নামাজে ইমামের পেছনে সুরা ফাতিহা পড়া যাবে কি?
মুফতি তরিকুল ইসলাম
প্রকাশ: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৭:১৫ পিএম
ইমাম যখন কিরাত পড়ে তখন মুক্তাদির জন্য তার কিরাত শোনা ও চুপ থাকা আবশ্যক। ইমামের কিরাতই হচ্ছে মুক্তাদির কিরাত। ইমামের কিরাতই মুক্তাদির জন্য যথেষ্ট। তাই তাকে আলাদা করে কিরাত পড়তে হবে না।
আল্লাহ তায়ালা বলেন, আর যখন কুরআন পড়া হয় তখন তোমরা মনোযোগ দিয়ে শোন ও চুপ থাক। যাতে তোমাদের প্রতি রহম করা হয়। (সুরা আরাফ, আয়াত:২০৪)
তাই ইমাম যখন কুরআন পড়ে তখনো কুরআন শুনতে হবে ও চুপ থাকতে হবে। এটি কুরআনের আদেশ।
হাদিসে এসেছে, আবু মূসা আশআরী (রা.) বলেন- রাসুলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের মাঝে ভাষণ দিলেন। আমাদেরকে দ্বীনের পথ বুঝিয়ে দিলেন। তিনি আমাদেরকে নামাজ শেখালেন। তিনি বললেন, তোমরা যখন নামাজ পড়বে তখন কাতার সোজা করবে। অতঃপর তোমাদের একজন যেন ইমামতি করে। ইমাম যখন তাকবির বলবে তখন তোমরাও তাকবির বলবে। আর যখন ইমাম পড়ে তখন তোমরা চুপ থাকবে। ইমাম যখন ‘গাইরিল মাগদু বিআলাইহিম ওয়ালাদ দল্লীন’ বলবে তখন তোমরা আমিন বলবে। (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৪০৪, সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ৯৭৩)
এ হাদিসে নামাজে ইমামের কী কাজ, আর মুক্তাদির কী কাজ, আল্লাহর রাসুল (সা.) তা বলে দিয়েছেন। কিরাতের সময় কার কী কাজ তা বলে দেওয়া হয়েছে।
বলা হয়েছে, কিরাত ইমামের কাজ আর চুপ থাকা (ও শোনা) মুক্তাদির কাজ। এবং ইমাম পড়ার সময় মুক্তাদিকে চুপ থাকার আদেশ করা হয়েছে।
অন্য হাদিসে এসেছে, আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন- ইমামকে তো ইমাম বানানো হয়েছে তার অনুসরণের জন্য। ইমাম যখন তাকবির বলে তখন তোমরাও তাকবির বলবে। আর যখন ইমাম পড়ে তখন তোমরা চুপ থাকবে। ইমাম যখন ‘সামিআল্লাহু লিমান হামিদা’ বলবে তখন তোমরা ‘আল্লাহুম্মা রব্বানা লাকাল হামদ’ বলবে।
(সুনানে নাসায়ী, হাদিস: ৯২০, সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ৬০৩, ইমাম মুসলিম রহ. বলেন- এ হাদিস সহিহ। -সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৪০৪)
এ হাদিসেও ইমাম ও মুক্তাদির কাজের বণ্টন করা হয়েছে। ইমামের কাজ বলা হয়েছে পড়া আর মুক্তাদির কাজ চুপ থাকা। অতএব মুক্তাদি ইমামের পিছনে কিরাত পড়বে না; বরং চুপ থাকবে।
আরেক হাদিসে এসেছে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন- যার ইমাম আছে, ইমামের কিরাতই তার কিরাত। (মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদিস: ৩৮২৩, মুআত্তা মুহাম্মাদ, পৃষ্ঠা: ৯৭)
অর্থাৎ ইমামের কিরাতই মুক্তাদির জন্য যথেষ্ট। মুক্তাদির আলাদা কিরাত পড়তে হবে না।