মুসলিম উম্মাহর মননে ঐক্য ও সংহতি নির্মাণ করে হজ
মিজান রেহমান
প্রকাশ: ২৫ জুলাই ২০২০, ১০:০৪ এএম
ছবি: সংগৃহীত
হজ ইসলামের পঞ্চম ও সর্বশেষ স্তম্ভ। শাওয়াল, জিলকদ ও জিলহজ- এই তিন মাসকে হজের মৌসুম বলা হয়।
কুরআনে এসেছে, হজ সুপরিচিত মাসগুলোতে অনুষ্ঠিত হয়। অতঃপর যে ব্যক্তি এ মাসগুলোতে হজ করার নিয়ত করবেন, তার জন্য হজের সময় স্ত্রী সহবাস, অন্যায় আচরণ এবং ঝগড়া-বিবাদ করা বৈধ নয়।
আর তোমরা যে উত্তম কাজগুলো কর, আল্লাহ তা জানেন। তোমরা পাথেয় সংগ্রহ কর, নিঃসন্দেহে সবচেয়ে উত্তম পাথেয় হচ্ছে আল্লাহভীতি। অতএব, হে বুদ্ধিমান ব্যক্তিগণ- তোমরা আমাকেই ভয় কর (সুরা বাকারা: ১৯৭)।
পৃথিবীর প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে লাখ লাখ খোদাপ্রেমিক মুমিন আল্লাহর নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে মক্কার জমিনে হাজির হয়ে থাকেন হজের মৌসুমে। হজ অর্থ সংকল্প করা, ইচ্ছা করা।
বাইতুল্লাহ শরিফ ও অন্যান্য নির্দিষ্ট স্থানসমূহ আল্লাহর নৈকট্য লাভের লক্ষ্যে জিয়ারত করাকে হজ বলা হয়। সামর্থ্যবান ব্যক্তির ওপর হজ ফরজ করা হয়েছে। হজ একটি অনন্য ফজিলত ও বরকতময় ইবাদত এবং আল্লাহর নৈকট্য লাভের অন্যতম হাতিয়ার।
কুরআনে বর্ণিত হয়েছে, অতঃপর তারা যেন তাদের অপরিচ্ছন্নতা দূর করে তাদের মানত পূর্ণ করে ও তাওয়াফ করে প্রাচীন গৃহের (কাবার) (সুরা হাজ্জ-২৯)।
আরও এসেছে- নিশ্চয়ই সর্বপ্রথম গৃহ, যা মানবমণ্ডলীর জন্যে নির্দিষ্ট (প্রতিষ্ঠা) করা হয়েছে; তা ঐ ঘর, যা মক্কায় অবস্থিত। ওটা সৌভাগ্যযুক্ত (বরকতময়) এবং সমস্ত বিশ্ববাসীর জন্য পথপ্রদর্শক (সুরা ইমরান: ৯৬)।
নবী করিম (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি এ ঘরে (বাইতুল্লার) হজ করল, কোনো অশ্লীল কথা বলল না এবং কোনো অন্যায় করল না- সে যেন নবজাতক শিশুর ন্যায় নিষ্পাপ হয়ে ফিরে আসল (বুখারী-১৮১৯)।
আরও বর্ণিত হয়েছে- হজে মাবরুরের সাওয়াব হল একমাত্র জান্নাত (বুখারী ও মুসলিম)।
হজের ইচ্ছা পোষণকারী যেন তাড়াতাড়ি তা সমাপন করে ফেলে। কেননা সে অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে, তার উট হারিয়ে যেতে পারে বা তার ইচ্ছা বাধাগ্রস্ত হয়ে পড়তে পারে (ইবনে মাজাহ)।
পরিশেষে, হজ মুসলিম উম্মাহর মননে ঐক্য ও সংহতি নির্মাণে অন্যতম পন্থা হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে। যেখানে ধনী-গরিব, রাজা-প্রজা নির্বিশেষে সবাই 'সাদা কাপড়ে' একতার বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে ‘লাব্বাইকা...’ ধ্বনি উচ্চারিত করেন।
একই সঙ্গে এটি আন্তর্জাতিক পর্যায়েও ঐক্য ও সাম্য রচনা করে চলেছে।
কুরআনে এসেছে, অতঃপর যখন তোমরা হজের অনুষ্ঠানগুলো সমাপ্ত করবে, তখন তোমরা আল্লাহকে এমনভাবে স্মরণ করবে যেমন তোমরা তোমাদের বাপ-দাদাদিগকে স্মরণ করতে, অথবা তার চেয়েও অধিক স্মরণ করবে।
মানুষের মধ্য থেকে যারা বলেন, হে আমাদের রব, আমাদিগকে ইহকাল দাও। বস্তুত পরকালে তাদের জন্য কোনো অংশ নেই (সুরা বাকারা: ২০০)।
লেখক: প্রাবন্ধিক