
প্রিন্ট: ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:২৩ এএম

যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ১৫ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৪০ পিএম

আরও পড়ুন
গাজায় যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে আবারও সরকারের ওপর চাপ বাড়াচ্ছে ইসরাইলি সেনারা। পাশাপাশি সশস্ত্রগোষ্ঠী হামাসের হাতে আটক বন্দিদের ফিরিয়ে আনার কথাও জানিয়েছে তারা। তাদের বক্তব্য, যুদ্ধ থামিয়ে হলেও বন্দিদের ফিরিয়ে আনা হোক। তবে শুধু সেনারাই নয়, সাবেক গোয়েন্দা কর্মকর্তা, শিক্ষাবিদ ও চিকিৎসকরাও এই দাবি জানিয়েছে।
ইসরাইল সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরীণ ক্রোন্দল শুরু হয়েছিল কয়েকদিন আগে। বিমানবাহিনীর ১০০০ সেনা যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে খোলা চিঠি দিয়েছিল। এবার তাদের সেই দাবিতে নতুন করে সমর্থন জানালেন ২৫০ জনের বেশি সাবেক মোসাদ কর্মকর্তা ও নিরাপত্তা কর্মী। এদের মধ্যে আছেন গোয়েন্দা সংস্থার সাবেক প্রধান ড্যানি ইয়াতোম, এফ্রায়িম হালেভি ও তামির পারদো। তাদের চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘গাজায় যুদ্ধ চলতে থাকায় বন্দি ও সেনাদের জীবন বিপন্ন হয়ে পড়ছে। এই কষ্ট থামাতে সরকারকে সাহসী ও দায়িত্বশীল সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’
সাবেক মোসাদ সদস্যদের মতে, বন্দিদের মুক্তি পাওয়া জাতীয় নিরাপত্তা ও নৈতিকতার প্রশ্ন। তারা বলেন, ‘অতিবাহিত হওয়া প্রতিটি দিন বন্দিদের জীবনের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। বিলম্ব হওয়া প্রতিটি মুহূর্ত আমাদের জন্য লজ্জাজনক।’
চিঠিটি পরিচালনা করেছেন ইসরাইলের সাবেক প্রধান বন্দি বিনিময় মধ্যস্থতাকারী ডেভিড মেইদান। তিনি ২০১১ সালে গিলাদ শালিতকে মুক্ত করার চুক্তিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন। এদিকে গাজা যুদ্ধ বন্ধ করে বন্দিদের ফিরিয়ে আনার আহ্বানে তাদের সঙ্গে শামিল হয়েছেন ইসরাইলের ২০০ সামরিক চিকিৎসক ও ১০০০ শিক্ষাবিদ। দেশটির চ্যানেল ১৩ জানিয়েছে, রোববার প্রকাশিত একটি পিটিশনে তারা যুদ্ধ থামানোর দাবি জানান।
চিকিৎসকরা বলেন, ‘আমরা সেনাবাহিনীর বিভিন্ন ইউনিটে রিজার্ভ চিকিৎসক হিসাবে কাজ করি। আমরা দাবি করছি, গাজা যুদ্ধ অবিলম্বে থামাতে হবে এবং বন্দিদের ফিরিয়ে আনতে হবে।’ তাদের মতে, যুদ্ধ এখন আর নিরাপত্তার জন্য নয়, বরং রাজনৈতিক স্বার্থে চালানো হচ্ছে।
পিটিশনে তারা আরও বলেন, ‘৫৫০ দিনের বেশি সময় ধরে চলা এই যুদ্ধ ইসরাইলের জন্য ব্যাপক ক্ষতির কারণ হয়েছে। আমরা বেদনার সঙ্গে বলছি, এই যুদ্ধ রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত স্বার্থে পরিচালিত হচ্ছে, এর সঙ্গে নিরাপত্তার সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই। আমরা চিকিৎসক হিসাবে জীবনের পবিত্রতায় বিশ্বাস করি। যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া ও বন্দিদের পরিত্যাগ করা আমাদের নৈতিকতার পরিপন্থি’। এ ছাড়াও ১৬০০ ভেটেরান্স ও ১৭০ জন অভিজাত সামরিক কর্মসূচি থেকে পাশ করা স্লাতকরাও এই তালিকায় রয়েছে। পাশাপাশি দেশটির ৩৫০ জন লেখক, কবি ও সম্পাদকও যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন। এ নিয়ে গত কয়েক দিনে অন্তত ৬টি পিটিশন প্রকাশিত হয়েছে।
তবে তাদের এই আন্দোলনের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, যেসব সক্রিয় সেনা এসব পিটিশনে সই করছেন, তাদের বরখাস্ত করা হতে পারে।
নেতানিয়াহু ইসরাইলের ‘শত্রু’: ইসরাইল সরকারের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে ক্ষোভ ঝাড়লেন দেশটির সাবেক সেনাপ্রধান ও প্রধানমন্ত্রী ড্যান হালুৎজ। সোমবার ইসরাইলি সংবাদমাধ্যম চ্যানেল ১২-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সমালোচনা করেন তিনি। নেতানিয়াহুকে উদ্দেশ্য করে হালুৎজ বলেন, ইসরাইলের জন্য ‘একটি সরাসরি হুমকি’।
তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেন, ‘নেতানিয়াহু ইসরাইলের শত্রু’। তার এই মন্তব্যে দেশজুড়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। নেতানিয়াহুর দল লিকুদ পার্টি হালুৎজের বক্তব্যকে ‘গুরুতর উসকানি’ বলে অভিহিত করে কড়া সমালোচনা করেছে। দলটির ভাষ্য, এই ধরনের কথা প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার জন্য চরম বামপন্থিদের উৎসাহিত করতে পারে।