মালদ্বীপে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছেন বাংলাদেশি হাফেজ কামরুল আলম
মুহাম্মদুল্লাহ
প্রকাশ: ৩১ মার্চ ২০২৩, ১০:০৬ এএম
হাফেজ কামরুল আলম।
সামাজিক যোগাযোগামাধ্যমে নিয়মিত কুরআন তিলাওয়াতের ভিডিও শেয়ার করতেন। চলতি বছরের শুরুতে নজরে পড়েন পৃথিবীর অন্যতম নয়নাভিরাম ও অপরূপ সৌন্দর্যের দেশ মালদ্বীপের। শুরু হয় বাংলাদেশি প্রবাসীদের যোগাযোগের চেষ্টা।
সব ধরনের প্রক্রিয়া শেষে এখন দেশটির ফুবামুলাহর মসজিদ আল ইনারায় সুললিত কণ্ঠে তারাবির নামাজ পড়িয়ে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছেন বাংলাদেশি হাফেজ কামরুল আলম।
সিলেট জেলার বালাগঞ্জের হাসামপুর গ্রামের বাসিন্দা কামরুল আলম। মাহবুবুর রহমান ও সাহেদা বেগম দম্পতির দ্বিতীয় সন্তান। প্রাইমারি স্কুলে পড়ার পর ভর্তি হন মাদ্রাসায়। জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেটের (জেডিসি) পরীক্ষার পর। নিজ ইচ্ছায় বাবা-মা কে বলে প্রাইভেট মাদ্রাসায় ভর্তি হয়ে দুই বছরের মাথায় হিফজুল কুরআন শেষ করেন তিনি। বর্তমানে আলিম দ্বিতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত আছেন এই হাফেজ।
হাফেজ কামরুল আলম বলেন, ২০১৮ সাল থেকেই তারাবি পড়াচ্ছেন। ২০২১ সালে সিলেট শহরের মসজিদ আত-তাক্বওয়ায় তারাবির ইমামতি করি। গত বছর চট্টগ্রাম জেলা মডেল মসজিদে ইমামতি করি। তো সেই তারাবি নামাজের পবিত্র কুরআন তিলাওয়াতের ভিডিও ইউটিউবে মালদ্বীপের একটি সরকারি মসজিদ কমিটি দেখতে পান। খোঁজ নিয়ে দেখলেন আমি বাংলাদেশি। তখন তারা প্রবাসী বাংলাদেশিদের মাধ্যমে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তাদের মসজিদে রমজানের তারাবি নামাজের জন্য আমন্ত্রণ জানান।
কামরুল জানান, পাসপোর্ট ও ব্যক্তিগত সনদপত্র দেখতে চান তারা। প্রয়োজনীয় নথিপত্র জমা দেওয়ার পর সরকারিভাবে স্পেশাল ভিসা দিয়ে তাকে বিমানের টিকিট দেওয়া হয়।
তিনি জানান, হুলুমালে অবস্থিত মসজিদ আল শেখ কাসিম বিন আল-থানিতে (হুলহুমালে গ্র্যান্ড মসজিদ) এ অতিথি ইমাম হিসেবে প্রথম রমজানের তারাবির নামাজ পড়ান। এটি মালদ্বীপের মধ্যে অন্যতম নান্দনিক এবং বড় মসজিদ। সেখানে একসঙ্গে ১ হাজার ৫০০ জনেরও বেশি মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন।
তিনি বলেন, মালদ্বীপে অনেক বাংলাদেশি রয়েছেন। যারা এই রমজানে দেশে যাওয়ার ইচ্ছা করেছিলেন। কিন্তু আমি সেখানে যাবো শুনে এবং নামাজ পড়ানোর পর অনেকে আর দেশে যাননি। তারা নিয়মিত আমার পেছনে তারাবির নামাজ পড়ছেন। অনেক প্রবাসী বাংলাদেশি আমাকে মক্কার পবিত্র মসজিদুল হারামের ইমাম শায়খ ড. আবদুর রহমান আল-সুদাইসের সুরে তিলাওয়াতের কারণে সুদাইস বলে ডাকেন। এতে নিজেকে গর্বিত মনে হয়। এবং তাদের দেশের মানুষ ও অনেক প্রশংসা করছে প্রবাসী ভাইদের সাথে। আসলেই আমি হিফজ শুরু থেকেই শাইখ সুদাইসকে খুব বেশি অনুসরণ করতাম। তার তিলাওয়াতের ধরন, সুর ও কণ্ঠ আয়ত্তে আনার চেষ্টা করতাম।
তিনি আরও বলেন, শুরুতে হিরিলান্দো আইল্যান্ডের মসজিদ আল লুবাবিতে নামাজ পড়ানোর কথা ছিল। পরে মালদ্বীপের সাবেক সংসদ সদস্য আলি ফাজাদ আমন্ত্রণ করেন, মিনিস্ট্রি থেকে কথা বলে ট্রান্সফার করে নেন মসজিদ আল ইনারায়, যেটি ফুভাহমুলা সিটিতে। বর্তমানে এই মসজিদেই ২০ রাকাত তারাবির পাশাপাশি ৮ রাকাত কিয়ামুল লাইলের নামাজ পড়াচ্ছি।
মালদ্বীপে অবস্থানরত বাংলাদেশি এবং সেখানকার স্থানীয়দের আন্তরিকতা ও ভালোবাসা পেয়ে নিজেকে ভাগ্যবান মনে হচ্ছে।