Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

বিমান হামলার পর গাজায় স্থল অভিযান জোরদার ইসরাইলের

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২০ মার্চ ২০২৫, ০১:১৯ পিএম

বিমান হামলার পর গাজায় স্থল অভিযান জোরদার ইসরাইলের

গাজায় বিমান হামলা চালিয়ে ৯৭০ জনের বেশি মানুষকে হত্যার পর এবার স্থল অভিযান জোরদারের কথা জানিয়েছে ইসরাইলি বাহিনী। দেশটির প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) বলেছে, তাদের সেনারা গাজার উত্তর ও দক্ষিণ অংশকে বিভক্তকারী নেটজারিম করিডোর পর্যন্ত অগ্রসর হয়েছে। গাজায় পুনরায় স্থল অভিযান জোরদার করেছে। খবর রয়টার্সের।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজায় নতুন করে হামলা জানুয়ারি থেকে চলে আসা নমনীয় যুদ্ধবিরতি চুক্তির অবসানের কথাই বোঝাচ্ছে।

জাতিসংঘ এর আগে জানিয়েছিল, দেইর আল-বালাহ এলাকায় তাদের দপ্তর প্রাঙ্গণে বিস্ফোরণে এক কর্মীসহ দুজন নিহত হয়েছেন।

ইসরাইল এর দায় অস্বীকার করেছে। তবে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেছেন, তারা বিষয়টি তদন্ত করে দেখবেন।

গাজার উত্তরাঞ্চলের বেইত হানুনসহ যেসব এলাকায় সামরিক বাহিনী অগ্রসর হচ্ছে, সেসব এলাকা খালি করার নির্দেশ জারি করা হয়েছে। বিবিসি ওই নির্দেশনা দেখার কথা বলেছে।

বিবিসির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, আইডিএফ ওই অঞ্চলের স্থল সীমান্তের তিন পাশে বিশাল এলাকা খালি করার আদেশ জারি করেছে, যা শিগগিরই বড় ধরনের স্থল অভিযান শুরুর ইঙ্গিত দিচ্ছে।

এইসব আদেশের কারণে ফিলিস্তিনি পরিবারগুলোর মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে, যাদের অনেকেই যুদ্ধের কারণে বারবার বাস্তুচ্যুত হয়েছিলেন; যুদ্ধবিরতির সময় তারা বাড়ি ফিরেছিলেন।

ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর চিহ্নিত এলাকা থেকে সরে নিরাপদ আশ্রয় খুঁজতে দেখা গেছে পরিবারগুলোকে। কেউ পায়ে হেঁটে, কেউ গাড়িতে করে সাধ্যমত জিনিসপত্র নিয়ে যাচ্ছেন।

বুধবার ইসরাইলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরাইল কাটজ এক ভিডিও বার্তায় বাকি জিম্মিদের ফিরিয়ে দিতে ফিলিস্তিনকে 'শেষবারের মতো সতর্ক' করে দিয়েছেন।

ইসরাইল বলছে, হামাস এখনও ৫৯ জনকে জিম্মি করে রেখেছে, যাদের মধ্যে ২৪ জন জীবিত আছে বলে ধারণা করা হয়।

হামাসকে ‘শেষ হুঁশিয়ারি’ দিয়ে কাটজ বলেন, যদি কোনো দাবি মানা না হয়, তবে গাজা ‘সম্পূর্ণ ধ্বংস ও ধ্বংসযজ্ঞই’ পরিণত হবে।

বুধবার দেইর আল-বালাহ এলাকায় জাতিসংঘ দপ্তর প্রাঙ্গণে এক কর্মী নিহতের তথ্য সংস্থাটি জানানোর পর ইসরাইলের স্থল সেনাদের তৎপরতা বাড়ানোর খবর এল।

জাতিসংঘের অফিস ফর প্রজেক্ট সার্ভিসেস (ইউএনওপিএস) জানিয়েছে, তাদের ওই ভবনে বিস্ফোরক ফেলা হয়েছে অথবা ছুড়ে মারা হয়েছে। তবে এ কাজে কী ধরনের অস্ত্র ব্যবহৃত হয়েছে, সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

ইউএনওপিএসের প্রধান জর্জ মোরেইরা দা সিলভা বলেছেন, তিনি মনে করেন এটা নিছক দুর্ঘটনা নয়। গাজার এখনকার পরিস্থিতি তার ভাষায় ‘অবিবেচনাপ্রসূত’।

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এ ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন।

গত ১৯ জানুয়ারি থেকে যে দুর্বল যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি বিনিময় চুক্তি কার্যকর হয়েছে, তারপর মঙ্গলবারের বোমাবর্ষণকে সবচেয়ে শক্তিশালী হামলা বলে মনে করা হচ্ছে। বুধবারও বিমান হামলা অব্যাহত ছিল।

বিবিসি লিখেছে, যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ উত্তরণে ইসরাইল ও হামাস একমত হতে ব্যর্থ হয়েছে, যার আলোচনা ছয় সপ্তাহ আগে শুরু হওয়ার কথা ছিল।

ইসরাইলের শর্তে যুদ্ধবিরতি নিয়ে নতুন চুক্তির জন্য সায় দেয়নি হামাস; যদিও তারা বিদ্যমান চুক্তির মেয়াদ বাড়িয়ে জীবিত এক আমেরিকান জিম্মি এবং চারটি মৃতদেহ দিতে সম্মত হয়েছিল।

হামাসকে চাপে রাখতে মার্চের শুরুতে গাজায় খাদ্য, জ্বালানি ও চিকিৎসা সরবরাহ বন্ধ করে দেয় ইসরাইল।

ইসরায়েল এখন সামরিক শক্তি ব্যবহার করে হামাসকে চাপে ফেলতে চাইছে, যাতে করে তারা যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল প্রস্তাবিত নতুন যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সই করতে রাজি হয়।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ইসরাইলে প্রায় ১,২০০ জন নিহত হয়, জিম্মি করা ২৫১ জনকে। তাদের মধ্যে ২৫ জন যুদ্ধবিরতির প্রথম পর্বে জীবিত অবস্থায় মুক্তি পেয়েছে।

তার পাল্টায় ইসরাইল যে ব্যাপক আক্রমণ চালিয়েছে তাতে সাড়ে ৪৮ হাজারেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে বলে জানিয়েছে হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। পাশাপাশি ব্যাপকমাত্রায় বাড়িঘর ও অবকাঠামো ধ্বংস হয়েছে।

ঘটনাপ্রবাহ: হামাস ইসরাইল যুদ্ধ


আরও পড়ুন

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম