
প্রিন্ট: ১২ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:৪৯ এএম
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা ‘অর্থহীন’: ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০৬ এপ্রিল ২০২৫, ০২:০৭ পিএম

আরও পড়ুন
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সরাসরি আলোচনার আহ্বানের প্রেক্ষিতে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি রোববার বলেছেন, ওয়াশিংটনের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা ‘অর্থহীন’।
গত মাসে ট্রাম্প ইরানকে তার পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছিলেন, তবে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলে ইরানে হামলার হুমকিও দিয়েছিলেন তিনি।
বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, ‘আমি চাই ইরানের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা হোক।’।
তিনি যুক্তি দেন, ‘আমি মনে করি, এটা দ্রুত হয় এবং আপনি মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে না গিয়ে অপর পক্ষকে অনেক ভালোভাবে বুঝতে পারেন।’
তবে রোববার আরাগচি বলেন, ‘একটি পক্ষের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা অর্থহীন, যখন সেই পক্ষ জাতিসংঘ সনদের লঙ্ঘন করে বারবার বলপ্রয়োগের হুমকি দেয় এবং যার বিভিন্ন কর্মকর্তার বক্তব্যে বিপরীতমুখী অবস্থান প্রকাশ পায়।’
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, ‘আমরা কূটনীতিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং পরোক্ষ আলোচনার পথে এগোনোর জন্য প্রস্তুত।’
আরাগচি বলেন, ‘ইরান সম্ভাব্য ও প্রাসঙ্গিক সব ঘটনার জন্য প্রস্তুত রয়েছে, এবং যেমনভাবে আমরা কূটনীতি ও আলোচনায় গুরুত্ব দিই, তেমনি জাতীয় স্বার্থ ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার ক্ষেত্রে আমরা কঠোর ও দৃঢ়।”
শনিবার ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেন, তার দেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ‘সমমর্যাদায়’ সংলাপে বসতে আগ্রহী।
তবে তিনি ওয়াশিংটনের আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন, ‘আপনি যদি আলোচনাই চান, তাহলে হুমকি দেওয়ার মানে কী?’
পারমাণবিক কর্মসূচি
যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে পশ্চিমা দেশগুলো বহু বছর ধরে অভিযোগ করে আসছে যে, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের চেষ্টা করছে।
তেহরান এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলছে, তার পারমাণবিক কর্মসূচি শুধুই বেসামরিক উদ্দেশ্যে পরিচালিত হয়।
শনিবার ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর প্রধান হোসেইন সালামি বলেন, ‘ইরান যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত’।
সরকারি বার্তা সংস্থা আইআরএনএ জানিয়েছে, তিনি বলেন, ‘আমরা যুদ্ধ নিয়ে মোটেও উদ্বিগ্ন নই। আমরা যুদ্ধ শুরু করবো না, কিন্তু যেকোনো যুদ্ধের জন্য আমরা প্রস্তুত।’
২০১৫ সালে, ইরান জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য দেশগুলো — যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, চীন, রাশিয়া ও যুক্তরাজ্য — এবং জার্মানির সঙ্গে একটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তিতে পৌঁছায়, যার মাধ্যমে তেহরান তার পারমাণবিক কার্যক্রমে সীমা আরোপ করে এবং এর বদলে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়।
এই চুক্তি, যার আনুষ্ঠানিক নাম ‘যৌথ সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা (জেসিপিওএ)’, ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির সক্ষমতা রোধে কার্যকর বলে বিবেচিত হয়েছিল।
তবে ২০১৮ সালে ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদকালে যুক্তরাষ্ট্র একতরফাভাবে চুক্তি থেকে সরে দাঁড়ায় এবং ইরানের ওপর কড়া নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করে।
এক বছর পর, ইরান চুক্তির বাধ্যবাধকতা থেকে ধীরে ধীরে সরে আসতে শুরু করে এবং তার পারমাণবিক কর্মসূচি ত্বরান্বিত করে।
সোমবার, সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টা আলি লারিজানি সতর্ক করে বলেন, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনে আগ্রহী না হলেও যদি তার ওপর হামলা চালানো হয়, তাহলে ‘তাদের হাতে আর কোনও বিকল্প থাকবে না’।