
প্রিন্ট: ১২ এপ্রিল ২০২৫, ০১:৫১ এএম

যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ০৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:১৬ এএম

আরও পড়ুন
ভারতের সংখ্যালঘু মুসলিম এবং বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর তীব্র আপত্তির মধ্যেই ওয়াকফ (সংশোধনী) বিলে সম্মতি দিয়েছেন দেশটির রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। এর মধ্য দিয়ে বিতর্কিত বিলটি আইনে পরিণত হলো।
এর প্রতিবাদে ভারতে বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। আইনটি মুসলিমদের ধর্মীয় সম্পত্তির ওপর হস্তক্ষেপ দাবি করে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছেন।
রোববার মনিপুরে এক বিজেপি নেতার বাড়িতে আগুন দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। এনডিটিভির খবরে বলা হয়, রোববার সকাল থেকেই ওয়াকফ সংশোধনী বিল পাশের প্রতিবাদে রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক বিক্ষোভ প্রদর্শিত হয়। থৈবাল জেলার লিলং এলাকায় ১০২নং জাতীয় সড়কের সমাবেশে পাঁচ হাজারের বেশি মানুষ অংশ নেন।
এরপর সন্ধ্যায় স্থানীয় জনতা ওই বিজেপি নেতার বাড়িতে হামলা চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। আসকার আলী নামের ওই নেতা বিজেপি সংখ্যালঘু মোর্চার মনিপুর রাজ্য শাখার সভাপতি।
ওয়াকফ সংশোধনী আইনকে সমর্থন করার অভিযোগে তার বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এর আগে সমাবেশে অংশ নেওয়া সমাজসেবক এবং সম্প্রদায়ের নেতা সাকির আহমেদ বলেন, ওয়াকফ সংশোধনী বিল ভারতীয় সংবিধানের নীতির পরিপন্থি। কারণ এটি মুসলিম সম্প্রদায়ের কাছে সম্পূর্ণরূপে অগ্রহণযোগ্য।
এ ঘটনার পর মনিপুরের ওই অঞ্চলে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। আধা-সামরিক ও অতিরিক্ত পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
শনিবার আইন মন্ত্রণালয়ের নোটিশে বলা হয়, ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল ২০২৫ এবং মুসলমান ওয়াকফ (রহিতকরণ) বিল ২০২৫ দুটি বিলেই সম্মতি দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি। পার্লামেন্টের বাজেট অধিবেশনে বিল দুটি পাশ হয়।
এর আগে বুধবার গভীর রাতে বিতর্কিত ওয়াকফ বিল পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ লোকসভায় পাশ হয়। বিলের পক্ষে ২৮৮ আর বিপক্ষে ২৩২টি ভোট পড়ে। পরদিন উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় বিলটি ১২৮-৯৫ ভোটে পাশ হয়।
ওয়াকফ বিলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে উত্তর প্রদেশের মুজফফরনগরে শুক্রবার নামাজে অংশ গ্রহণকারীরা হাতে কালো কাপড়ের ব্যাজ বেঁধেছিলেন। সেটা ছিল তাদের নিরুচ্চার প্রতিবাদ। জেলা পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ৩০০ মুসল্লিকে শনাক্ত করেছে। তাদের থানায় হাজির হওয়ার নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘুবিষয়ক মন্ত্রী কিরেণ রিজিজু ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল উত্থাপনের পরপরই এ নিয়ে লোকসভা অধিবেশন উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এনডিএর নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকারের তীব্র সমালোচনা করেন লোকসভায় কংগ্রেসের উপনেতা গৌরব গগৈ।
তিনি বলেন, এই বিল সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর ওপর আঘাত। এর মাধ্যমে সরকার সংবিধান দুর্বল, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মর্যাদাহানি, ভারতীয় সমাজকে বিভক্ত ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে ভোটাধিকারবঞ্চিত করতে চায়।
তবে ওয়াকফ বিল পাশের ঘটনাকে ‘ঐতিহাসিক মুহূর্ত’ বলে মন্তব্য করেন বিজেপি সরকারের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, এটি প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর উপকারে আসবে, যারা নিজেদের চাওয়া ও সুবিধা উভয় থেকেই বঞ্চিত।
এদিকে ভারতে ওয়াকফ আইনের সাংবিধানিক বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে একের পর এক মামলা হলেও সুপ্রিমকোর্ট জরুরি ভিত্তিতে তা শুনতে অস্বীকার করেছে।