
প্রিন্ট: ১১ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৫৪ পিএম
শ্রীলংকাকে দেওয়া দ্বীপ ফেরত চাইছেন ভারতীয়রা

যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ০৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:৫৩ পিএম

আরও পড়ুন
শ্রীলংকার কাছে থাকা কচ্ছতিভু দ্বীপ যেন ফেরত চান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বিরোধীরাও অনেকটা একমত এ বিষয়ে।
শ্রীলংকার কাছে থাকা কচ্ছতিভু দ্বীপ ফেরত চেয়ে তামিলনাড়ু বিধানসভায় সম্প্রতি প্রস্তাবনাও পাশ হয়েছে সর্বসম্মতিক্রমে। তবে কেন এই দ্বীপ নিয়ে বিতর্ক?
উল্লেখ্য, ১৯৭৪ সালে ইন্দিরা গান্ধী এই দ্বীপটি একটি চুক্তির মাধ্যমে শ্রীলংকাকে দিয়েছিলেন। পরে বহুবার সংসদে এ বিষয়টি উত্থাপন করা হয়েছিল। তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী এম করুণানিধিকে আগাম অবহিত করা হয়েছিল সেই চুক্তির বিষয়ে। পরে রাজনৈতিক স্বার্থে বিষয়টি গোপন রাখা হয়েছিল।
১৬৩ একরের কচ্ছতিভু দ্বীপ নিয়ে ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের আগে সরব হয়েছিল বিজেপি। এদিকে ২০২৬ সালে তামিলনাড়ুতে বিধানসভা ভোট। এমন পরিস্থিতিতে ফের এই ইস্যুটি বড় হয়ে উঠতে পারে তামিলনাড়ুতে।
ভারতের রামেশ্বরম এবং শ্রীলংকার মধ্যে কচ্ছতিভু দ্বীপ অবস্থিত। যে দ্বীপ ব্যবহার করতেন ভারত এবং শ্রীলংকার মৎস্যজীবীরা। কিন্তু ১৯৭৪ সালে ‘ইন্দো-শ্রীলংকান’ সামুদ্রিক চুক্তির মাধ্যমে ১৬৩ একরের সেই দ্বীপটি শ্রীলংকার হাতে তুলে দেয় ভারত।
এই দ্বীপ নিয়ে ভারত ও শ্রীলংকার মধ্যে টানাপোড়েন ছিল দীর্ঘদিনের। এর জেরে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে প্রভাব পড়ছিল। এই আবহে বন্ধুত্বের প্রতীক হিসেবে শ্রীলংকার হাতে কচ্ছতিভু দ্বীপ তুলে দেওয়া হয়েছিল।
তবে ভারত সরকারের সেই সিদ্ধান্তের ফলে তামিলনাড়ুর মৎস্যজীবীদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছিল। আগে এই দ্বীপের আশেপাশের জল থেকে মাছ ধরে জীবিকা অর্জন করতেন কয়েক হাজার মৎস্যজীবী।
ভারতীয়দের অভিযোগ, দ্বীপ হস্তান্তরের পরে সেই দ্বীপের ধারেকাছেও ভারতীয়দের ঘেঁষতে দেয় না শ্রীলংকার নৌবাহিনী। এমনিতেও বহু ক্ষেত্রেই শ্রীলংকার জলসীমায় প্রবেশ করার অভিযোগে ভারতীয় মৎস্যজীবীদের গ্রেফতার করে লঙ্কার নৌসেনা।
এদিকে তামিলনাড়ু সরকারও এই দ্বীপের জন্য বারবার সরব হয়েছে। শ্রীলংকার থেকে কচ্ছতিভু দ্বীপ ফেরানোর জন্য একাধিকবার কেন্দ্রকে চিঠি লিখেছিলেন তামিলনাড়ুর সাবেক মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতা। কেন্দ্রকে চিঠি লিখেছেন তামিলনাড়ুর বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিনও।
সরকারি নথি থেকে জানা গেছে, স্বাধীনতা লাভের পরই কচ্ছতিভু দ্বীপ নিয়ে নিজেদের দাবি জানাতে শুরু করেছিল শ্রীলংকা। ১৯৫৫ সালে তৎকালীন সিলন বিমানবাহিনী মহড়া চালিয়েছিল কচ্ছতিভু দ্বীপে।
১৯৬১ সালের ১০ মে কচ্ছতিভু দ্বীপের বিষয়টি তুচ্ছ বলে অভিহিত করেছিলেন ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু। তিনি বলেছিলেন, এই ছোট্ট দ্বীপের ক্ষেত্রে কোনোরকম গুরুত্ব দেখতে পাচ্ছি না আমি। সেই দ্বীপ নিয়ে ভারতের দাবি তুলে নিতে কোনও আপত্তি থাকবে না আমার।
এদিকে ১৯৬০ সালে ভারতের তৎকালীন অ্যাটর্নি জেনারেল এসম সি সেতালভাদ জানিয়েছিলেন যে কচ্ছতিভু দ্বীপের বিষয়টি নিয়ে দিনের আলোর মতো স্বচ্ছতা না থাকলেও ওই দ্বীপের উপর ভারতের বেশি অধিকার আছে। ভারতের হাতেই কচ্ছতিভু দ্বীপ রাখার পক্ষে আবেদন করেছিলেন তিনি।
অন্যদিকে, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন যুগ্মসচিব কে কৃষ্ণ রাও জানিয়েছিলেন, কচ্ছতিভু দ্বীপ নিয়ে শ্রীলংকা যে দাবি করছে, সেটার মজবুত ভিত্তি আছে। কিন্তু সেটার মানে এই নয় যে ভারতের কোনো দাবি নেই।
হিন্দুস্তান টাইমস