Logo
Logo
×

ইসলাম ও জীবন

মহানবীর বণর্নায় ‘সিক্সপ্যাক’ ও ‘নিরক্ষর’ শব্দ ব্যবহারে আজহারীর ব্যাখ্যা

Icon

যুগান্তর ডেস্ক

প্রকাশ: ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৭:৪৭ পিএম

মহানবীর বণর্নায় ‘সিক্সপ্যাক’ ও ‘নিরক্ষর’ শব্দ ব্যবহারে আজহারীর ব্যাখ্যা

ইসলামের রাসুল হযরত মুহাম্মদ (সাল্লেল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) এর দৈহিক গঠনের বর্ণনা দিতে গিয়ে বর্তমান সময়ের আলোচিত-সমালোচিত ইসলামি বক্তা মিজানুর রহমান আজহারী বলেছিলেন, রাসুল (সা.) এর সিক্স প্যাক অ্যাবস ছিল।  যা নিয়ে সমালোচনা ও নিন্দার ঝড়ে পড়েন আজহারী।

এছাড়াও রাসুল (সা.) কে নিরক্ষর বলে তুমুলভাবে নিন্দিত হন আজহারী।

দেশজুড়ে মাহফিলে তার বক্তব্য নিষিদ্ধ করার দাবি তোলেন কয়েকটি সংগঠন।

তার সেসব বক্তব্যকে কেটে-ছেঁটে ভিডিও তৈরি করে ইউটিউবে প্রচার চালানো হয়। এমন পরিস্থিতিতে মিজানুর রহমান আজহারী নিজেই সিক্সপ্যাকসহ তার বির্তকিত সব শব্দ ব্যবহারের ব্যাখ্যা দেন।  

তিনি দাবি করেন, সিক্সপ্যাক বলে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর মর্যাদাকে খাটো করেননি। এছাড়াও মহানবীকে উম্মি (নিরক্ষর) বললে তাঁকে খাটো করা হয় না বরং তা নবুওয়তের পক্ষে অকাট্য দলিল বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, আমি ভিন্নমতের প্রতি বরাবরই শ্রদ্ধাশীল। আমি গড়তে পছন্দ করি ভাঙতে নয়।  তাই তর্কে না জড়িয়ে ঐক্য গড়তে আহ্বান জানাই।

এসব শব্দচয়নে যারা আপত্তি তুলেছেন, কষ্ট পেয়েছেন তাদের কাছে ক্ষমা চেয়ে মাহফিলে বক্তব্য দেয়ার সময় শব্দচয়নের ক্ষেত্রে আরো বেশি সতর্ক হবেন বলে প্রতিজ্ঞা করেন আজহারী।  

নবীজির সিক্সপ্যাক ছিল সেই বক্তব্যের ব্যাখ্যায় মিজানুর রহমান আজহারী বলেন, গতবছর শীতকালীন মাহফিলে আমি আল্লাহর রাসুল (সা.) এর দৈহিক সৌন্দর্য, তাঁর আচরণ, বুদ্ধিবৃত্তিক গুণাবলি নিয়ে আলোচনা করেছিলাম। রাসুল (সা.) এর দৈহিক সৌন্দর্য নিয়ে কথা বলতে গিয়ে আমি তাঁর সিক্সপ্যাক অ্যাবস ছিল বলে উল্লেখ করেছিলাম। আসলে এ শব্দ দিয়ে আমি তাঁর ফিটনেস (শারীরিক সক্ষমতা) বুঝিয়েছিলাম। তাঁর শক্তিমত্তা বুঝিয়েছিলাম। তিনি যে সুঠাম দেহী ও মানানসই গড়নের ছিলেন, তার কোনো বাড়তি ভুড়ি ছিল না সে বিষয়টি বোঝাতে চেয়েছিলাম।

আজহারী বলেন, মাহফিলে আগত যুবক ভাইদের রাসুল (সা.) এর দৈহিক গঠন আধুনিক পরিভাষা দিয়ে বোঝাতে গিয়ে এই সিক্সপ্যাক শব্দটি উচ্চারণ করেছিলাম। কিন্তু শব্দটি পাশ্চাত্য সংস্কৃতির বলে অনেকেই আমার সমালোচনা করেছেন।
   
এরপর তিনি বলেন, জিম করে অনেকে এই সিক্সপ্যাক গঠন তৈরি করে বলে অনেকে নবী করিম (সা.) এর বেলায় এ শব্দ ব্যবহারে আপত্তি তুলেছেন। তবে আমি যদি আক্ষরিক অর্থেই ধরে নেই যে, সত্যি সত্যি রাসুল (সা.) এর পেটে ৬টি ভাঁজ ছিল না কিনা তবে হাদীস থেকে আমরা জানতে পারি।

আজহারী বলেন, দালাইলুন নবুওয়তে নবী পত্মী মা আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেছেন, হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর পেটে তিনটি উকান ছিল। উকান আরবী শব্দ যা উকনার বহুবচন। এর অর্থ পেটের মধ্যে পেশীর ভাঁজ। অন্য একটি বর্ণনায় এসেছে, মহানবীর বুকের নিচ থেকে নাভী পর্যন্ত পশমের একটি অসাধারণ সুন্দর উলম্ব ভাঁজ ছিল। এর অর্থ এই পশমের একটি উলম্ব ভাঁজ ওই তিনটি পেশীকে ভেদ করে গেলে ৬টি মাংসপেশী দৃশ্যমান হয়, যাকে সিক্সপ্যাক অ্যাবস বলে।  রাসুল (সা.) চাচাতো বোন উম্মেহানীর বর্ণনাতেও একই কথা জানা যায় যে, তাঁর পেটে ৬টি মাংস পেশীর দৃশ্যমান ছিল।

আজহারী যোগ করেন, রাসুল (সা.) মেষ চড়াতেন, তিনি নিজের কাজ নিজেই করতেন। মসজিদ এ নববী তিনি নিজ হাতে তৈরি করেছেন। তিনি প্রচুর কায়িক শ্রম করতেন। তিনি ছিলেন যোদ্ধা। তিনি ঘোড়া হাঁকাতেন।মদীনাতে অবস্থানকালীন মসজিদে নববী থেকে মসজিদে কুবা মোট পাঁচ কিলোমিটার পথ তিনি পায়ে হেঁটে যেতেন প্রতিদিন।

এমন কঠোর পরিশ্রমীর দেহে সিক্সপ্যাক অ্যাবস তৈরি হওয়ার কথাই।

তবে রাসুল (সা.) এর পেটে দৃশ্যমান সিক্সপ্যাক কখনোই জিমে গিয়ে সাধারণ মানুষের তৈরি সিক্সপ্যাকের সঙ্গে তুলনা করা একেবারেই অনুচিত বলেও জানান মিজানুর রহমান আজহারী।

এরপর নবীজির নিরক্ষর হওয়া প্রসঙ্গে মিজানুর আজহারী বলেন, রাসুল (সা.) অক্ষর জ্ঞানহীন ছিলেন কিন্তু মূর্খ ছিলেন না। তিনি ছিলেন অসীম জ্ঞানের অধিকারী। তাঁর যদি অক্ষরজ্ঞান থাকতো তাহলে কাফের মুশরিকরা দাবি তুলতো তিনি অন্য কোথাও থেকে পড়ালেখা করে জ্ঞান অর্জন করে কোরআন লিখেছেন (নাউজুবিল্লাহ)। এই প্রশ্ন যেন কখনও কেউ না তুলতে পারে সেজন্য মহান আল্লাহ তাঁর রাসুলকে বিশেষ জ্ঞান দিয়ে আমাদের কাছে নিরক্ষর হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন।  মূলত নবী উম্মি  ছিলেন - এর অর্থ হচ্ছে, যে নবীর লিখার প্রয়োজন নেই, পড়ার প্রয়োজন নেই। এসব ছাড়াই তিনি অগাধ জ্ঞানের ভাণ্ডার, যা কোনো উচ্চশিক্ষিতরও নেই।

তাই নবীজিকে নিরক্ষর বলা মানে তিনি তার মাতৃভাষা লিখতে-পড়তে জানতেন না, কিন্তু তিনি ছিলেন মহাজ্ঞানী, বিশ্ববাসীর শিক্ষক।

ভিডিওতে ড. মিজানুর রহমান আজহারীর সেই বক্তব্যটি দেখুন -

 

 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম