
প্রিন্ট: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০২:৩৩ এএম
মুজাহিদের সততা নিয়ে অবাক করা তথ্য দিলেন ছেলে মাবরুর

যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৭ মার্চ ২০২৫, ০৪:১৮ পিএম
আরও পড়ুন
পরিবারের সদস্যদের কখনো সরকারি গাড়ি ব্যবহার করতে দিতেন না বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ।মন্ত্রী হওয়ার পরই পরিবারের সদস্যদের কিছু নির্দেশনা দিয়েছিলেন তিনি।
বাবাকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করে মুজাহিদের ছেলে আলী আহমাদ মাবরুর যুগান্তরকে বলেন, বাবা আমাদেরকে বলতেন যে, তোমাদের বাসার কোনো কাজে সরকারি ফ্যাসিলিটি ব্যবহার করবে না। আমিও ব্যক্তিগতভাবে এভাবেই চলতাম। নিজের কোনো কাজে কখনো সরকারি গাড়িতে চড়িনি আমি। এটা তো আমাদের জন্য বরাদ্দই ছিল কিন্তু আমরা কখনো এই সুবিধা ভোগ করিনি। আম্মা যদি কখনো নানুবাড়ি যেতেন তখন হয়ত গাড়ি ব্যবহার করতেন, অন্যথায় তা বাসাতেই পড়ে থাকত। আমার বাবা আমাদের নিরুৎসাহিত করতেন যে, কোথাও যেতে হলে সরকারি গাড়ি ব্যবহার করবে না।
সে সময়ের স্মৃতিচারণ করে তার ছেলে বলেন, যখন বাবা শপথ নিয়ে বঙ্গভবন থেকে বাসায় ঢুকলেন সেদিনই আমাদের কিছু দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন। এক নাম্বারে বলেছিলেন তোমরা সচিবালয়ের আশেপাশে যাতায়াত কম করবে এবং সেখানে প্রয়োজন ছাড়া যাবে না। দুই নাম্বারে বলেছিলেন তোমরা এমন কোনো কাজ করবে না যাতে আমার দুর্নাম হয়। এমন যদি কিছু ঘটে তাহলে কিন্তু আমি মন্ত্রীত্বের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়াব।
আমাদের কারও জন্য যেন তার দুর্নাম না হয় বা দলের ইমেজ নষ্ট না হয় এমন কিছু করতে তিনি আমাদের মন্ত্রিত্বের প্রথম দিনই নিষেধ করেন এবং আমাদের চলাফেরায় যেন দাম্ভিকতা না আসে কখনো সে ব্যাপারেও তিনি দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন। বাবা মন্ত্রী হওয়ার পর প্রথম ৬ মাস কিন্তু আমরা আমাদের মগবাজারের ভাড়া বাসাতেই থাকতাম। ইভেন পুলিশ হাউজ প্রটোকল পর্যন্ত আমাদের সেই ভাড়া বাসায় নিয়ে আসা হয়েছিল যার কারণে পুলিশ কর্মকর্তারাও বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে গিয়েছিল, কারণ তাদের তো সেখানে থাকার মত কোনো ব্যবস্থা নেই। সেভাবেই আমরা প্রথম কয়েক মাস পার করলাম।
২০০১ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর ২০০৬ সাল পর্যন্ত আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ চারদলীয় জোট সরকারের সমাজকল্যাণ মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।
বাবাকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করে মুজাহিদের ছেলে আলী আহমাদ মাবরুর যুগান্তরকে বলেন, মন্ত্রিত্ব পাওয়ার পর শুধু বাবা না; আমাদের পুরো পরিবারকে যদি দেখেন, আম্মা আমি বা আমার ভাইদের মাঝে কোনো পরিবর্তন এসেছে এটা কেউ বলতে পারবে না। যেভাবে আমরা বাবার মন্ত্রীত্ব পাবার আগে জীবন যাপন করতাম ঠিক পরেও সেভাবেই জীবন যাপন করেছি। এখনও আমরা একইভাবে জীবন যাপন করছি।
প্রসঙ্গত, জামায়াতের সাবেক সেক্রেটারি জেনারেল মুজাহিদকে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ফাঁসি দেয় আওয়ামী লীগ সরকার।