
প্রিন্ট: ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:৩৮ এএম
এআইনির্ভর আইভিএফ পদ্ধতিতে জন্ম নিল বিশ্বের প্রথম শিশু

যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ১৫ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৫০ পিএম

আরও পড়ুন
সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয়ভাবে আইভিএফ পদ্ধতিতে জন্ম নিয়েছে বিশ্বের প্রথম শিশু। বিষয়টিকে ফার্টিলিটি বিজ্ঞানের জন্য এক বড় অগ্রগতি হিসেবে দেখছেন বিজ্ঞানীরা।
‘ইন্ট্রাসাইটোপ্লাজমিক স্পার্ম ইনজেকশন’ বা আইসিএসআই নামে পরিচিত আইভিএফ-এর একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপের মাধ্যমে সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় সিস্টেম ব্যবহার করে প্রথম শিশুর জন্ম হয়েছে বলে দাবি গবেষকদের।
মানুষকে সন্তান জন্মদানে সহায়তার জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই ও রোবোটিক্স ব্যবহারের ক্ষেত্রে এটি বড় এক মুহূর্ত বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিজ্ঞানভিত্তিক সাইট নোরিজ।
গবেষকরা বলছেন, আইসিএসআই সাধারণ এক আইভিএফ পদ্ধতি, যেখানে একটি একক শুক্রাণু সাবধানে একটি ডিম্বাণুতে প্রবেশ করানো হয়। সাধারণত বিশেষ এক টুল ব্যবহার করে উচ্চ প্রশিক্ষিত ভ্রূণ বিশেষজ্ঞরাই কাজটি করেন।
এখন এমন এক পদ্ধতি তৈরি করেছেন গবেষকরা, যা কোনো চিকিৎসকের হাতের সাহায্য ছাড়াই আইসিএসআই প্রক্রিয়াটির ২৩টি ধাপ সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরিচালনা করতে পারে। এর কিছু ধাপ পরিচালিত হয়েছে এআইয়ের মাধ্যমেও।
এ নতুন প্রযুক্তিটি উদ্ভাবন করেছে নিউ ইয়র্ক ও মেক্সিকোতে অবস্থিত ‘কনসিভেবল লাইফ সায়েন্সেস’-এর বিশেষজ্ঞদের একটি আন্তর্জাতিক দল। এ দলে রয়েছেন ভ্রূণতত্ত্ববিদ ড. জ্যাক কোহেন, মেডিকেল অফিসার ড. আলেহান্দ্রো চ্যাবেস-বাদিওলা ও প্রধান প্রকৌশলী অধ্যাপক জেরার্ডো মেন্ডিজাবাল রুইজ।
এ চিকিৎসা পদ্ধতিটি করা হয়েছে নিবিড় পর্যবেক্ষণে পরিচালিত এক গবেষণার অংশ হিসাবে মেক্সিকোর গুয়াদালাজারা শহরের ‘হোপ আইভিএফ মেক্সিকো’ নামের ফার্টিলিটি সেন্টারে।
এআইনির্ভর সিস্টেমটি সম্পূর্ণ আইসিএসআই পদ্ধতিতে নিজে নিজে বা হাজার হাজার কিলোমিটার দূর থেকে কাজ করেন এমন বিশেষজ্ঞদের ডিজিটাল নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে কাজটি পরিচালনা করতে সাহায্য করেছে।
যেমন– শুক্রাণু নির্বাচনে ও ইনজেকশনের মাধ্যমে তা স্থাপন করতে গবেষকরা এআই ব্যবহার করেছেন। শুক্রাণুর নড়াচড়া বন্ধ করতে তারা এআইয়ের মাধ্যমে লেজারও ব্যবহার করেছেন। এটি এমন এক বিষয়, যার জন্য সাধারণত হাতের দক্ষতার প্রয়োজন পড়ে।
পুরোপুরি স্বয়ংক্রিয় সিস্টেমের মাধ্যমে তৈরি ভ্রূণটি হিমায়িত অবস্থায় থাকে এবং এরপরে এটিকে স্বাভাবিক তাপমাত্রায় অর্ধতরল অবস্থায় এনে নারীর জরায়ুতে প্রবেশ করান গবেষকরা। যার ফলে এক স্বাস্থ্যকর গর্ভাবস্থায় জন্ম হয়েছে একটি পুত্র সন্তানের।
বর্তমানে স্বয়ংক্রিয় প্রক্রিয়াটি ম্যানুয়াল পদ্ধতির তুলনায় কিছুটা বেশি সময় নিলেও গবেষকরা বলছেন, আরও বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে এ পদ্ধতির কাজের সময় কমে আসবে।
তাদের দাবি, এ সাফল্য থেকে ইঙ্গিত মেলে, সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় আইসিএসআই কেবল সম্ভবই নয়, বরং কার্যকরও, এমনকি অন্য দেশ বা দূর থেকেও পদ্ধতিটি পরিচালরা করা সম্ভব।