Logo
Logo
×

ইসলাম ও জীবন

দোয়া কবুল না হওয়ার পাঁচ কারণ

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০৭:৪৫ পিএম

দোয়া কবুল না হওয়ার পাঁচ কারণ

ছবি: সংগৃহীত

দোয়া মুমিনদের হাতিয়ার। দোয়ার মাধ্যমে অসম্ভবকেও সম্ভব করা যায়। এমনকি দোয়ার ফলে ভাগ্যও ঘুরে যায়। 

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা আমার কাছে দোয়া করো। আমি তোমাদের দোয়া কবুল করব’ (সূরা মুমিন, আয়াত ৬০।) আরবি দোয়া শব্দের অর্থ ডাকা, আহ্বান করা, প্রার্থনা করা, কোনো কিছু চাওয়া ইত্যাদি।

রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘দোয়া ছাড়া আর কিছুই আল্লাহর সিদ্ধান্তকে বদলাতে পারে না।’ (তিরমিজি, হাদিস নম্বর ২১৩৯।) দোয়া সব ইবাদতের মূল।

দোয়া কবুলের অনেক শর্ত আছে। আল্লাহর উদ্দেশে একমাত্র তার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য খালেস দিলে দোয়া করতে হবে। 

অনেক মানুষ এমন রয়েছে যাদের দোয়া আল্লাহতায়ালা কবুল করেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন। 

নিরাশ না হওয়া: দোয়ার পর আল্লাহর প্রতি পূর্ণ বিশ্বাস রাখতে হবে যে আল্লাহ আমার দোয়া কবুল করবেন। নেতিবাচক কোনো চিন্তা করা যাবে না। অন্যথায় এ দোয়া কবুল নাও হতে পারে। 

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেছেন, তোমাদের প্রত্যেক ব্যক্তির দোয়া কবুল হয়ে থাকে। যদি সে তাড়াহুড়া না করে আর বলে যে, আমি দোয়া করলাম, কিন্তু আমার দোয়া তো কবুল হলো না। (বুখারি, হাদিস : ৬৩৪০)

হারাম থেকে বেঁচে থাকা: দোয়া কবুল হওয়ার অন্যতম শর্ত হচ্ছে হারাম খাদ্য, বস্ত্র, পানীয় ইত্যাদি পরিহার করা। 

হারাম উপার্জনে নিজেকে সম্পৃক্ত করে যতই দোয়া করা হোক, তা আল্লাহর দরবারে গৃহীত হয় না। 

রাসুল (সা.) এক ব্যক্তির কথা উল্লেখ করেন, দীর্ঘ সফরের ক্লান্তিতে যার মাথার চুল বিক্ষিপ্ত, অবিন্যস্ত ও পুরো শরীর ধুলোমলিন। 

সে আসমানের দিকে হাত প্রশস্ত করে বলে, হে আমার প্রভু! হে আমার প্রতিপালক! অথচ তার খাদ্য ও পানীয় হারাম, তার পোশাক হারাম, তার জীবন-জীবিকাও হারাম। 

এমতাবস্থায় তার দোয়া কিভাবে কবুল হতে পারে? (তিরমিজি, হাদিস : ৮৯৬৯)

আল্লাহপ্রদত্ত দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়া : হুজাইফা ইবনুল ইয়ামান (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেছেন, সেই সত্তার শপথ, যাঁর হাতে আমার প্রাণ! নিশ্চয়ই তোমরা সৎ কাজের জন্য আদেশ করবে এবং অন্যায় কাজের প্রতিরোধ করবে। তা না হলে আল্লাহ তাআলা শিগগির তোমাদের ওপর তাঁর শাস্তি অবতীর্ণ করবেন। তোমরা তখন তাঁর কাছে দোয়া করলেও তিনি তোমাদের সেই দোয়া গ্রহণ করবেন না। (তিরমিজি, হাদিস : ২১৬৯)

আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করা: আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করা একটি বড় ধরনের পাপ। এই পাপের শাস্তি দুনিয়া ও আখিরাত উভয় জায়গাতেই ভোগ করতে হবে বলে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। 

হাদিসে এসেছে, ‘কোনো মুসলিম দোয়া করার সময় কোনো গুনাহের অথবা আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নের দোয়া না করলে অবশ্যই আল্লাহ তাকে এ তিনটির কোনো একটি দান করেন। (১) হয়তো তাকে তার কাঙ্ক্ষিত সুপারিশ দুনিয়ায় দান করেন, (২) অথবা তা তার পরকালের জন্য জমা রাখেন এবং (৩) অথবা তার কোনো অকল্যাণ বা বিপদাপদ তার থেকে দূরে করে দেন। 

সাহাবিরা বলেন, তাহলে তো আমরা অনেক বেশি লাভ করব। তিনি বলেন, আল্লাহ এর চেয়েও বেশি দেন। (আত-তারগীব, হাদিস : ১৬৩৩)

দোয়ায় পূর্ণ মনোযোগ না থাকা: দোয়ার সময় পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে দোয়া করতে। আল্লাহ অবচেতন মনের দোয়া গ্রহণ করেন না। 

রাসুল (সা.) বলেছেন, তোমরা কবুল হওয়ার পূর্ণ আস্থা নিয়ে আল্লাহর কাছে দোয়া কোরো। জেনে রেখো, আল্লাহ অমনোযোগী ও অসাড় মনের দোয়া কবুল করেন না। (তিরমিজি, হাদিস : ৩৪৭৯)

দোয়ার সুন্নাত তরিকা হল- আল্লাহর প্রশংসা এবং রাসূল (সা.)-এর ওপর দরূদ পড়ে দোয়া করা। বিনয় কাকুতি-মিনতি করে দোয়া করা এবং দোয়া কবুলের ব্যাপারে তাড়াহুড়া না করা। 

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেছেন, ‘তোমরা নিজের প্রতিপালককে ডাক, কাকুতি-মিনতি করে এবং সঙ্গোপনে। তিনি সীমা অতিক্রমকারীদের পছন্দ করেন না’ (সূরা আরাফ, আয়াত ৫৫।) 

আশা ও ভয়ভীতি নিয়ে দোয়া করা। এ সম্পর্কে আল্লাহতায়ালা বলেছেন, ‘তাঁকে ডাকো ভয় ও আশা নিয়ে’ (সূরা আরাফ, আয়াত ৫৬।) 

সম্ভব হলে অজু করে কেবলামুখী হয়ে দোয়া করা। নিজের গোনাহের কথা স্বীকার করে আল্লাহর নেয়ামতের স্বীকৃতি দেয়া। 

Jamuna Electronics
wholesaleclub

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম