
প্রিন্ট: ১২ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:৪৯ এএম
গাজার ধ্বংসস্তূপ থেকে ভেসে এলো নবজাতকের কান্না, অতঃপর...

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ২১ মার্চ ২০২৫, ০৭:১৭ পিএম

আরও পড়ুন
গাজায় ভেঙে পড়া ভবনের ইট-পাথরের নিচ থেকে একটি নবজাতকের কান্না ভেসে আসে। তা শুনে এক ব্যক্তি দৌড়ে এসে একটি জীবন্ত শিশুর ছোট্ট দেহটি বের করে কোলে তুলে নিলো। তার শরীরে কম্বল মোড়ানো। এরপর তাকে অপেক্ষারত অ্যাম্বুলেন্সে তুলে দেওয়া হয়।
স্বাস্থ্যকর্মীরা যখন শিশুটিকে পরীক্ষা করছিল, তখন সে থেমে থেমে নড়ে উঠছিল। এ ঘটনায় বিস্ময়ে সবার মুখ থেকে বেরিয়ে আসে ‘আল্লাহু আকবার’ ধ্বনি।
শিশুটির নাম ইল্লা ওসামা আবু দাগ্গা। ধ্বংসস্তূপের ভেতরে একটি জাজিমের ওপর ঘুমিয়েছিল শিশুটি। সেখান থেকেই তার ছোট্ট দেহটি বের করে নিয়ে আসেন উদ্ধার কর্মীরা। ২৫ দিন আগে গাজায় নড়বড়ে যুদ্ধবিরতির মধ্যে শিশুটি জন্ম নিয়েছে। তবে কন্যাশিশুটিকে তাৎক্ষণিকভাবে কে আশ্রয় দিয়েছেন, তা জানা সম্ভব হয়নি।
গাজা উপত্যকার খান ইউনিসের বাইরে সীমান্তের কাছে ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় ভেঙে পড়া ভবনের ধ্বংসাবশেষ তন্ন তন্ন করে খুঁজছিলেন উদ্ধারকারীরা। তখনই এ ঘটনা ঘটে।
মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) সেহরির সময় আকস্মিক ইসরাইলি বিমান হামলায় শিশুটির বাবা-মা ও ভাই নিহত হন। হামলায় শিশুটির দাদা ছাড়া পুরো পরিবারই শেষ হয়ে গেছে। তাদের সঙ্গে আরেকটি পরিবারের সাত বছরের শিশু ও তার বাবা নিহত হয়েছেন।
হাজেন আত্তার নামের এক বেসামরিক প্রতিরক্ষাকর্মী বলেন, স্থানীয় লোকজনকে জিজ্ঞাসা করে আমরা জানতে পারি, শিশুটির বয়স ২৫ দিন। বিমান হামলার পর থেকেই ইট-পাথরের ভেতরে আটকা পড়ে সে।
প্রতিরক্ষাকর্মী বলেন, তখন থেকে শিশুটি কাঁদছিল। ধীরে ধীরে তার গলার স্বর কমে নীরব হয়ে যায়। আর কাঁদতে পারছিল না। এরপর তাকে আমরা উদ্ধার করি। আল্লাহর কাছে শুকরিয়া, সে এখন নিরাপদ।
অসহায় ফিলিস্তিনিরা ধরে নিয়েছিলেন, যুদ্ধ শেষ। যদিও ১৫ মাসের যুদ্ধে পুরো উপত্যকাটি ধ্বংস হয়ে গেছে। বাসিন্দারা বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়েছেন সবাই। নিহত হয়েছেন ৪৯ হাজারের বেশি মানুষ, যাদের বেশিরভাগ নারী ও শিশু।
মঙ্গলবার আকস্মিকভাবে গাজায় বিমান হামলা শুরু করে ইসরাইলি বাহিনী। এতে দুপক্ষের যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেঙে যায়। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গেল তিনদিনে ৭ শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হন। নিহতদের বেশিরভাগ নারী ও শিশু।
খান ইউনিসের বাইরে ইসরাইলি সীমান্তের কাছে আল-কাবিরা নামের একটি গ্রামে শিশুটির বাড়ি। ইসরাইলি হামলায় সেখানে ১৬ জন নিহত হয়েছেন।
ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর দাবি, তারা কেবল হামাস যোদ্ধাদের নিশানা করে হামলা চালাচ্ছে। বেসামরিক নাগরিক নিহত হওয়ার জন্য ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলনই দায়ী। কারণ আবাসিক এলাকার ভেতরে থেকে কার্যক্রম চালায় হামাস।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরাইলে আকস্মিক হামলা চালিয়ে এক হাজার ২০০ ইসরাইলিকে হত্যা করে হামাস। এ সময় ২৫১ জনকে জিম্মি করে তারা। এরপর থেকে হামাসকে ধ্বংস করতে অবিরত হামলা চালিয়ে আসছে ইসরাইলি বাহিনী।
ঘটনাপ্রবাহ: হামাস ইসরাইল যুদ্ধ
আরও পড়ুন