
প্রিন্ট: ০১ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:৪২ এএম
এক সপ্তাহে প্রায় দেড় লাখ ফিলিস্তিনি বাস্ত্যচুত, নিহত আরও শতাধিক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ২৭ মার্চ ২০২৫, ০২:৫০ পিএম

ইসরাইলি হামলার ফলে গত এক সপ্তাহে গাজার অন্তত ১ লক্ষ ৪২ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে, বুধবার জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক সমন্বয় অফিস এর উদ্ধৃতি দিয়ে জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, গাজার ২ মিলিয়ন মানুষ সেসময় এক মহামারী পরিস্থিতির মুখোমুখি, কারণ একদিকে অবিরত বোমাবর্ষণ এবং অন্যদিকে অবরোধের কারণে মানবিক কার্যক্রম সীমিত হয়ে গেছে।
তিনি আরও বলেন, গাজার পরিস্থিতি দিনদিন খারাপ হচ্ছে। নতুন করে বাস্তুচ্যুতির কারণে গাজার ১৭% এলাকা, অর্থাৎ প্রায় ৬১ বর্গ কিলোমিটার (২৪ বর্গ মাইল) এলাকার মধ্যে মানুষের বসবাসের সুযোগ ক্রমেই সংকুচিত হচ্ছে।
বাড়ি ও স্বাস্থ্যসেবা হারাচ্ছে গাজাবাসী
তিনি সতর্ক করে বলেন, এটি কেবল আশ্রয় হারানোর বিষয় নয়, মানুষের কাছে খাবার, পানি এবং স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া একেবারেই অসম্ভব হয়ে পড়ছে।
জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজার অনেক অংশে মানবিক কার্যক্রমে বাধা দেওয়া হচ্ছে, যার মধ্যে রয়েছে খাবার সরবরাহের কাজে বাধা এবং গাজার বিভিন্ন জায়গায় সাহায্য পৌঁছাতে অসুবিধা।
ডুজারিক বলেন, ১৮ থেকে ২৪ মার্চ পর্যন্ত প্রায় ৫০টি সমন্বিত মানবিক কার্যক্রমের মধ্যে ৪০টি প্রত্যাখ্যাত হয়েছে, এবং আজও এমন কিছু মিশন প্রত্যাখ্যাত হয়েছে।
ইসরাইলি হামলায় নিহত আরও ২৭ ফিলিস্তিনি
এদিকে, বুধবার গাজার বিভিন্ন অংশে ইসরাইলি বিমান হামলায় আরও ২৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, এর মধ্যে ৬ জন শিশু রয়েছে।
উত্তর গাজার এক বাড়িতে হামলায় ৮ জন নিহত হয়, এর মধ্যে ৬ জন শিশু ছিল।
কেন্দ্রীয় গাজা উপত্যকায় বুরেইজ শরণার্থী শিবিরে একটি অ্যাপার্টমেন্টে হামলায় এক বাবা এবং তার ছেলে নিহত হয়েছে।
এছাড়া, গাজার অন্যান্য অঞ্চলেও হামলা চালানো হয়েছে, যার মধ্যে মুসিরাত শরণার্থী শিবিরে একটি মসজিদে হামলায় ৪ জন নিহত, এবং আল-জাওয়াইদা এলাকায় শরণার্থী শিবিরে এ হামলায় আরও ২ জন নিহত হয়।
দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস শহরে একটি বিমান হামলায় এক নারীসহ ২ জন নিহত হয়েছে, এবং রাফাহ এলাকায় দুইটি পৃথক হামলায় আরও ২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
গাজার ভয়াবহ পরিস্থিতি
মার্চ ১৮ তারিখে ইসরাইলি বাহিনী গাজা উপত্যকায় একটি আকস্মিক বিমান অভিযান চালায়, যেখানে ৮৩০ জন নিহত, ১,৮০০ জনেরও বেশি আহত এবং ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে গঠিত যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময় চুক্তি ভঙ্গ হয়।
অক্টোবর ২০২৩ থেকে এখন পর্যন্ত গাজার ৫০,২০০ ফিলিস্তিনি নিহত, যার মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু, এবং ১,১৩,৭০০ মানুষ আহত হয়েছে।