ঈমানের পরিবেশে ফুটে ওঠে ইসলামের সৌন্দর্য
মুফতি সাদেকুর রহমান
প্রকাশ: ১৪ জানুয়ারি ২০২৩, ১১:২৪ পিএম
মগবাজার টু টঙ্গী ময়দান। যেখানে রাস্তার দূরত্ব সর্বোচ্চ ১ ঘন্টা। সেখানে ব্যয় হল ৭ ঘন্টা। তবুও নেই কোন বিরক্তি । চেহারায় খেলছে তৃপ্তির দ্যুতি।
বিশ্ব ইজতেমার মুসল্লিরা বাঁধ ভাঙ্গা পানির মতো ছুটে যাচ্ছেন টঙ্গীর ময়দানে। কোন জবরদস্তি নেই। বলা-কওয়া নেই। স্বতঃস্ফূর্তভাবে যাচ্ছেন তারা। ময়দানে পৌঁছে যে সেখানে খুব আরামে সময় কাটাচ্ছে তেমন নয়। বাথরুমে গেলে সিরিয়াল। ওজু করতে গেলে সিরিয়াল। যেখানে যায় সেখানেই সিরিয়াল। শুধু সিরিয়াল আর সিরিয়াল।
শামিয়ানার নিচে পা ফেলাই বড় দায়। রাস্তার ধারে, নদীর তীরে যে যেখানে পারছে মাথা গোঁজার একটু ঠাঁই করে নিচ্ছে। এতেই তারা খুশি।
যারা শামিয়ানায় ঠাঁই পেয়েছে তাদের অবস্থাও বেহাল। শরীর, বিছানা ও কাপড়-চোপড় ধুলোয় ধূসরিত। ঘুমন্ত ব্যক্তির শরীরে যাতায়াতকারীর পা লাগছে। অনিচ্ছাকৃত হোঁচট খাচ্ছে তবুও কোন প্রতিবাদ নেই। কোন বকা-ঝকা নেই। উল্টো হাসি মুখে বিদায় জানাচ্ছে। সমবেদনা জ্ঞাপন করছে।
অথচ বাড়ি-ঘরে এই মানুষগুলোর শরীরে অনিইচ্ছাকৃত কারো পা লাগলেও হাজার বার ক্ষমা চাইতে হয়। আর ইচ্ছাকৃত হলে তো কথাই নেই। হাত-মুখ সমানে চলে। কিন্তু এখানে কেন রাগ করে না? কোন আইন তাদেরকে এতটাই বাধ্যগত করেছে? এটা যে ঈমানী শক্তি।
ঈমানী পরিবেশের ফল। ইখলাস ও লিল্লাহিয়াতের বরকত।এটা যে ধৈর্যশীলতা ও ভ্রাতৃত্বের এক অপূর্ব সবক। এতেই বুঝা যায়, ঈমানী শক্তির উপরে আর কোন শক্তি নেই।
ঈমানই পারে মানুষকে শেকড় থেকে শিখরে পৌঁছাতে। অহংকারীকে বিনয়ী করতে। ঈমানই পারে আইন-কানুন ছাড়া স্বতঃস্ফূর্ত শৃঙ্খলা বজায় রাখতে।
কোন অমুসলিম ‘বিশ্ব ইজতেমার’ এই পরিবেশ সরাসরি দেখলে নিঃসন্দেহে তার অন্তর আন্দোলিত হবে। ইসলামের সৌন্দর্য তার ফ্রেমে ধরা পড়বে।ইসলামকে নতুনভাবে ভাবতে উৎসাহিত হবে।
বিস্তর রিসার্চের প্রয়োজন উপলব্ধি হবে। হেদায়েত লেখা থাকলে নসিব হবে।
আয় রাব্বে কারিম! আপনি এই পরিবেশকে আরো নূরানী ও প্রাণবন্ত করুন। এর বরকত ও কল্যাণ বিশ্বময় ছড়িয়ে দিন। আমীন