুরআন চৌধুরীপাড়া মাদরাসা, ঢাকা-১২১৯