
প্রিন্ট: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:১৪ পিএম
চীনের চূড়ান্ত হুঁশিয়ারি: ‘যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক বাড়ালেও আর প্রতিক্রিয়া নয়’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১২ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৪৮ এএম
-67f9d547e1fa5.jpg)
আরও পড়ুন
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক হার ১৪৫ শতাংশে উন্নীত করার প্রতিক্রিয়ায় বেইজিং শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর সর্বোচ্চ ১২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। এতে বাণিজ্যযুদ্ধ আরও তীব্র রূপ নিয়েছে, যা বৈশ্বিক সরবরাহব্যবস্থাকে বিপর্যস্ত করে তুলছে এবং বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দার শঙ্কা বাড়াচ্ছে।
শুক্রবার (১১ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে আরব নিউজ।
চীনের এই পাল্টা পদক্ষেপ ট্রাম্পের আগের শুল্ক বৃদ্ধিজনিত অর্থনৈতিক অস্থিরতা আরও বাড়িয়ে তোলে। বৈশ্বিক শেয়ারবাজারে পতন তীব্র হয়, ডলারের মান কমে যায় এবং যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি বন্ড বিক্রিতে তীব্রতা সৃষ্টি হয়। অন্যদিকে বিনিয়োগকারীদের জন্য নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে পরিচিত সোনার দাম রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছায়।
জনাস হেন্ডারসনের গ্লোবাল মাল্টি-অ্যাসেট প্রধান অ্যাডাম হেটস বলেন, ‘মন্দার ঝুঁকি এখন অনেক বেশি—যা দুই সপ্তাহ আগেও এতটা ছিল না।’
বৃহস্পতিবার মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট নতুন করে সৃষ্ট বাজার অস্থিরতা উপেক্ষা করে বলেন, অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করার মধ্য দিয়ে বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরবে।
হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ও ভিয়েতনাম আনুষ্ঠানিক বাণিজ্য আলোচনা শুরু করতে সম্মত হয়েছে। রপ্তানির ক্ষেত্রে চীনা পণ্যের কৃত্রিম রুট হিসেবে ব্যবহৃত হওয়া ঠেকাতে কঠোর পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত বলেও জানিয়েছে ভিয়েতনাম।
এদিকে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা যুক্তরাষ্ট্রে একটি বাণিজ্য মিশন পাঠাতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
ট্রাম্প এই সপ্তাহের শুরুতে কিছু দেশের ওপর শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করলেও, চীনের ওপর শুল্ক বহুগুণ বাড়িয়ে দেন। তার দাবি, চীন পাল্টা পদক্ষেপ নেওয়ায় তাকে এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে তিনি এখন পর্যন্ত চীনা পণ্যের ওপর মোট ১৪৫ শতাংশ পর্যন্ত নতুন শুল্ক আরোপ করেছেন।
বেইজিংয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের এধরনের পদক্ষেপের জবাবে এটাই তাদের শেষ শুল্ক বৃদ্ধি। চীন আরও জানায়, ‘‘যুক্তরাষ্ট্র যদি শুল্ক আরও বাড়ায়, তার আর কোনও অর্থ থাকবে না। বরং এটি বিশ্ব অর্থনীতির ইতিহাসে একটি কৌতুক হিসেবে চিহ্নিত হবে।’
তবে চীনা অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘যুক্তরাষ্ট্র যদি কেবল শুল্কের সংখ্যার খেলায় মেতে থাকে, তাহলে চীন আর সেভাবে প্রতিক্রিয়া জানাবে না।’
এতে বেইজিংয়ের সম্ভাব্য বিকল্প প্রতিক্রিয়া এবং যেকোনো পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের মোকাবিলার সংকল্পও প্রকাশ পায়।
হোয়াইট হাউজে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প বলেন, তিনি মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে একটি ভালো চুক্তি হতে পারে। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘‘তিনি আমার দীর্ঘদিনের বন্ধু। আমি বিশ্বাস করি, আমরা একসঙ্গে কাজ করে এমন কিছু করতে পারবো যা উভয় দেশের জন্যই ভালো হবে।’’
চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং শুক্রবার বেইজিংয়ে স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজের সঙ্গে বৈঠকে বলেন, চীন ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন একযোগে যুক্তরাষ্ট্রের একতরফা ‘বুলি’ নীতির বিরোধিতা করা উচিত। তিনি বলেন, ‘‘বাণিজ্যযুদ্ধে কোনো বিজয়ী নেই।’’
শি আরও জানান, বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি এবং ইউরোপের ২৭-সদস্য বিশিষ্ট বাণিজ্য ব্লক একসঙ্গে কাজ করলে বৈশ্বিক নিয়মভিত্তিক বাণিজ্য ব্যবস্থাকে রক্ষা করা সম্ভব হবে।